ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চামড়া নির্ধারিত দামে কেনাবেচা না হলে কঠোর ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ২৩:১৮, ২৮ জুলাই ২০২০

চামড়া নির্ধারিত দামে কেনাবেচা না হলে কঠোর ব্যবস্থা

এম শাহজাহান ॥ সরকার নির্ধারিত দামে কোরবানির পশুর চামড়া কেনাবেচা না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। জাতীয় সম্পদ রক্ষায় কাঁচা চামড়া রফতানির বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। সারাদেশে নির্ধারিত দামে বেচাকেনা সংরক্ষণ ও মজুদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এখনই কাঁচা চামড়া রফতানির অনুমতি দিতে চাচ্ছে না সরকার। এ বিষয়ে আরও গভীরভাবে বাজার পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া করোনাভাইরাসের সংংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় এ বছর কোরবানি কম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কাঁচা চামড়া সংগৃহীত হবে কি না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। এদিকে, চামড়া সম্পদ রক্ষায় প্রতিবছর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়। কাঁচা চামড়া কেনার জন্য ট্যানারি মালিক, আড়তদার ও মহাজন ব্যবসায়ীরা ব্যাংকগুলো থেকে প্রতিবছর বিপুল অঙ্কের ঋণ পেয়ে থাকেন। গত বছর প্রায় সাড়ে ৪শ’ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হলেও সেই টাকার চামড়া কেনেনি ট্যানারি মালিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা। এতে দেশের লাখ লাখ পিস চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। অনেকে বেচতে না পেরে চামড়া রাস্তায় ও ডাস্টবিনে ফেলে দিতে বাধ্য হন। তবে এ বছর কাঁচা চামড়া সংগ্রহ, বেচাকেনা ও মজুদ পরিস্থিতি মনিটরিং করবে সরকার। এছাড়া নামমাত্র সুদে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ঋণ দেয়া হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এই টাকার চামড়া কেনা না হলে অভিযুক্ত ও অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, সরকার নির্ধারিত দামে ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনবেন। চাহিদামতো ঋণ বিতরণসহ এ খাতের ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, এবার কোরবানির চামড়া নষ্ট হবে না। তিনি বলেন, কোরবানির দিন সারাদেশে চামড়া কেনাবেচার বিষয়টি মনিটরিং করা হবে। এজন্য তদারকি টিম কাজ করবে। এদিকে, কোরবানির কাঁচা চামড়া সরকার নির্ধারিত মূল্যে কেনাবেচা ও সংরক্ষণে কমপ্রিহেন্সিভ তদারকি টিম গঠন করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় যৌথ সমন্বয় কমিটি, কেন্দ্রীয় সমন্বয় ও মনিটরিং কমিটি, কন্ট্রোল রুম, ঢাকা ও নাটোর জেলার জন্য বিশেষ মনিটরিং টিম, বিভাগীয় জেলার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়াধীন দফতর কিংবা সংস্থার সমন্বয়ে মনিটিরিং টিম এবং সকল জেলা পর্যায়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তার সমন্বয়ে মনিটরিং টিম কাজ করবে। এর ফলে জাতীয় সম্পদ কোরবানি চামড়া সঠিক ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যদামে বেচাকেনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মনিটরিং কমিটিসমূহ স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় পবিত্র ঈদ-উল-আজহার দিন হতে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ কাঁচা চামড়ার গুণগতমান বজায় রাখা একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া এ বছর পবিত্র ঈদ-উল-আজহার জন্য নির্ধারিত এ দর গত বছরের চেয়ে কম নির্ধারণ করা হয়। এ বছর ঢাকার জন্য লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম গরুর প্রতি বর্গফুট ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ২৮ থেকে ৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত বছর ঢাকায় ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। আর ঢাকার বাইরে ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। অন্যদিকে, খাসির চামড়া সারাদেশে প্রতি বর্গফুট ১৩ থেকে ১৫ টাকা ও বকরির চামড়া ১০ থেকে ১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর খাসির চামড়া ১ থেকে ২০ টাকা ও বকরির চামড়া ১৩ থেকে ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
×