ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বৈরুতে এখনও অনেকে নিখোঁজ, ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়ার শঙ্কা

প্রকাশিত: ২২:৪৪, ৭ আগস্ট ২০২০

বৈরুতে এখনও অনেকে নিখোঁজ, ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়ার শঙ্কা

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ লেবাননের বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণের ধ্বংস্তূপ থেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় মূল্যবান জিনিসপত্র ও নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজ করছেন স্থানীয়রা। এরই মধ্যে অনেকেই এই বিস্ফোরণকে দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের কয়েক বছরের অব্যবস্থাপনার ফল হিসেবে দেখছেন। বিস্ফোরণের দুইদিন পার হলেও দগদগ করছে আঘাতের চিহ্ন। এখনও নিখোঁজ অনেকে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন উদ্ধারকারীরা। কিসের ভুলে, কার অবহেলায় এতবড় বিপর্যয় তার জবাব চেয়ে রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছে লেবাননবাসী। খবর নিউইয়র্ক টাইমস ও বিবিসির মঙ্গলবার ২ হাজার ৭৫০ টন উচ্চ ঘনত্বের এ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আগুনে বিস্ফোরিত হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, এই বিস্ফোরণের ধাক্কা এতই শক্তিশালী ছিল যে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনা ধুলোয় মিশে গেছে, নিহত হয়েছেন অন্তত ১৩৫ জন এবং আহতের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। এছাড়া ২ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তের অঙ্গীকার করে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে। কিন্তু স্থানীয়রা যুদ্ধকালীন বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে বুধবার ভোরে জেগে উঠেছেন। তারা ভেবে কূল কিনারা পাচ্ছেন না তাদের বাড়ি ও ব্যবসার কি হবে। অনেকেই দেশের রাজনীতিকদের বহু বছরের অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার ফল হিসেবে মনেই করছেন এই বিস্ফোরণকে। অনেকের কাছে ক্ষোভের বড় কারণ হলো দেশের সর্বশেষ এই বিপর্যয় কোন ঐতিহাসিক বিরোধের জের ধরে হয়নি। এটি নিজেদের ডেকে আনা। প্রচ- ক্ষুব্ধ নাদা চেমালি নামের এক ব্যবসায়ী দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, রাজনীতিকদের মোকাবেলা করার জন্য। এরাই দেশকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। তিনি বলেন, তাদের বাড়ি যাও। বিস্ফোরণে তার দোকান ও বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তা মেরামতে সরকারের কোন সহযোগিতার প্রত্যাশা করছেন না। চিমালি চিৎকার করে বলেন, কে আমাদের সহযোগিতা করবে? কে আমাদের এই ক্ষতিপূরণ দেবে? বুধবার নিহতের সংখ্যা ঘোষণার পর বৈরুত ও আশপাশে কিছুটা স্বস্তির আভাস দেখা গিয়েছে। শহরের গবর্নর জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক শ’ কোটি ডলার হতে পারে। সীমিত সামর্থ্যে উদ্ধারকর্মীরা কয়েক হাজার আহতকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। কয়েকটি হাসপাতাল সেবা দিতে পারছে না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হামাদ হাসান বলেন, আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার জন্য আমাদের সবকিছু করতে হবে। আর সবকিছুরই মারাত্মক সঙ্কট রয়েছে। বিস্ফোরণের আঘাতে ভূমধ্যসাগরের তীর ও বন্দরের কাছের আবাসিক জেলাগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বাদ যায়নি আরেকটু দূরবর্তী এলাকাও। বিস্ফোরণে শক ওয়েভে কয়েক মাইল দূরে পাহাড়ী এলাকার বিভিন্ন ভবনের জানালাও ভেঙ্গে গিয়েছে। নগরের প্রাণকেন্দ্রে শহরটির গুরুত্বপূর্ণ হোটেলগুলোর জানালার দেয়াল ভেঙ্গে গেছে, জানালার পর্দা বাতাসে ভবনের বাইরে উড়ছে। লেবাননের গৃহযুদ্ধের পর পুনঃনির্মিত শহরের উপকণ্ঠ ছিল ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর গর্বের চিহ্ন। সেখানকার দামী বুটিকের দোকান, রেস্তরাঁ ধসে পড়েছে, মিশে গেছে ধুলোয়। খ্রীস্টান এলাকা গেম্মায়জেহ ঐতিহাসিক ভবন, গির্জা ও হৈচৈপূর্ণ রাত যাপনের জন্য পরিচিত। বিস্ফোরণে তা যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাতে পরিণত হয়েছে। গাছ ভেঙ্গে সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে, ভাঙ্গা কাঁচ নিয়ে গাড়ি উল্টে পড়ে আছে রাস্তার পাশে। শহরের সব প্রান্তেই দেখা গেছে মানুষ কাঁচ কুড়াচ্ছে, দোকান, বাসা ও বারান্দা থেকে ধুলো ও রক্ত পরিষ্কার করছে। কিন্তু গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কটে থাকা দেশটির বাসিন্দাদের কোন ধারণা নেই কিভাবে এসব পুনরায় সচল করবেন। ৪২ বছরের রজার মাতার জানান, তার এ্যাপার্টমেন্টের দরজা ও জানালা উড়ে গেছে, জানালার