ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিনিয়োগ প্রস্তাব হ্রাস ৬৭ শতাংশ

প্রকাশিত: ১৯:২২, ৬ আগস্ট ২০২০

দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিনিয়োগ প্রস্তাব হ্রাস ৬৭ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে বিনিয়োগ প্রস্তাব নিবন্ধনেও ধস নেমেছে। চলতি ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মোট বিনিয়োগ প্রস্তাব হ্রাস পেয়েছে ৬৭ শতাংশ। আর শিল্প প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের সংখ্যা কমেছে ২৪৫টি। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিবন্ধিত শিল্পের ত্রৈমামাসিক পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯ ভাইরাসের মহামারি এখনও চলছে। কিন্তু এই ভয়ঙ্কর ভাইরাসের দাপট গেছে এপ্রিল-জুন সময়ে। ওই সময়ে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে আমদানি-রফতানি, যোগাযোগ সব কিছু স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীদেরও হাট গুটিয়ে বসে থাকা ছাড়া কোন উপায় ছিল না। এ কারণে বিশে^র অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে বিনিয়োগ প্রস্তাব নিবন্ধন আশংকাজনক হ্রাস পেয়েছে। এই তিন মাসে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে মোট ৪৬টি শিল্প প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হয়েছে। নিবন্ধিত এ সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত মোট বিনিয়োগের পরিমান ৫ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা, যা জানুয়ারি-মার্চ সময় অপেক্ষা ১১ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা কম। বিগত জানুয়ারি মার্চ সময়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে নিবন্ধিত হয়েছিল মোট ২৯১টি শিল্প ইউনিট। এ সকল শিল্প ইউনিটের প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমান ছিল ১৭ হাজার ২৮১ কোটি টাকা। সে অনুযায়ী এপ্রিল-জুন সময়ে মোটি শিল্প প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ২৪৫টি এবং মোট বিনিয়োগ প্রস্তাব হ্রাস পেয়েছে ৬৭. ১১ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে সম্পূর্ণ স্থানীয় বিনিয়োগের জন্য নিবন্ধিত হয় ৩৮টি শিল্প ইউনিট। এ সকল ইউনিটের প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমান ১ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা, যা বিগত জানুয়ারি-মার্চ সময়ের চেয়ে ৭ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা কম। জানুয়ারি-মার্চ সময়ে দেশে মোট ২৩৯টি শিল্প ইউনিট নিবন্ধিত হয়েছিল। এসব শিল্প ইউনিটে মোট প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমান ছিল ৯ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। সে অনুযায়ী, এপ্রিল-জুন সময়ে স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ২০১টি এবং স্থানীয় বিনিয়োগ প্রস্তাব হ্রাস পেয়েছে ৮৩.৪৪ শতাংশ। আর বিগত ২০১৯ সালের একই সময়ের চেয়ে বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে ৮৬.৭৬ শতাংশ। গত এপ্রিল-জুন সময়ে ৫টি শতভাগ বিদেশী ও তিনটি যৌথ বিনিয়োগের শিল্প ইউনিট নিবন্ধিত হয়। এই আটটি শিল্প ইউনিটে প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমান দাড়িয়েছে ৪ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। যা জানুয়ারি-মার্চ সময় অপেক্ষা ৩ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা কম। বিগত জানুয়ারি-মার্চ সময়ে বৈদেশিক বিনিয়োগ সম্বলিত মোটি ৫২টি শিল্প ইউনিট নিবন্ধিত হয়েছিল এবং এসব শিল্প ইউনিটে প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমান ছিল ৮ হাজার ২০ কোটি টাকা। সে অনুযায়ী, এপ্রিল-জুন সময়ে যৌথ ও বিেদশী শিল্প প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের সংখ্যা ৪৪টি হ্রাস পেয়েছে এবং বিদেশী বিনিয়োগ প্রস্তাব হ্রাস পেয়েছে ৪৮.২৫ শতাংশ। তবে বিগত ২০১৯ সালের একই সময়ের চেয়ে বিদেশী বিনিয়োগ প্রস্তাব বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৩৭.৫১ শতাংশ। খাত ভিত্তিক স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগ প্রস্তাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এপ্রিল-জুন সময়ে সম্মিলিতভাবে বিবিধ শিল্প খাতে সর্বাধিক বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে, যা মোট বিনিয়োগের ৭৭.২৩ শতাংশ। এছাড়া পর্যায়ক্রমিকভাবে কৃষি শিল্প খাতে ৬.৮৯ শতাংশ, সার্ভিস শিল্প খাতে ৫.৯৬ শতাংশ, ফুড এন্ড এলাইড শিল্প খাতে ৫.৭২ শতাংশ, টেক্সটাইল শিল্প খাতে ৩.৯৭ শতাংশ, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প খাতে দশমিক ১৫ শতাশ এবং প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন শিল্প খাতে দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে। আলোচ্য সময়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে নিবন্ধিত সর্বমোট ৪৬টি শিল্প ইউনিট বাস্তবায়িত হলে মোট ৫ হাজার ৭২১ সংখ্যক জনবলের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
×