ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পেকুয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানকে স্থায়ী বহিস্কার ও ইউএনও’কে শাস্তির সুপারিশ

প্রকাশিত: ১৯:২৩, ৩১ জুলাই ২০২০

পেকুয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানকে স্থায়ী বহিস্কার ও ইউএনও’কে শাস্তির সুপারিশ

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নে বহুল আলোচিত ও সমালোচিত চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে অবশেষে চাল আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যান পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। একই ঘটনায় পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরোক্ষ সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তদন্ত প্রতিবেদনে ইউএনও সাঈকা সাহাদাত এর বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত থাকার সত্যতা উঠে আসায় ইউএনও’র ব্যাপারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অচিরেই ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র। বুধবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলামকে বহিস্কারের আদেশ দেয়া হয়। প্রজ্ঞাপন সুত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সুপারিশক্রমে স্থানীয় সরকার বিভাগ গত ২৯ এপ্রিল ৪২৮ নং স্মারকে চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ধারা ৩৪(৪) (ঘ) অনুযায়ী তাকে কেন চূড়ান্ত অপসারণ করা হবেনা তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। এতে তিনি সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারায় ও বিভাগীয় তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় একই আইনের ৩৪ (৫) ধারায় তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ/ স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়। সে সঙ্গে পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়। এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো: ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, সরকারি চাল আত্মসাতের ঘটনায় গত ৩০ এপ্রিল চট্টগ্রাম স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) দীপক চক্রবর্তীকে আহবায়ক করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাঈকা সাহাদাতকে এ ঘটনায় পরোক্ষভাবে দায়ী করা হয়েছে। তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৯জুন প্রকাশ্যে দিবালোকে সড়কে ফেলে মধ্যযুগীয় কায়দায় রেজাউল করিম নামে এক যুবককে অমানবিক নির্যাতন চালায় চেয়ারম্যান জাহেদ। ওই সময় এ ঘটনা নিয়ে পুরো জেলা জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পরে ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে একই বছর এক অটোরিক্সা চালককে লোহা চুরির অভিযোগে তার টর্চার শেষে রাতভর নির্যাতন চালান তিনি। ওই ঘটনার ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন টইটং ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী। তবে তার ক্ষমতার দাপটের কারণে সেসময় তার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। শেষমেষ গরীবের চাউল চুরির ঘটনায় ফেসে গেলেন তিনি। বহিস্কার হলেন চেয়ারম্যান পদ থেকে।
×