ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পুঁজি সঙ্কটে রাজশাহীর চামড়া ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত: ২১:২১, ৩১ জুলাই ২০২০

পুঁজি সঙ্কটে রাজশাহীর চামড়া ব্যবসায়ীরা

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ অর্থ সঙ্কটের মুখে পড়ে এবারের কোরবানির পশুর চামড়া কিনতে আগ্রহী হচ্ছে না রাজশাহীর চামড়া ব্যবসায়ীরা। রাত পোহালেই ঈদ-উল-আজহা। কিন্তু এখন পর্যন্ত চামড়া কেনার টাকা জোগাড় করেত পারেননি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এতে এবারের কোরবানির মৌসুমে চামড়া কেনা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে তাদের। রাজশাহীর চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন তারা আর্থিক প্রণোদনার জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে আছেন। এর বাইরে ব্যাংক ঋণের কথাও ভাবছেন। বকেয়া আদায়, আর্থিক প্রণোদনা বা ব্যাংক ঋণ না পেলে তাদের পক্ষে এবারের চামড়া কেনা সম্ভব নয়। রাজশাহী জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের নেতারা বলছেন, ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে বেশ কয়েক বছরের টাকা বকেয়া পড়ে আছে। তাদের কাছে পুঁজি যা কিছু অবশিষ্ট ছিল, তাও এই করোনাকালে ঘরে বসে খেয়ে শেষ। সব পুঁজি হারিয়ে রাজশাহীর চামড়া ব্যবসায়ীরা এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে সঙ্কটময় পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে দিনযাপন করছেন। এ অবস্থায় নতুন করে পুঁজির সঙ্কুলান করা তাদের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব। রাজশাহী মহানগরের সপুরা এলাকার চামড়া ব্যবসায়ী আসলাম উদ্দিন বলেন, এক বছর নয়, পর পর তিন বছরের টাকা বকেয়া পড়েছে ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে। ২০১৭ সাল থেকে ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে চামড়ার বকেয়া টাকা পাবেন রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তারা টাকা পরিশোধের আশ্বাস দিয়েও করেনি। এক, দুই করে তিন বছরের বকেয়া পড়েছে। তাই কোরবানির মৌসুমে সরকারী প্রণোদনা, ব্যাংক ঋণ ও ট্যানারি মালিকদের বকেয়া পরিশোধ ছাড়া কেউ চামড়া কিনতে পারবে না। একই কথা জানিয়ে মহানগরের নওদাপাড়া এলাকায় চামড়া ব্যবসায়ী জাহিদুল আলম বলেন, এবার অর্থ সঙ্কটে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনতে পারবেন না এ কথা মোটামুটি নিশ্চিত। কিন্তু, তাই বলে দেশের জাতীয় সম্পদ নষ্ট করা যাবে না। যদি এমন পরিস্থিতিই শেষ পর্যন্ত তৈরি হয়, তাহলে যারা কোরবানি দিচ্ছেন তারাই চামড়া লবণজাত করে সংরক্ষণ করতে পারবেন। পরিস্থিতির উন্নতি হলে পরে সে চামড়া ভাল দামে বিক্রি করবেন। লবণ দিয়ে চামড়া দীর্ঘদিন রাখলেও পচবে না। ক্রেতা-বিক্রেতা পরে লাভবান হবেন। জেলায় প্রতি কোরবানির মৌসুমে ৭০ থেকে ৮০ হাজার পশু কোরবানি করা হয় জানিয়ে রাজশাহী চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রৌফ বলেন, এবার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা চরম আর্থিক সঙ্কটে ভুগছেন। ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে কোনভাবেই তারা বকেয়া টাকা আদায় করতে পারছেন না। অন্যদিকে বিভিন্ন শর্তের কারণে বর্তমানে ব্যাংক ঋণও কঠিন হয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে চামড়া ব্যবসায়ীদের দুর্দিন চলছে।
×