ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

করোনায় আরও ৪৮ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ২৬৯৫

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ৩১ জুলাই ২০২০

করোনায় আরও ৪৮ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ২৬৯৫

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৪৮ জনের মৃত্যু এবং শনাক্ত হয়েছেন নতুন ২৬৯৫ জন। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৩০৮১ এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২ লাখ ৩৪ হাজার ৮৮৯ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ২৬৬৮ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ৯৬০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজার ৯৩৭টিসহ এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১১ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৫। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৬ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৩১ শতাংশ । বৃহস্পতিবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৪৮ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৬ এবং নারী ১২। তাদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৪১ জন এবং বাড়িতে মারা গেছেন সাত। তাদের বয়স বিবেচনায় ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এক, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে চার, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৪, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১২, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ১১, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে পাঁচ এবং ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগভিত্তিক মৃতের সংখ্যা ঢাকা বিভাগে ১৭, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২, খুলনা এবং সিলেট বিভাগে পাঁচ জন করে, রাজশাহীতে তিন এবং বরিশাল, রংপুর এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুইজন করে রয়েছেন। ডাঃ নাসিমা সুলতানা বলেন, এ পর্যন্ত মারা যাওয়াদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে মারা গেছেন ১৮ জন, যা শূন্য দশমিক ৫৮ শতাংশ; ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩০ জন, যা শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ; ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৮৫ জন, যা দুই দশমিক ৭৬ শতাংশ; ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২০২ জন, যা ছয় দশমিক ৫৫ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪৩৫ জন, যা ১৪ দশমিক ১১ শতাংশ; ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৮৯০ জন, যা ২৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং ৬০ অধিক এক হাজার ৪২৩ জন, যা ৪৬ দশমিক ১৬ শতাংশ। অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, বিভাগভিত্তিক মৃতের সংখ্যা এবং শতকরা হারে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে এক হাজার ৪৭৫ জন, যা ৪৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ; চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৫১ জন, যা ২৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ; রাজশাহীতে ১৮২ জন, যা পাঁচ দশমিক ৯০ শতাংশ; খুলনা বিভাগে ২১৯ জন, যা সাত দশমিক ১০ শতাংশ; বরিশাল বিভাগে ১০২ জন, যা তিন দশমিক ৯২ শতাংশ; সিলেট বিভাগে ১৫১ জন, যা চার দশমিক ৯০ শতাংশ; রংপুর বিভাগে ১৭৭ জন, যা তিন দশমিক ৮০ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬৭ জন, যা দুই দশমিক ১৭ শতাংশ। অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে মৃত্যুর পেছনে অন্যান্য বেশি রোগের উপস্থিতি ভূমিকা রাখছে। এই বয়সে মানুষ বেশি রোগে আক্রান্ত হন। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত থাকেন বেশি। আর আগে থেকেই যারা অন্য রোগে আক্রান্ত বা ক্যান্সার, হৃদরোগসহ অন্যান্য জটিল রোগে যারা আক্রান্ত থাকেন তাদের জন্য করোনায় ঝুঁকি বেশি। এজন্য ঘরের বয়োবৃদ্ধদের প্রতি সবসময় তিনি আলাদা নজর দেয়ার কথা বলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক। হটলাইন সেবা সীমিত ডাঃ নাসিমা সুলতানা বলেন, ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে হটলাইনে করোনা ও অন্যান্য রোগের সেবা সীমিত করা হয়েছে। আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বর ১০৬৫৫ সর্বদা খোলা থাকবে। এছাড়া জাতীয় কল সেন্টার (৩৩৩) ও স্বাস্থ্য বাতায়নের (১৬২৬৩) হটলাইন সেবা ঈদে বন্ধ থাকবে। গত ২৪ ঘণ্টার হটলাইন ফোনের তথ্য তুলে ধরে নাসিমা সুলতানা বলেন, এ সময়ে মোট ফোনকল এসেছে ৭৪ হাজার ৩৬৯টি। এরমধ্যে স্বাস্থ্য বাতায়নে (১৬২৬৩) ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ১১ হাজার ৪১৪, ৩৩৩ নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৬২ হাজার ৪৭০ এবং আইইডিসিআরের দুটি নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৮৫টি। আগামী ৩১ জুলাই থেকে আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বরটি (১০৬৫৫) ব্যবহৃত হবে। টেলিমেডিসিন সেবায় ২৪ ঘণ্টায় করোনা স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করেছেন চার হাজার ৫৩১ জন। এ পর্যন্ত করোনা স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করেছেন এক লাখ ৪৮ হাজার ৩১৬ জন বলেও জানান নাসিমা সুলতানা। নাসিমা সুলতানা বলেন, ঢাকা মহানগরীতে সাধারণ শয্যায় ভর্তি আছেন দুই হাজার ৮৪ জন এবং আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছেন ১৯৩ জন। সারাদেশের অন্যান্য হাসপাতালের সাধারণ শয্যায় রোগী ভর্তি আছেন এক হাজার ৫৩৭ জন এবং আইসিইউতে রোগী ভর্তি আছেন ১০৬ জন। সারাদেশে সবমিলিয়ে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ২৪০টি, রোগী ভর্তি আছেন তিন হাজার ৯৭১ জন, শয্যা খালি আছে ১১ হাজার ২৬৯টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৫৪৯টি, রোগী ভর্তি আছেন ৩২৩ জন, শয্যা খালি আছে ২২৬টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৩৫২টি, হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলার সংখ্যা ৩১৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের সংখ্যা ১৫৭টি। অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা বলেন, আইসোলেশনে গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্ত হয়েছেন ৬৩৫ জন, এই সময় ছাড় পেয়েছেন ৭৩৬ জন। এ পর্যন্ত সর্বমোট আইসোলেশনে গেছেন ৪৯ হাজার ৯৫১ জন এবং ছাড় পেয়েছেন ৩১ হাজার ৩৮৩ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৫৬৮ জন। ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৪৫৩ জন এবং এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে গেছেন চার লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৭ জন। ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ২৭২ জন এবং এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন তিন লাখ ৭৬ হাজার ৯৭২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫৭ হাজার ৪২৫ জন। এদিকে, ২৯ জুলাইয়ের বুলেটিনে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ১৪ হাজার ১২৭টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা পাওয়া গেছে আরও ৩ হাজার ৯ জনের দেহে। সেই হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় রোগী শনাক্ত কমলেও লাফিয়ে বেড়েছে মৃত্যু। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৬৪ জনের। সেই তথ্য জানানো হয়, ৩০ জুনের বুলেটিনে। সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড চার হাজার ১৯ জনের, যা জানানো হয় ২ জুলাইয়ের বুলেটিনে।
×