ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নবীগঞ্জে বোন জামাইকে নিয়ে মাকে হত্যা করে মেয়ে

প্রকাশিত: ২১:০৭, ৫ আগস্ট ২০২০

নবীগঞ্জে বোন জামাইকে নিয়ে মাকে হত্যা করে মেয়ে

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ ॥ হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জে ছালেমা খুনের রহস্য উদঘাটন হয়েছে। বড় বোন জামাইকে সাথে নিয়ে নিজের মাকে কুপিয়ে হত্যা করে পাষন্ড মেয়ে। খুনীদের মধ্যে পরকিয়ার সম্পর্ক ছিল। অনৈতিক কাজে বাধ সাধায় মেয়ে ও জামাতার হাতে খুন হতে হলো ৪৫ বছরের নারীকে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে দুই ঘাতক। বুধবার (৫ আগস্ট) দুপুরে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, এর আগে খুনী সেজমিন আক্তার শান্তি ও তার দুলাভাই মোগল মিয়া গত ৩ এবং ৪ এপ্রিল হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ২ আগস্ট ছালেমা আক্তার (৪৫) এর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শুরুতে ধারণা করা হয় পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছেন তিনি। কিন্তু পুলিশের তদন্তে ঘটনা মোড় নেয় অন্যদিকে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে নিজের মাকে হত্যার কথা স্বীকার করে শান্তি ও তার দুলাভাই মোগল। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যা জানান, নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁওয়ের হিরন মিয়া তার বড় মেয়ে জেসমিন আক্তারকে বিয়ে দেন একই এলাকার মোগল মিয়ার সাথে। বিয়ের পর থেকে শশুরবাড়িতেই বসবাস করছিলেন মোগল। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর বিদেশ চলে যান মোগলের স্ত্রী জেসমিন। এরপর শ্যালিকা শান্তির সাথে পরকিয়ার সম্পর্কে গড়ে উঠে তার। গেল ১ আগস্ট দিবাগত রাতে মোগল ও শান্তি একটি কক্ষে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িত হয়। বিষয়টি দেখে চিৎকার শুরু করেন শান্তির মা ছালেমা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুই পরকিয়া প্রেমিক মিলে ছালেমার গলা কেটে, বুক, থুতনি ও ঘারে কুপিয়ে হত্যা করে। নিজের গর্ভধারীনি মাকে মেরে ফেলার কিছুক্ষণ পর রক্তমাখা জামা-কাপড় পাল্টিয়ে ডাকাত-ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করে খুনী শান্তি। শুনতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পরদিন মরদেহ মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় তারা দুজনকে। এসপি আরো বলেন, নিহতের স্বামী হিরন মিয়া এ ব্যাপারে হত্যা মামরা দায়ের করেছেন। এতে আসামী চারজন। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে ছালেমা ও শান্তিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পারভেজ আলম চৌধুরী ও নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
×