ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে বিয়ে করলেন অভিযুক্ত শিক্ষক

প্রকাশিত: ১৩:৫৩, ২৮ জুলাই ২০২০

ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে বিয়ে করলেন অভিযুক্ত শিক্ষক

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ মণিরামপুরে ধর্ষণের শিকার মাদ্রাসা ছাত্রীকে ভুয়া জন্ম সনদ দেখিয়ে বিয়ে করেছেন অভিযুক্ত সেই শিক্ষক তরিকুল ইসলাম। মামলা থেকে বাঁচতে গত সোমবার শিক্ষক তরিকুল ওই শিক্ষার্থীকে বয়স বেশি দেখিয়ে ভুয়া জন্ম সনদে বিয়ে করেছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। যদিও শিক্ষক তরিকুলের প্রথম স্ত্রী ও ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে। অপকর্মের কারণে মাদ্রাসা থেকে সাময়িক বরখাস্তও হন তিনি। ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর উপজেলার ঝাঁপা বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় নাইট কোচিং শেষে বাড়ি ফেরার পথে অপর শিক্ষক নজরুল ইসলামের সহযোগিতায় ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন তরিকুল ইসলাম। পরে অচেতন ও রক্তাক্ত অবস্থায় মাদ্রাসার বাথরুম থেকে উদ্ধার করে যশোর আড়াইশ’ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করেন ভিকটিমের স্বজনরা। তখন এ ঘটনা জানাজানি হলে জড়িত থাকার অভিযোগে সহকারী মৌলভি নজরুল ইসলামকে মারধর দিয়ে মাদ্রাসা সুপার মাওলানা শাহাদাৎ হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসি। পরে প্রশাসনের সহায়তায় সুপার উদ্ধার হয়। শিক্ষক তরিকুল ইসলাম ও নজরুল ইসলামের নামে থানায় মামলা করেন ভিকটিম ছাত্রীর পিতা । ওই বছরের ৬ অক্টোবর ভিকটিম শিক্ষার্থীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্নসহ জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ গত বছরের ৭ অক্টোবর মাদ্রাসা শিক্ষক নজরুল ইসলামকে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া বাজার থেকে এবং পরদিন যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া এলাকা থেকে তরিকুল ইসলামকে আটক করেন। আটক তরিকুল ইসলাম সম্প্রতি জামিনে ছাড়া পেয়ে মামলা থেকে বাঁচতে ওই শিক্ষার্থীকে বিয়ে করতে মরিয়া উঠে। শেষ পর্যন্ত বিয়েও করেছে তরিকুল। ২৭ জুলাই ভুয়া জন্ম সনদে বিয়ে পড়িয়েছেন পৌর নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কাজী মাহবুবুর রহমান। তিনি জানান, জন্ম সনদে বয়স দেখে বিয়ে পড়ানো হয়েছে। শিক্ষক তরিকুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, ভাই বাঁচার জন্য বিয়ে করেছি সত্য। তবে আপনাদের দোয়ায় কাগজে লিখে আমার সর্বনাশ আর করবেন না। ওই শিক্ষার্থীর সনদ অনুযায়ী বয়স ১৮ বছর হয়নি এমন প্রশ্ন করতেই তরিকুল জানান, এর আগেও তার দুইজনের সাথে বিয়ে হয়েছে। অতএব আপনার না ঘাটা-ঘাটি করলে আমি বেঁচে যাবো। এদিকে ঝাঁপা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব এনামুল হক বলেন, জন্ম সনদ নিতে দুই বার আবেদন করেন ওই শিক্ষার্থীর স্বজনরা। কিন্তু ৫ম ও ৮ম শ্রেণি পাশের সার্টিফিকেট আনতে বলাই তারা আর আসেনি।
×