ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বসানো হচ্ছে বিশেষ চেকপোস্ট

চামড়া পাচার ঠেকাতে মাঠে নামছে বিজিবি পুলিশ র‌্যাব

প্রকাশিত: ২৩:২৮, ৩১ জুলাই ২০২০

চামড়া পাচার ঠেকাতে মাঠে নামছে বিজিবি পুলিশ র‌্যাব

গাফফার খান চৌধুরী ॥ চামড়া পাচাররোধে মাঠে নামছে বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাব। মহাসড়কগুলোতে বিশেষ চেকপোস্ট বসাচ্ছে পুলিশ ও র‌্যাব। আর বাংলাদেশ-ভারত স্থলসীমান্তে বিজিবি বসাছে বিশেষ চেকপোস্ট। প্রতিটি চামড়াবাহী যানবাহনের চালক, তার ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির কাগজপত্র ও গাড়ির নম্বরের ছবি তুলে রাখা হবে। আর চালকের জাতীয় পরিচয়পত্রসহ মোবাইল নম্বর লিপিবদ্ধ করে রাখা হবে রেজিস্টার্ড খাতায়। সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক বৈধভাবে চামড়া যাচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রফতানির আড়ালে চামড়া পাচাররোধে স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ টাস্কফোর্স পুরো কর্মকা- মনিটরিং করবে। পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবিসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সরকারী নিদের্শনা মোতাবেক চামড়া রফতানি হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে নজর রাখবে। ঈদের পর থেকেই সীমান্তের দিকে চামড়াবাহী সব ধরনের যানবাহনের গতিবিধির ওপর নজর রাখা হবে। সীমান্তে বিজিবি নিয়মমাফিক সরকারী নিয়ম মেনে চামড়া রফতানি হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করবে। চামড়া রফতানির আড়ালে অর্থ পাচার হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করা হবে। কারণ অনেক ব্যবসায়ী ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে রফতানির আড়ালে অর্থ পাচার করে। প্রতিটি চামড়াবাহী যানবাহনের চালক, তার ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির কাগজপত্র ও গাড়ির নম্বরের ছবি তুলে রাখা হবে। আর চালকের জাতীয় পরিচয়পত্রসহ মোবাইল নম্বর লিপিবদ্ধ করে রাখা হবে। আর চামড়াবাহী যেসব যানবাহন সাভারের চামড়া শিল্প নগরীর দিকে যাবে, সে বিষয়ে অহেতুক চেকিং না করার নির্দেশনা আছে। চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির তথ্য মোতাবেক, সারাদেশে ছোট বড় ৩শ’ চামড়া প্রস্তুতকারী কারখানা রয়েছে। এরমধ্যে ঢাকায় ২৬৫টি। বাকিগুলো ঢাকার বাইরে। উচ্চ আদালতের নির্দেশের পর বেশিরভাগ কারখানাই সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে চলে গেলেও গ্যাস, বিদ্যুতসহ নানা অসুবিধা থাকায় পুুরোপুরি কাজ শুরু করতে পারেনি। প্রতিবছর ঈদ-উল-আজহায় সারাদেশে প্রায় সোয়া এক কোটি প্রাণী কোরবানি হয়। তবে এবার করোনার কারণে সর্বোচ্চ এক কোটি কোরবানি হতে পারে। আবার কমও হতে পারে। অধিকাংশ চামড়াই এক সময় ঢাকায় আসত। এখন সাভারে ট্যানারি শিল্প গড়ে ওঠায় চামড়া সেখানেই যাওয়ার কথা। বেশকিছু চামড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় থাকা চামড়া প্রস্তুত কারখানায় যায়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ থেকে রফতানিকারক পণ্যের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে তৈরি পোশাক। দ্বিতীয় অবস্থানে হিমায়িত মাছ। আর তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। আগামী বছর চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি করে ৪০ হাজার কোটি টাকার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চামড়া রফতানির আড়ালে পাচাররোধে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। নিয়মিত সড়ক মহাসড়কে, রেল স্টেশন ও লঞ্চ টার্মিনালেও চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানো হবে। বেআইনীভাবে চামড়া বেচাকেনা ও পাচারকারীদের শাস্তি দিতে মাঠে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। হাইওয়ে পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মল্লিক ফখরুল ইসলাম রফতানির নামে চামড়া পাচাররোধে কড়া নির্দেশনা জারি করেছেন। ঈদের পর টানা সারাদেশে চামড়া পাচাররোধে বিশেষ অভিযান ও নিরাপত্তা এবং চেকপোস্ট ব্যবস্থা জোরদার থাকবে। বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ সাফিনুল ইসলাম ইতোমধ্যেই সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবিকে চামড়া পাচাররোধে সীমান্তে বিশেষ চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি ও নজরদারি বাড়ানোর কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। র‌্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের পরিচালক ও র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোঃ আশিক বিল্লাল জানান, চামড়া রফতানির আড়ালে যাতে চামড়া পাচার না হয় সে বিষয়ে সারাদেশে বিশেষভাবে তৎপর থাকবে র‌্যাব। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ নজরদারি করা হবে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে। ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার প্রকৌশলী ওয়ালিদ হোসেন জানান, চামড়া রফতানির আড়ালে চামড়া পাচাররোধে ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম ইতোমধ্যেই বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছেন।
×