ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফলে অনুমোদন বিহীন চলছে ৬ টি হাসপাতাল ও ১৮ ডায়াগনস্টিক সেন্টার

প্রকাশিত: ১৮:২২, ২৭ জুলাই ২০২০

বাউফলে অনুমোদন বিহীন চলছে ৬ টি হাসপাতাল ও ১৮ ডায়াগনস্টিক সেন্টার

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল ॥ বাউফলে ৬টি বেসরকারী হাসপাতাল ও ১৮টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কোন অনুমোদন নেই। অবৈধ ভাবে চলছে এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাউফল পৌর শহরে সেবা, নিউ হেলথ, কালাইয়া সাহেদা গফুর ইব্রাহিম, কালিশুরী স্লোব বাংলাদেশ, নিউ লাইফ ও মাজেদা নামের ৬টি হাসপাতাল এবং শহরের কথামনি, ইসেব, পলি, জাবির, কালাইয়া বন্দরে নুহা, কালিশুরী বন্দরে মেডিকেয়ার ও ফেয়ার মেডিকেল সার্ভিসেস এ্যান্ড ল্যাব, বগা বন্দরে আপন ও বগা ডায়াগনস্টিক, কাছিপাড়া বাজারে ল্যাব এশিয়া ও কাছিপাড়া ডায়াগনস্টিক, কনকদিয়া প্যাথলোজি, নওমালা নগরের হাট বাজারে গ্রামীন কল্যান ও নগরের হাট ডায়াগনস্টিক, সূর্যমনির নুরাইপুর, আদাবাড়িয়া নিউ কাশিপুর, তাসিম ও গ্রামীন কল্যান ডায়াগনস্টি সেন্টার থাকলেও এর একটিরও অনুমোদন নেই। হাসপাতালের মধ্যে সেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার এ্যান্ড ক্লিনিক, নিউ হেলথ ডায়াগনস্টিক এ্যান্ড ক্লিনিক এবং মাজেদা ডায়াগনস্টিক এ্যান্ড ক্লিনিকের রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করা হয়েছে। সায়েদা গফুর ও স্লোব বাংলাদেশ হাসপাতালের লাইসেন্স থাকলেও হালনাগাদ নাবায়ন নেই। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে একমাত্র পলি এক্সরে ও প্যাথলজি অনলাইনে আবেদন করলে বাকি ১৭টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কোন অনুমোদন নেই। এগুলো অবৈধ ভাবে চালানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বিধি অনুযায়ি বেসরকারী হাসপাতালের জন্য একজন সার্জন, তিন জন এমবিবিএস ও একজন এ্যানেসথেসিয়ার চিকিৎসক, বাংলাদেশ নার্সি কাউন্সিলের অনুমোদিত ৬ জন ডিপ্লোমা নার্স, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ড, পোস্ট অপরেটিভ রুম, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদফতরের পয়জন লাইসেন্স থাকার কথা থাকলেও ৬টি হাসপাতালের কোনটিতে তা নেই। সার্জন ছাড়াই সিজার করানো হয়। এ্যানেসথেসিয়ার জন্য চিকিৎসক আনা হয় ওয়ান কলে। সায়েদা গফুর ইব্রাহিম জেনারেল হাসপাতালে সিজার করনে সুব্রত কুমার। তিনি একজন ইউনাইনি ভেষজ অর্থাৎ অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ার (এমএমসি) চিকিৎসক। তার বিএমডিসির রেজিষ্ট্রেশন নেই। রোগীকে এ্যানেসথেসিয়া (অজ্ঞান করার) দেয়ার সনদ নেই। অথচ তিনি রোগীকে এ্যানেসথেসিয়া দিচ্ছেন, সিজারও করছেন। এ ব্যাপারে ডা. সুব্রত কুমার বলেন,‘ আমি সাহেদা-গফুর ইব্রাহিম জেনারেল হাসপাতালে চাকরী করিনা। সার্জারী করার জন্য আমার সকল কাগজপত্রই সঠিক আছে।’ বাউফল নিউ হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টি সেন্টার এ্যান্ড ক্লিনিকে সিজার করেন ডা. নুপুর আক্তার । তিনি কেবল এফসিপিএস পার্ট ওয়ান (গাইনী এ্যান্ড অবস) শেষ করেছেন। তার ডিজিও নেই। অথচ তিনি বিধি বর্হিভূত ভাবে ওই ক্লিনিকে সিজার করছেন। এ ছাড়াও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে একজন ল্যাব টেকনেশিয়ান, একজন এক্সরে টেকনেশিয়ান, একজন প্যাথলোজিস্ট, একজন রিপোর্ট প্রদানকারী চিকিৎসক ও একজন রেডিওগ্রাফার থাকার কথা থাকলেও তা নেই। এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে চলছে চরম নৈরাজ্য। কোন জবাব দিহিতা নেই। বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবাবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন,‘আমরা বাউফলের বেসরকারী হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টি সেন্টারগুলোর তালিকা তৈরি করেছি। অনুমদোন বিহীন হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে খুব শিগ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, ‘সাহেদা-গফুর ইব্রাহিম জেনারেল হাসপাতালের বিষয়ে আমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অবহিত করেছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ পটুয়াখালী জেলা সিভিল র্সাজন মো. জাহাঙ্গির আলম বলেন,‘বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসির) সনদ ছাড়া কোন ব্যক্তি নিজেকে এমবিবিএস চিকিৎসক দাবী করতে পারে না। সেখানে সার্জিক্যাল অপারেশন করা প্রশ্নই আসে না। অবৈধ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টি সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে শিগ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
×