ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইন্দো-নেপাল সীমান্তে নয়া উত্তেজনা

প্রকাশিত: ১৯:২৬, ২৭ জুলাই ২০২০

ইন্দো-নেপাল সীমান্তে নয়া উত্তেজনা

ফের ইন্দো-নেপাল উত্তেজনা শুরু হয়েছে। এবার ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যের ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এ অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করেছে নেপালীরা। শনিবার ভারতীয় কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। খবরে বলা হয়েছে, উত্তরাখন্ডের প্রায় ১০০-১৫০ মিটার একটি এলাকা নিজেদের দাবি করে তারা ভারতবিরোধী স্লোগান দেয়। রাজ্যের নকপুরের এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেছেন, ওই বিতর্কিত জায়গাটি কার এবং সীমান্ত নির্ধারণের জন্য ভারত ও নেপালের যৌথ দল গঠন করা হয়েছিল। এলাকায় জরিপ পরিচালনার কথা ছিল সেই দলের। তবে করোনাভাইরাস মহামারীর প্রকোপে সেই পরিকল্পনা স্থগিত হয়ে যায়। খবর হিন্দুস্থান টাইমস ও ওয়েবসাইটের। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার তার লাগানোর জন্য ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এ ১৫-১৮টি কাঠামো পুঁতে দেয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ভারতীয় কর্মকর্তারা। তবে নেপালের বাসিন্দারা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। ভারতবিরোধী স্লোগান শুরু করে। উত্তেজনা প্রশমনে পরে দুই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা বৈঠকে বসেন। তনকপুরের মহকুমা শাসক দয়ানন্দ সরস্বতী বলেন, কাঠামো লাগানোর খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) কর্মকর্তারা। খবর দেয়া হয় জেলা প্রশাসনকে। মহকুমা শাসক বলেন, ‘চম্পাবত জেলার তনকপুর ব্যারেজ এবং ৮১১ পিলারের কাছে কয়েকটি কাঠামো বানিয়ে নেপালের বাসিন্দারা নো ম্যানস ল্যান্ডে জবরদখল করেছে বলে দেখা যায় এবং নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে। ওই এলাকাটি নেপালের ব্রহ্মদেব এলাকার কাছে। যেখানে একটি ছোট বাজার রয়েছে। তবে নেপালের এসএসবি কমান্ড্যান্ট আর কে ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, কাঠামোগুলো স্থায়ী নয়। সেগুলো সাধারণ কংক্রিট এবং কাঠের। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সেগুলো তুলে নেয়া হবে। বৈঠকে উপস্থিত অপর এক এসএসবি কর্মকর্তা জানান, মুখে কাঠামো সরিয়ে নেয়ার কথা বললেও আদতে কোন কাজ করা হয়নি। শুক্রবারও নেপালের লোকজনদের পিলারের ওপর তার বসাতে দেখা গেছে। ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ থেকে কাঠামোর তুলে নেয়ার কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। চম্পাবতের পুলিশ সুপার লোকেশ্বর সিং জানিয়েছেন, শুক্রবার দুইপক্ষ আলোচনায় বসেনি। বিষয়টি আপাতত এসএসবির হাতে রয়েছে। কিন্তু আশ্বাস মতো কাঠামো সরানো না হলে দুই দেশের কর্মকর্তারা কথা বলবেন। অপরদিকে বিহারের ঝাড়োখাড় সীমান্তে শনিবার নেপালী সশস্ত্র বাহিনীর গুলিতে দুই ভারতীয় মারাত্মক জখম হয়েছে। আহতের মধ্যে একজন নারী রয়েছেন। এক প্রত্যক্ষ্যদর্শী বলেন, শনিবার বিনা উস্কানিতে নেপালের এপিএফ পুলিশ সীমা দেবী নামের এক ভারতীয় নারীকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়। প্রতিবাদ করলে সীমা দেবীর স্বামী রবীন্দ্র প্রসাদকে বেধড়ক মারধর করা হয়। ভারতের স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা রাম পুখর সিনহা বলেন, বিষয়টি গুরুতর। সীমা দেবী ও তার স্বামী রবীন্দ্র প্রসাদকে গুরুতর জখম করা হয়েছে। শনিবার বিকেল চারটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। ওই সময় সিমা দেবী ভারতীয় অংশে গরুর খাবার সংগ্রহ করছিলেন। হিন্দুস্থান টাইমসের এক প্রশ্নের জবাবে রবীন্দ্র প্রসাদ বলেন, আমার স্ত্রীর ওপর হামলার ঘটনা শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ করি। এরপর নেপালী বাহিনী আমার ওপর চড়াও হয়। আমাকে প্রচন্ড মারধর করে। অপর গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলে নেপালী জওয়ানরা তাদেরও জখম করে। অপরদিকে নেপালের স্থানীয় কর্মকর্তা গয়ান প্রকাশ ও অপর কর্মকর্তা সীমা শ্রাষ্ট্র দাবি করেন, ভারতীয়রা নেপালীদের ওপর বিনা উস্কানিতে চড়াও হয়। নেপালী বাহিনীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। এক পর্যায়ে এপিএফ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ বছর ভারতের লিপুলেখ গিরিপথ, লিম্পিয়াধুরা এবং কালাপানিকে নিজেদের দেশের অংশ হিসেবে দেখিয়ে নয়া মানচিত্র প্রকাশ করে নেপাল।
×