ফ্রেম বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছে এবং মেঝে ও সোফাতে ছড়িয়ে আছে ভাঙ্গা কাঁচের টুকরো। তিনি একটি বিকট শব্দ শুনতে পান এবং তার কথায়, এরপর সবকিছুই কেঁপে ওঠে এবং সব দরজা-জানালা নাই হয়ে যায়। মাতার বলেন, ব্যাংকে আমাদের টাকা জমা আছে। শ্রমিকদের মজুরি দিতে চাইলে নগদ লাগবে। এমন সময় সরকারের সহযোগিতা করা উচিত। কিন্তু তারা দেউলিয়া। এই দেশ ভেঙ্গে পড়েছে। ১৯৯০ সালে গৃহযুদ্ধের অবসানের পর মধ্যপ্রাচ্যের সাংস্কৃতিক ও আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে দেশকে গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করে লেবানন। লক্ষ্য ছিল দক্ষ ব্যাংকার, বহুমাত্রিক পেশা ও ভোর পর্যন্ত চলবে ড্যান্স ক্লাব নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হয়ে ওঠা। কিন্তু সাবেক সেনাপতিরা দুর্বল গোষ্ঠীগত গণতন্ত্রে ক্ষমতার ক্রীড়নকে পরিণত হয়। যারা ক্ষমতা ভাগাভাগি করে দেয় দেশের ১৮টি ধর্মীয় গোষ্ঠীর কাছে। এই ব্যবস্থার ফলে বড় ধরনের রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও সর্বব্যাপী দুর্নীতি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। আর সরকার ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়ে। বার্ষিক জিডিপির প্রায় ১৬০ শতাংশ ঋণের বোঝা রয়েছে দেশটির। গত কয়েক বছর ধরে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বেড়ে চলেছে। রাজনৈতিক অভিজাত শ্রেণীকে উৎখাতে গত বছর রাজপথে নামেন দেশটির জনগণ। বিক্ষোভের ফলে ক্ষমতা ছাড়েন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সঙ্কট ক্রমশই বাড়ছিল। এরপর থেকে দেশটির মুদ্রার মান কমেছে ৮০ শতাংশ। বেকারত্ব বেড়েছে এবং দ্রব্যমূল্য বেড়েছে আকাশছোঁয়া। করোনাভাইরাস মহামারী ঠেকাতে জারি করা লকডাউন অর্থনীতির মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে। নগরের বন্দরের কিভাবে এত বিপুল পরিমাণ সম্ভাব্য বিস্ফোরক অরক্ষিত অবস্থায় মজুদ ছিল সেই বিষয় নতুন তথ্য সামনে আসার পর আশপাশের এলাকার মানুষেরা সরকারের কর্মহীনতাকে দায়ী করছেন। দীর্ঘদিন ধরেই তারা এমন অভিযোগ করে আসছেন। বন্দর এলাকার কাছাকাছি থাকা কয়েকটি হাসপাতালে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দুটি হাসপাতালের অবস্থা এতই খারাপ যে সেগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, কবে পুনরায় চালু হবে সেটির কোন ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে না। বৈরুতের বাসিন্দাদের মতো হাসপাতালগুলোও সরকারের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পাবে বলে মনে করে না। একটি হাসপাতালের প্রকৌশলী টনি জানান, আমরা কোন সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি না। কারণ কোনও রাষ্ট্র অবশিষ্ট নেই। দোষীদের খুঁজতে ৪ দিন সময় দিয়েছে লেবানন সরকার ॥ লেবাননে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীদের খুুঁজে বের করতে তদন্ত কমিটিকে চার দিনের সময় দিয়েছে লেবানন সরকার। লেবাননের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চার্বেল ওয়েহবে একটি রেডিও চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণে দোষীদের খুঁজে বের করতে চারদিনের সময় দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কারা এর পেছনে দায়ী, কখন, কীভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটল সে বিষয়ে তদন্ত করা হবে। এটা একটি গুরুতর বিষয় এবং আমরা এটা গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছি। যারা এই ভয়ানক অপরাধের জন্য দায়ী তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৫৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়াও পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। বৈরুতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ॥ লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা প্রায় ২শ’ জনে দাঁড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা ৫ হাজার। পরিস্থিতি দেখতে সেখানে সফরে গেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। বিদেশী নেতাদের মধ্যে ম্যাক্রোঁই প্রথম বৈরুত সফরে গেলেন। বৃহস্পতিবার বৈরুতে পৌঁছে বিস্ফোরণস্থলসহ ধ্বংস হয়ে যাওয়া রাস্তাঘাট ঘুরে দেখেন তিনি। লেবাননের জন্য জরুরী সাহায্যের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সাহায্যের ব্যবস্থা করে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন ম্যাক্রোঁ। একই সঙ্গে লেবাননের সরকারকে অর্থনৈতিক সংস্কার সাধন করাসহ দুর্নীতি দমন করতে হবে বলেও ম্যাক্রোঁ মত দেন। তিনি বলেন, সংস্কার না হলে লেবানন ডুবতেই থাকবে। এখানে আরও যে জিনিসটি দরকার তা হচ্ছে রাজনৈতিক পরিবর্তন। এই বিস্ফোরণ থেকে নতুন যুগের সূচনা হওয়া উচিত। বৈরুতে নিহতদের পরিচয় মিলেছে, পরিবারে মাতম ॥ স্টাফ রিপোর্টার জানান, বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত নিহত চার বাংলাদেশীর পরিচয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ মিশন। এই চারজন হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের মেহেদী হাসান রনি ও কসবার রাসেল মিয়া, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় মিয়ার হাটের মিজান এবং কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার রেজাউল। তারা সবাই প্রবাসী কর্মী বলে জানিয়েছেন বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের দূতালয় প্রধান ও প্রথম সচিব (শ্রম) আব্দুল্লাহ আল মামুন। বৈরুত পোর্ট এলাকায় মঙ্গলবারের ওই বিস্ফোরণে অন্তত ৯৯ বাংলাদেশী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২১ জন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে কর্মরত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্য। ওই বিস্ফোরণে পোর্ট এলাকায় থাকা বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ ‘বিজয়’ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে এর আগে জানিয়েছিলেন লেবাননে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আল মুস্তাহিদুর রহমান। বুধবার এক ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, “বিস্ফোরণস্থল থেকে জাহাজের দূরত্ব ছিল প্রায় ২০০ গজ। আমরা জানার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যাই এবং শিপের ক্যাপ্টেনের সঙ্গে আলাপ করি। সেটার কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা নিই।” লেবাননে প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশী বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত বলে জানান রাষ্ট্রদূত মুস্তাহিদুর রহমান। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বৈরুতের বন্দর এলাকায় বিস্ফোরক দ্রব্যের গুদামে ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৩৫ জনের, চার হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এদিকে বৈরুত দূতাবাস আরও জানায়, ২০১৫ সালের আগে বিস্ফোরিত সংলগ্ন এলাকায় বাংলাদেশী শ্রমিকরা বেশি কাজ করতেন। আমাদের কাছে ওই এলাকার শ্রমিকদের কোন সঠিক তথ্য নেই। তবে ২০১৫ সালের পর থেকে যারা এসেছে তাদের হিসাব আমাদের কাছে রয়েছে। বিস্ফোরণে চার বাংলাদেশী নিহতের হওয়ার পর আরও কোন বাংলাদেশী নিহত হয়েছে কিনা সে বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হয়েছে। সেখানকার একটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আট মরদেহের কোন দেশের নাগরিক তা শনাক্ত করতে পারেনি। এ অবস্থায় বাংলাদেশ দূতাবাসকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ শনাক্তের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। দূতাবাস এ ব্যাপারে সাড়া দিয়ে মরদেহগুলো বাংলাদেশী কিনা তা যাচাইয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাড়ি ফেরা হলো না রেজাউলের ॥ এদিকে কুমিল্লা থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, বৈরুত বিস্ফোরণে নিহত রেজাউল আমিন শিকদারের বাড়ি ফেরা ও বিয়ে করা হলো না। বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতদের মধ্যে একজন জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর গ্রামের মণির শিকদারের ছেলে রেজাউল আমিন শিকদার। ২০১১ সালে লেবাননে পাড়ি জমান তিনি। থাকতেন বৈরুতের বন্দর সংলগ্ন ডাউনটাউন এলাকার আলভোর শহরে, কাজ করতেন একটি পেট্রোল পাম্পে। রেজাউলের মামা জসিমউদ্দীনও থাকেন বৈরুতে। জসিমউদ্দীন বুধবার রাত ১২টার দিকে পরিবারের কাছে ফোন করে রেজাউলের মৃত্যুর বিষয়টি জানান। কৃষক পরিবারের সন্তান রেজাউল দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে বাড়িতে পাকা ঘর তৈরি করেন এবং দুই বোন তিশা আক্তার ও লিমা আক্তারকে বিয়ে দেন। তার অকাল মৃত্যুতে পরিবারটিতে এখন চলছে শুধুই মাতম। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরও একজনের মৃত্যু ॥ স্টাফ রিপোর্টার ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে জানান, লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে মোঃ রাসেল (২২) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরও আরেক জনের মৃত্যু হয়েছে। সে কসবা উপজেলার কাইমপুর ইউনিয়নের জাজিসার গ্রামের মোর্শেদ মিয়ার ছেলে। বিস্ফোরণের ঘটনায় তার বড় ভাই সাদেক মিয়া গুরুতর আহত হয়ে বৈরুতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কাইমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াকুব মিয়া জানান, গত প্রায় ৪ বছর আগে রাসেল লেবানন যান। সেখানে তিনি একটি তেলের পাম্পে চাকরি করতেন।
×