ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ

জুলাই মাসে রফতানি আয় ৩৯১ ডলার

প্রকাশিত: ২১:০২, ৫ আগস্ট ২০২০

জুলাই মাসে রফতানি আয় ৩৯১ ডলার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেই নতুন অর্থবছরের শুরুতেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে পণ্য রফতানি আয়। মঙ্গলবার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রফতানির হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, নতুন অর্থবছরের প্রথম জুলাই মাসে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে ৩৯১ কোটি ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ। এই অঙ্ক লক্ষ্যের চেয়ে ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ কম। তবে তৈরি পোশাকে রফতানি আয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও প্রবৃদ্ধি কমেছে। জুলাই মাসে আয় এসেছে ৩২৪ কোটি ডলার। এছাড়া কৃষি, পাট, রসায়ন ও প্রকৌশলসহ অধিকাংশ খাতে পণ্য রফতানি আয় বেড়েছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার। এরমধ্যে প্রথম জুলাই মাসে রফতানি আয় এসেছে ৩৯১ কোটি ৯ লাখ ডলার। আগের বছরে রফতানির পরিমাণ ছিল ৩৮৮ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। এ হিসাবেই প্রবৃদ্ধি হয়েছে শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর লক্ষ্যের চেয়ে আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এর আগে গত অর্থবছরের জুন মাসে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রফতানি করে ২৭১ কোটি ৪৯ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। মে মাসে রফতানির পরিমাণ ছিল ১৪৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। গত এপ্রিলে এই রফতানির পরিমাণ ছিল মাত্র ৫২ কোটি ডলার। মূলত গত মার্চ থেকে দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ায় রফতানি আয় কমতে থাকে। কিন্তু এপ্রিল মাসে রফতানি আয় কম আসলেও এর পরের মাস থেকে আবার বাড়তে থাকে। রফতানিকারকরা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে এপ্রিল মাসের পুরোটা সময় পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ ছিল। বিশ্বব্যাপী পরিস্থিতিও ছিল খুব খারাপ। সে কারণে এপ্রিলে রফতানি তলানিতে নেমে এসেছিল। এখন বিশ্বের প্রায় সব দেশেই লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। এজন্য রফতানি আয় বাড়ছে। সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়বে বলে আশা করছেন তারা। রফতানির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই মাসে ৩২৪ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। আগের বছরের চেয়ে পোশাক রফতানি কমেছে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। তবে লক্ষ্যের চেয়ে আয় বেড়েছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। জুলাই মাসে নিট পোশাক রফতানি হয়েছে ১৭৫ কোটি ২ লাখ ডলারের। নিট পোশাকে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেড়েছে ২৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ওভেন পোশাক রফতানি হয়েছে ১৪৯ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। তবে লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে ৪ শতাংশ। গত ঈদ-উল-আজহার মতো এবারও বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি আয়ের উৎস চামড়া শিল্পের খরা কাটছে না। জুলাই মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে আয় এসেছে প্রায় ৯ কোটি ডলার। আগের বছরের তুলনায় ১৫ দশমিক ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কমলেও রফতানি আয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ১৬ দশমিক ২২ শতাংশ। গত অর্থবছরে হিমায়িত চিংড়ি রফতানি করে বাংলাদেশ ৩ কোটি ১৭ ডলার আয় করেছে। রফতানির এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। এ খাতের লক্ষ্য ছিল ৩ কোটি ৪৯ ডলার। আগের অর্থবছরে আয় হয়েছিল ৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। গত অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণে কমে যায় কৃষি পণ্য রফতানি আয়। তবে নতুন অর্থবছরের প্রথম মাসেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে কৃষি পণ্য রফতানি আয়। জুলাই মাসে রফতানি আয় এসেছে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ দশমিক ৯২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে ১২ দশমিক ২৮ শতাংশ। ধারাবাহিক লোকসানের কারণে সম্প্রতি দেশের সব সরকারী পাটকল বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই মহামারীকালে সরকারের এমন উদ্যোগের মধ্যেও আশা দেখাচ্ছে পাট রফতানি। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে পাট রফতানিতে। জুলাই মাসে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৫ দমমিক ৪৪ শতাংশ। এছাড়া ওষুধ রফতানিতেও রেকর্ড প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। ৪৯ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি ওষুধ রফতানিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
×