ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩০ মার্চ ২০২৪, ১৬ চৈত্র ১৪৩০

করোনা মোকাবেলায় যুবকদের সম্পৃক্ত করুন

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ২৮ জুলাই ২০২০

করোনা মোকাবেলায় যুবকদের সম্পৃক্ত করুন

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় যুবকদের জন্য স্থিতিশীল ও টেকসই ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ধারণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে তাদের সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সোমবার বিকেলে দুদিনব্যাপী ‘ঢাকা-ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০’ এর অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান। খবর বাসসর। বিশে^ করোনাভাইরাসে সোমবার সকাল পর্যন্ত ৬ লাখ ৫২ হাজার ৬০৪ জন মৃত্যুবরণ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা এই মহামারীর কবল থেকে মানবতার মৌলিক অস্তিত্ব রক্ষায় বিশ^ব্যাপী আরও সহযোগিতারও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে যুবকদের স্থিতিশীল ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ধারণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে নিজেদের সম্পৃক্ত করার সূবর্ণ সুযোগ রয়েছে। প্রাণবন্ত যুবকরা তা দেখাতে সক্ষম হবে বলে আমরা আশা করি।’ সেইসঙ্গে তিনি ‘সমতা ও সমৃদ্ধি : একটি স্থিতিশীল ভবিষ্যতের জন্য’ এই শিরোনামে দুদিনব্যাপী ‘রেসিলেন্ট যুব নেতৃত্ব শীর্ষ সম্মেলন’রও উদ্বোধন করেন। শেখ হাসিনা বলেন, এটা দেখা যাচ্ছে যে, প্রাকৃতিক পরিবেশের লালিত মানুষ এই মহামারীর সঙ্গে ভালভাবেই লড়াই করছে। তিনি বলেন, ‘তাই আমাদের অবশ্যই দৈনন্দিন জীবনে মৌলিক প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’ কোভিড-১৯ সঙ্কট জল¯্রােতধারা অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী মহামারী পরবর্তী ‘বৈশি^ক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা পুনর্গঠনের’ জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতি ‘বৈশি^ক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা পুনর্গঠনের’ ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক পরিবর্তন এভাবে হতে পারে- প্রথমত উদ্বেগের কারণে সুরক্ষাবাদের নামে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে আরও নিয়ন্ত্রণ, অভিবাসন ও ভিসা নীতিমালায় আরও কঠোর হতে পারে। তবে এটি মহামারী মোকাবেলার জন্য বৈশি^ক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরে। দ্বিতীয়ত এটা পরিষ্কার যে কোভিড-১৯ এর কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি ২০০৮-০৯ এর অর্থনৈতিক সঙ্কটকে ছাড়াবে। তবে নেটওয়ার্কযুক্ত অর্থায়ন ও সম্পদ সৃষ্টির নতুন মাত্রা যোগ করবে। তৃতীয়ত এরূপ অর্থনীতির ওপর এতবড় অভিঘাত গত কয়েক দশকেও দেখা যায়নি। শুধুমাত্র ১০ এপ্রিলের মধ্যে বিশ্বের সরকারগুলো বিশ^ব্যাপী ১০.৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি উদ্দীপনা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল। এটি আটটি মার্শাল প্লানের সমতুল্য। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী সর্বত্র সরকার, প্রাইভেট সেক্টর, আন্তর্জাতিক কমিউনিটি এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দের কাছে অস্বাভাবিক দাবি জানাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘একটি সঙ্কটের সময়ে কি ধরনের নেতৃত্ব প্রয়োজন তা পুনর্নির্ধারিত পরিকল্পনায় হয় না বরং এই প্রক্রিয়ায় জড়িত মানুষের আচরণ ও মানসিকতায় তা গড়ে ওঠে।’ শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ চূর্ণবিচূর্ণ মাত্রার রৌপ্য রেখা তুল্য ঠুনকো বাধাগুলো দূর করে কর্মক্ষেত্রে উদ্ভাবনের গতি ও মাত্রা যোগ করতে বাধ্য করছে। ‘এর বিকল্প হিসেবে আমরা অর্থনীতিতে শক্ত অবস্থান নিতে পারি এবং এই বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে সবধরনের বাধা মোকাবেলা করে আমরা উদ্ভাবনের জন্য নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণে নমনীয়তা ও গতিশীলতা আনতে পারি।’ তিনি আরও বলেন, প্রবাদবাক্য এই পরিস্থিতিকে ‘সোনার গড়’ হিসেবে নিতে পারি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জনসংখ্যা ব্যবসা ও কৃষিক্ষেত্রের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে ১২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘোষণা করেছে যা জিডিপির ৩.৭ শতাংশ। তিনি বলেন, খাদ্যে নিরাপত্তা অর্জন, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন উন্নতি ও লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ ও নারী ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।
×