ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হাসপাতালে সরাসরি অভিযান না চালাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি

প্রকাশিত: ২২:৪১, ৬ আগস্ট ২০২০

হাসপাতালে সরাসরি অভিযান না চালাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হাসপাতালে যাতে সরাসরি অভিযান না চালায় সেজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যেকোন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকা এবং জরুরী অভিযান পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব হলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চিকিৎসা শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সমন্বয়ে পরিচালনা করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয় চিঠিতে। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বেসরকারী স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব উম্মে হাবিবা স্বাক্ষরিত চিঠিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেয়া হয়। ‘দেশের সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালসমূহে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান পরিচালনা’ শীর্ষক চিঠিতে বলা হয়, করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাবের পর দেশে সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালসমূহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নানা বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করছেন। একটি হাসপাতালে একাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান পরিচালনা করাতে তাদের স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং এ কারণে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানসমূহে একধরনের চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে সার্বিক কার্যক্রম পরিবীক্ষণ করার জন্য একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে যেখানে জননিরাপত্তা বিভাগের একজন যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা সদস্য হিসেবে আছেন। ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোন অপারেশন পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে পরামর্শক্রমে তা করা যাবে বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে। এদিকে দেশে একের পর এক বেসরকারী হাসপাতালে অভিযান চালাচ্ছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। দেশের বিভিন্ন স্থানে হাসপাতাল, ক্লিনিক সিলগালা করে দেয়া হচ্ছে। রিজেন্ট হাসপাতালের ঘটনার পর থেকে হাসপাতালগুলোতে এ ধরনের অভিযান আরও বেড়েছে। এতে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত চিকিৎসক, নার্সসহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে করোনার কারণে অনেক বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিক বন্ধ রয়েছে। কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েও সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার স্বাভাবিক পরিবেশ তৈরি করতে পারছে না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। করোনা আতঙ্কে নন-কোভিড রোগীদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসার অভাবে রোগী মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। শত শত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে চিকিৎসক-নার্স ও রোগীদের মধ্যে এক ধরনের আস্থার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের তাৎক্ষণিক অভিযানে হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে রোগী চিকিৎসাসেবার পরিধি আরও হ্রাস পেয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
×