ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পল্লবী থানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় দুই মামলা

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ৩১ জুলাই ২০২০

পল্লবী থানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় দুই মামলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পল্লবী থানায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় জঙ্গী সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। সাইট ইন্টেলিজেন্সের দায় স্বীকারের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের তরফ থেকে গঠিত তিন সদস্যের গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। এদিকে পল্লবী থানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত তিনজনের বিরুদ্ধে ১৪ দিনের রিমান্ড নিয়েছে পুলিশ। বুধবার ঢাকার পল্লবী থানায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে চার পুলিশসহ পাঁচজন আহত হন। আহতদের মধ্যে বেসমারিক একমাত্র ব্যক্তির বাঁ হাতের কব্জি ও ডান হাতের একটি আঙ্গুল কেটে ফেলতে হয়েছে। এমন ঘটনার পর আইএস হামলার দায় স্বীকার করে বলে সাইট ইন্টেলিজেন্সের তরফ বিবৃতি প্রকাশিত হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন এমনটাই দাবি করেন। বৃহস্পতিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, পল্লবী থানার ঘটনায় দুইটি মামলা হয়েছে। যে তিনজন গ্রেফতার হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটনার মূল সূত্রপাত। এর সঙ্গে জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার কোন তথ্য প্রমাণ মেলেনি। গ্রেফতারকৃত তিনজনের মধ্যে শহিদুলকে তিনদিন আগে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেয়া হয়েছিল বলে তার পরিবারের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে। এ বিষয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, সারাদেশে পুলিশের তরফ থেকে জঙ্গী হামলার আশঙ্কায় বিশেষ সতর্কতা জারির পর পল্লবী থানায় বোমা বিস্ফোরণে চার পুলিশসহ পাঁচজন আহত হয়। পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে হত্যার গোপন পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে পল্লবী থানা পুলিশের একটি দল। অভিযানে বাড়ি থেকে রফিক (৪০), মোশারফ (২৬) ও শহীদুল (২৩) নামের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে দুইটি পিস্তল, চার রাউন্ড বুলেট ও একটি ওজন মাপার ডিজিটাল মেশিনের মতো জিনিসসহ নানা কিছু জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মালামালগুলো রাতে থানার পরিদর্শক অপারেশনস ইমরানুল ইসলামের রুমে রাখা হয়। জব্দ করা জিনিসপত্রের মধ্যে ওজনমাপার মতো সেই যন্ত্রে বোমা আছে বলে ধারণা করা হয়। এরপর দ্রুত বোম্ব ডিসপোজাল টিমকে ডাকা হয়। বোম্ব সংক্রান্ত কাজ করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব ইউনিটকে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে থানায় আসার আগেই ওজনমাপার মতো সেই যন্ত্রটির বিস্ফোরণ ঘটে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, আহতদের মধ্যে এসআই অংকুশকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চক্ষু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এসআই শফিক ও পরিদর্শক অপারেশন ইমরানুল ইসলামকেও প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে চিকিৎসকরা। আহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে এসআই রুমি এবং আহত সেবাপ্রার্থী রিয়াজকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। আহতদের মধ্যে পিএসআই রুমির দুই হাত, বাম পা এবং রিয়াজ নামের ওই ব্যক্তির দুই হাত ও পেট বিস্ফোরণে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। বুধবার বিকেলে রিয়াদের ক্ষতবিক্ষত বাম হাতের কব্জি ও ডান হাতের একটি আঙ্গুল কেটে ফেলতে হয়। এ ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম। তিনদিনের রিমান্ড ॥ এদিকে রাজধানীর পল্লবী থানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত তিনজনের ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আসামিরা হচ্ছেÑ রফিকুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও মোশাররফ। বৃহস্পতিবার তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পল্লবী থানার অস্ত্র মামলায় সাত ও বিস্ফোরক আইনে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অন্যদিকে তাদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মঈনুল ইসলাম অস্ত্র মামলায় সাতদিন ও বিস্ফোরক আইন মামলায় সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
×