ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাঁচ শ’ শিকারে উচ্ছ্বসিত স্টুয়ার্ট ব্রড

প্রকাশিত: ২৩:৪৫, ৩০ জুলাই ২০২০

পাঁচ শ’ শিকারে উচ্ছ্বসিত স্টুয়ার্ট ব্রড

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ টেস্ট ক্রিকেটের প্রায় দেড় শ’ বছরের ইতিহাসে বিশ্বের সপ্তম আর মাত্র দ্বিতীয় ইংলিশ বোলার হিসেবে ৫০০ উইকেটের এলিট ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন স্টুয়ার্ট ব্রড। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৪টিসহ মোট ১০ উইকেট নিয়ে স্বপ্নের ল্যান্ডমার্কে পা রাখেন ৩৪ বছর বয়সী ডানহাতি পেসার। সর্বোচ্চ শিকারে সেরা চারে থাকা সতীর্থ জেমস এ্যান্ডারসনের উইকেট ৫৮৯। বর্তমানে খেলছেন এমন পেসারদের মধ্যে জিমি-ব্রডের পেছনে ইশান্ত শর্মার উইকেট এখনও তিন শ’ (২৯৭) হয়নি, বয়স ৩২ ছুঁইছুঁই! টিম সাউদি (২৮৪) ও ট্রেন্ট বোল্টের (২৬৭) বয়স ৩১ পেরিয়ে গেছে। সুতরাং বিশ্বজুড়ে টি২০’র ধুন্ধুমার এই যুগে আর কোন পেসার টেস্টে ৫০০ উইকেট পাবেন কি না, সে বিষয়ে সংশয়ে ব্রড। নিজের এ অর্জন সহজ ছিল না বলেও জানিয়েছেন তিনি। স্মরণীয় কীর্তিগড়া ব্রড বলেন, ‘এটা দারুণ ব্যপার। জিমির (এ্যান্ডারসন) পর মাত্র দ্বিতীয় ইংলিশ বোলার হিসেবে আমি পাঁচ শ’ উইকেট পেয়েছি। আরও বেশি ভাল লাগছে কারণ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের এই জয়ে আমরা ২-১ এ সিরিজ জিততে পেরেছি। দীর্ঘ সময় ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে পেরে, অবদান রাখতে পেরে আমি গর্বিত। সত্যি অসাধারণ অনুভূতি।’ ভবিষ্যতে আর কোন পেসার টেস্টে ৫০০ উইকেট পাবেন কি না, সেটি নিয়ে অবশ্য সংশয়ে ব্রড, ‘পাঁচ শ’ উইকেট পর্যন্ত যেতে হলে অনেক টেস্ট ম্যাচ খেলতে হবে। অবশ্যই এমন অনেকে আসবেন, যাদের প্রতিভা থাকবে ওই পর্যন্ত যাওয়ার। তবে একজন পেসার এত বেশি টেস্ট খেলতে পারবেন কিনা, সেটিই দেখার বিষয়। বিভিন্ন টি২০ ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগগুলোর লড়াই এখন তুমুল। তার ওপর টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা কমিয়ে আনার আলোচনাও চলছে। আমি সৌভাগ্যবান যে ইংল্যান্ডের হয়ে এমন একটা যুগে খেলেছি, যখন আমরা প্রচুর টেস্টে অংশ নিয়েছি।’ উল্লেখ্য, টেস্ট ইতিহাসে ব্রডের আগে পাঁচ শ’ বা তার বেশি উইকেট শিকারী অপর ছয় বোলার হলেন মুত্তিয়া মুরলিধরন (৮০০), শেন ওয়ার্ন (৭০৮), অনিল কুম্বলে (৬১৯), জেমস এ্যান্ডারসন (৫৮৯), গ্লেন ম্যাকগ্রা (৫৬৩) এবং কোর্টনি ওয়ালশ (৫১৯)। যেখানে প্রথম তিনজন স্পিনার, পরের তিন পেসারের দুইজনই সাবেক হয়ে গেছেন, ৩৭ পূর্ণ করে আজ ৩৮Ñএ পা রাখতে যাওয়া এ্যান্ডারসনের ক্যারিয়ারও শেষের পথে। এখনও খেলছেন, এমন বোলারদের মধ্যে ৫০০ উইকেট ছোঁয়ার বাস্তব সম্ভাবনা আছে নাথান লায়ন (৩৯০ উইকেট) ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের (৩৬৫), দুজনই অফস্পিনার। ১৪০ টেস্ট খেলা পেসার ওয়ানডে খেলেছেন মাত্র ১২১, টি২০ ৫৬। সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ৪ বছর আগে, সর্বশেষ টি২০ ৬ বছর। ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগও খুব বেশি খেলেননি তিনি। এ কারণেই ১৩ বছর ধরে আভিজাত্যের টেস্ট আঙ্গিনায় বিচরণ ব্রডের। ক্যারিয়ারে ১৪০তম টেস্টে ৫০০ উইকেট শিকারী আরও এগিয়ে যেতে চান, ‘সাবেক ক্রীড়াবিদরা সবসময়ই বলেন, তারা জানতেন, কখন বিদায়ের সময় হয়েছে। তারা বুঝতে পেরেছিলেন যে ভেতরের তাগিদ হারিয়ে ফেলেছেন। তবে আমি এখনও তাড়না অনুভব করছি। সপ্তাহ দুয়েক আগে যদিও একটু ভাবনায় ছিলাম। ভাবছিলাম, ‘কোন দিকে যাচ্ছি আমি?’ কিন্তু আমি খুশি যে তখন শক্ত থেকেছি এবং দুই সপ্তাহ পর এখন আমি আরও খুশি।’ উল্লেখ্য, বাই রোটেশনের নিয়মে সাউদাম্পটনের প্রথম টেস্টে একাদশের বাইরে রাখা হয়েছিল ব্রডকে। গত দুই বছর ধারাবাহিক সফল এ পেসার আরও যোগ করেন, ‘যে কোন সময়ের মতোই ভাল বোলিং করছি আমি। গত দেড় বছরে কিছু টেকনিক্যাল কাজ করেছি এবং রানআপে বদল এনেছি। স্টাম্প সোজা আক্রমণ বেশি করছি এখন এবং ব্যাটসম্যানকে যতটা সম্ভব খেলাতে বাধ্য করছি। এই টেকনিক্যাল পরিবর্তন আমাকে রোমাঞ্চকর একটি ধাপে পৌঁছে দিয়েছে।’ পাঁচ শ’র এলিট ক্লাবে নাম লেখানো ব্রডকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন মাইকেল ভন, ভিভ রিচার্ডস, শচীন টেন্ডুলকরের মতো সাবেক গ্রেটসহ অনেকে।
×