ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঈদে নিরাপত্তা বিধানে পুলিশের পরামর্শ ও পদক্ষেপ

প্রকাশিত: ২৩:২৭, ৩১ জুলাই ২০২০

ঈদে নিরাপত্তা বিধানে পুলিশের পরামর্শ ও পদক্ষেপ

শংকর কুমার দে ॥ ঈদের ছুটিতে ও আগে-পরে নিরাপত্তা শঙ্কা এড়াতে নানা পদক্ষেপ ও বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। চামড়া সন্ত্রাস ও পশুর হাটে চাঁদাবাজিসহ সব ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে নজরদারি বাড়াতে অস্থায়ী কন্ট্রোলরুম স্থাপনসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। বাণিজ্যিক ও আবাসিক এলাকাগুলোতে টহল বাড়ানো, তল্লাশি, চেকপোস্ট স্থাপন, সাদা পোশাকে নজরদারিসহ যেকোনও জরুরী প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কন্ট্রোল রুম, থানা কিংবা ৯৯৯-এর সহযোগিতা নিতেও পুলিশের পক্ষ থেকে নাগরিকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। ঈদকালীন জানমালের নিরাপত্তা বিধানে ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ খবর জানা গেছে। পুলিশ সদর দফতরের একজন কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতি ও ঈদ মৌসুমের কারণে কিছু কিছু অপরাধ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মলম ও অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বেড়ে যায় এ সময়ে। এছাড়া সুযোগসন্ধানী দুর্বৃত্তরা নাশকতা চালানোরও সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করতে পারে। সেজন্য সাদা পোশাকে এবং ভার্চুয়ালি নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। সারাদেশের সব পুলিশ ইউনিটগুলোকে টহল বাড়ানোরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোরবানির পশু পরিবহনকে কেন্দ্র করে যেন কোনও ধরনের চাঁদাবাজি না হয়, চামড়া সন্ত্রাসী ও চামড়া পাচারকারীসহ এসব ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে পুলিশ কর্মকর্তাদের বিশেষভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি মোঃ সোহেল রানা বলেছেন, পুলিশ সদর দফতর থেকে ইতোমধ্যে সারাদেশের সব ইউনিটকে ঈদের আগে-পরে এবং ঈদের ছুটিতে নজরদারি বাড়াতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যাতে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। এছাড়া কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে কোনও প্রকার সিন্ডিকেট, চাঁদাবাজি, জোর জবরদস্তি না হয় সেজন্য পুলিশ কঠোর অবস্থানে থাকবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের(ডিএমপি) একজন কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা মহানগরসহ দেশের সব পশুর হাটে ভ্রাম্যমাণ কোনও দোকান বসতে না দেয়া হচ্ছে না। কারণ, পশুর হাটে খাবারের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে মানুষকে অজ্ঞান করে সব কিছু লুটে নেয় দুর্বৃত্তরা। এজন্য হাটের ইজারাদাররা হাটে শুধুমাত্র স্থায়ী খাবার দোকান ও চায়ের দোকান বসাতে পারবেন। যিনি স্থায়ী খাবার দোকান দেবেন তার বিস্তারিত পরিচয় থানায় জমা দিতে হবে ইজারাদারকে। যাতে যেকোনও অঘটনের জন্য আইনী ব্যবস্থা নিতে পুলিশের জন্য সুবিধা হয়। পশুর হাঠের নিরাপত্তার জন্য জরুরী প্রয়োজনে গরু নিয়ে হাটে আসা ট্রাকের নম্বর ও ড্রাইভারের নাম-পরিচয় এবং তার ছবি তুলে পুলিশ সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সাদা পোশাকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াও থাকছে ওয়াচ টাওয়ার ও পুলিশ কন্ট্রোলরুম। প্রতিটি থানায় ও কন্ট্রোলরুমে মানি এসকর্ট টিম স্ট্যান্ডবাই থাকছে। পশু বিক্রির টাকা ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশ তৎপর থাকবে। জাল টাকার বিস্তার রোধ ও পশুর হাটে অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি, পকেটমার ও অন্যান্য অপরাধীকে তৎপরতা বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোলরুম ও ওয়াচ টাওয়ারে জন সচেতনতামূলক ব্যানার স্থাপন করা হবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমিন বাজার টার্মিনালের পাশে রাস্তার ওপর ও হাজারীবাগ এলাকায় রাস্তার ওপর রাত ১১টার পর কাঁচা চামড়া রাখা যাবে না। কোরবানির বর্জ্য দ্রুত অপসারণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মেডিক্যাল টিম ও ভেটেরিনারি অফিসার (পশুর ডাক্তার) রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। পুলিশের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, চামড়া সন্ত্রাস প্রতিরোধে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ।
×