ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শাহীন চৌধুরী ডলি

প্রতারকদের ক্ষমা নয়

প্রকাশিত: ২২:১৪, ৩০ জুলাই ২০২০

প্রতারকদের ক্ষমা নয়

প্রতারণা এই শব্দটি যেন বাংলাদেশের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। সমাজের উঁচু থেকে নিচুস্তরের নানা পেশার মানুষ নানারকম প্রতারণার ফাঁদে ফেলে দেশের মানুষকে ভোগাচ্ছে। কেউ কেউ প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে সর্বহারা হচ্ছেন। ইদানীংকালে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে করোনা নিয়ে প্রতারণা। করোনার মতো মহামারীকে ঘিরেও নানা প্রতারক চক্র সক্রিয়। করোনা মহামারীর শুরুতে আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থার রুগ্ন অবস্থা প্রকাশিত হওয়ার পর একে একে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির খবর প্রকাশ পাচ্ছে। সরকারী স্বাস্থসেবার বেহাল দশার পাশাপাশি বেসরকারী চিকিৎসা সেবাখাত জনগণকে জিম্মি করে লুটপাটের রাজত্ব কায়েমে তৎপর রয়েছে। এসব চক্র করোনা পরীক্ষা, প্লাজমা দান, করোনা চিকিৎসক, নকল ওষুধ, রোগী সেজে প্রতারণা করে আসছে। নকল সুরক্ষা সামগ্রী, স্যানিটাইজার, মাস্ক নিয়েও এক শ্রেণীর প্রতারক প্রতারণা করছে। প্রতারক চক্রের প্রতারণার শিকার হয়ে রোগী এবং রোগীর স্বজনেরা ভোগান্তি পোহাচ্ছে এবং অর্থ খুইয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে। করোনার কোন ধরনের পরীক্ষা না করেই বিভিন্ন হাসপাতাল টেস্টের নমুনা ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে মনগড়াভাবে কাউকে পজিটিভ, কাউকে নেগেটিভের ভুয়া রিপোর্ট দেয়া শুরু করে। বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো বিভিন্ন স্থানে শাখা খুলে করোনা পরীক্ষা নিয়ে নয়ছয়, ভুতুড়ে বিল তৈরি ও আদায়, এমনকি সরকারের অনুমোদন ছাড়াই এ্যান্টিবডি পরীক্ষার মতো গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ডাক্তারদের ও নার্সদের বেতন না পরিশোধ করা, অসুস্থ হওয়ার পরও কোভিড-১৯ পরীক্ষা করতে না দিয়ে দায়িত্ব পালনে বাধ্য করাসহ আরও অনেক অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। করোনা মহামারীকে পুঁজি করে বিপন্ন মানুষদের জিম্মি করার মাধ্যমে চলা এসব দুর্নীতিতে রাজধানী ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতালের সাহেদ, জেকেজির আরিফ ও ডাঃ সাবরিনা, শাহাবুদ্দিন হাসপাতালের এমডি ফয়সাল আল ইসলামের মতো মনুষ্যত্বহীন প্রতারকদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। আশার কথা দেরিতে হলেও সরকার প্রতারণার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। এখন অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা খুব প্রয়োজন। স্বাস্থ্য অধিদফতরে নানা সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, যাদের অঙ্গুলি হেলনে জনগণের স্বার্থ প্রাধান্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় না। বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবাদাতারাও অধিদফতরের যোগসাজশে কোন নিয়মের তোয়াক্কা করছে না। করোনাভাইরাসের শনাক্ত সম্পর্কে ভুয়া রিপোর্ট দেয়াসহ নানা অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়ার পর থেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর পরস্পরকে দোষারোপ করে চলতে দেখা গেছে। এর মধ্যেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক পদত্যাগ করেছেন। স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। করোনা মহামারীর কঠিন দুর্যোগে বেসরকারী হাসপাতালগুলো থেকে মানুষ চিকিৎসা পায়নি বরং মারাত্মক প্রতারণার শিকার হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
×