ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শাহরীন তাবাসসুম

সুযোগের অপব্যবহার

প্রকাশিত: ২২:১৬, ৩০ জুলাই ২০২০

সুযোগের অপব্যবহার

বর্তমানে আমরা খুবই সঙ্কটপূর্ণ একটি সময় প্রত্যক্ষ করছি। চারপাশে করোনার ধ্বংসলীলা। একটি ছোট অনুজীব, যা চোখেই দেখা যায় না সেটি গোটা পৃথিবীকে থমকে দিয়েছে। যা আমাদের অনেকের ধারণার বাইরে। এই কঠোর সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করার কথা ছিল কিন্তু একদল মানুষ এই দুঃসময়টাকে কাজে লাগিয়ে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। চার মাসব্যাপী করোনা আমাদের দেশে থাবা বসিয়ে যাচ্ছে। মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। এ সময় সাধারণ মানুষের ভরসার জায়গা হচ্ছে ডাক্তার ও হাসপাতাল। কিন্তু তারাও যখন সহায় না হয়, সাহায্য না করে প্রতারণা করে তখন সাধারণ মানুষের ভরসার স্থান টলতে শুরু করে। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের রিপোর্ট নিয়ে মিথ্যাচারের ঘটনা উঠে এসেছে। শাহেদ, আরিফ, সাবরিনাদের মতো কিছু নিম্ন মানসিকতার লোক টাকা নিয়ে করোনার ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করেছে। যেখানে সরকার কর্তৃক নির্দেশনা ছিল করোনার পরীক্ষা হবে বিনামূল্যে সেখানে তারা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে পরীক্ষা না করেই মনগড়া রিপোর্ট দিয়েছে। একজন কোভিড পজেটিভের দ্বারা অনেক লোক আক্রান্ত হতে পারে। বিরাট এক চক্র কাজ করেছে এর পিছনে। এই মিথ্যাচারের পিছনে যারা ছিল তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। ইতালির একটি সংবাদপত্রের প্রথম পৃষ্ঠায় এ নিয়ে লেখা হয়েছে। শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও আমাদের দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হচ্ছে। এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব আমাদের রাজনীতি ও অর্থনীতিতেও আসতে পারে। করোনার জন্য সরকার জনসমাগম হয় এমন স্থান যেমন মার্কেট, শপিংমলসহ অন্যান্য কেনাকাটা করার জায়গাগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। এ সময় মানুষ অনলাইন সাইটগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অসংখ্য পেজ ও গ্রুপ আাছে যারা জামা-কাপড় ও দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্র বিক্রি করে থাকে। বাইরে না যাওয়ার দরুন অনেকেই এগুলোর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। আর এই সুযোগে অনলাইন ব্যবসায়ীরা মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। অথচ অনেকেই ডেলিভারি দেওয়ার সময় একই উপাদানের জিনিস দিচ্ছে না। ফলে বিপাকে পড়ছেন অনেক ক্রেতা। অনেকে আবার অর্ডারকৃত পণ্যের ২০-৫০% পর্যন্ত টাকা অগ্রিম দাবি করে। টাকা দেওয়ার পর আর তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। এমন অনেক কারণেই অনলাইন কেনাকাটার ওপর বিশ্বাস হারাচ্ছেন হাজারো মানুষ। করোনার শুরুতে একদল লোক প্রতিটি মাস্ক বিক্রি করেছে আকাশ ছোঁয়া দামে। নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিক্রি হয়েছে রাস্তার মোড়ে মোড়ে। এদিকে আবার একদল ব্যবসায়ী চাল, ডাল, শাক-সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ওপর অধিক হারে দাম নির্ধারণ করেছেন। অনেকে আবার গুজব ছড়িয়েছে লবণসহ নানা ব্যাপারে। এর ফলে সমস্যায় পড়ছেন মধ্যবিত্ত থেকে নিম্ন আয়ের সকল মানুষ। দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষের দিনাতিপাত হচ্ছে অর্ধাহারে, অনাহারে। সরকার যেখানে ডাক দিয়েছিল করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সবাই সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করার জন্য সেখানে কিছু অসাধু ব্যক্তি এবং চক্র রাজাকারের মতো ব্যবহার করেছে এই সুযোগকে এবং হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। যার ফলে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে সর্বস্তরের মানুষকে। ময়মনসিংহ থেকে
×