ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

টঙ্গীতে পোশাক কারখানা বন্ধের নোটিসে শ্রমিক বিক্ষোভ, ভাংচুর

প্রকাশিত: ০০:৪৬, ২৬ জুলাই ২০২০

টঙ্গীতে পোশাক কারখানা বন্ধের নোটিসে শ্রমিক বিক্ষোভ, ভাংচুর

নিজস্ব সংবাদদাতা, টঙ্গী, ২৫ জুলাই ॥ টঙ্গীর গাজীপুরায় শনিবার ভিয়েলাটেক্স গার্মেন্টসে ঈদে ১০ দিন ছুটির দাবির ঘটনা কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ৮ শ্রমিক আহত হয়েছেন। ভাংচুর, অরাজকতা ও ধর্মঘটের কারণে কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলন গাজীপুরার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ছড়িয়ে পড়লে মহাসড়ক খালি করতে পুলিশ একশনে গেলে এ সব ঘটনা ঘটে। শ্রমিকরা জানান, শনিবার কারখানার কাজে যোগ দিতে এসে দেখতে পান ঈদের ছুটি ১০ দিন না করে কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণার নোটিস গেটে ঝুলিয়ে দিয়েছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানায় বন্ধের নোটিস দেখে শ্রমিকরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। শ্রমিকরা কারখানা লগোয়া ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক বন্ধ করে রাস্তা অবরোধ করে চলাচলরত সব যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। মহাসড়কের দুই দিকে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। এ অবসহায় খালি করতে পুলিশ একশনে যায়। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি ছুড়ে। গাজীপুর শিল্প সহকারী পুলিশ জানান, আসন্ন ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে ১০ দিনের ছুটির জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি তুলে আন্দোলন শুরু করে। শ্রমিকদের ১০ দিনের ছুটির দাবি ৮ দিন করার ঘোষণা দেয়া হলেও গত ক’দিন ধরে কারখানার ভেতরে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। শ্রমিকদের ১০ দিনের ঈদের ছুটির দাবি না মেনে কারখানায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিস জারি করে। ফলে কারখানার আন্দোলন মহাসড়কে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ক্ষুব্ধ আন্দোলনরত শ্রমিকরা মহাসড়কের গাড়ি ভাংচুর ও ইটপাটকেল ছুড়ে কারখানার বিভিন্ন স্থাপনায় ভাংচুর চালায়। পুলিশ বাধা দিলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এ পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে এসব ঘটনা ঘটে। না’গঞ্জে ছাঁটাইকৃত শ্রমিক পুনর্বহাল দাবি স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহাল ও দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শনিবার দুপুরে চাষাঢ়ার বালুর মাঠ এলাকায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট, নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে অবস্থিত রহিম গ্রুপের (রহিম স্টিল মিলস) ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে এ মানববন্ধন পালন করা হয়। রি-রোলিং স্টিল মিলস্ শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি জামাল হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন রি-রোলিং স্টিল মিলস্ শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, রি-রোলিং স্টিল মিলস্ শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক এসএম কাদির, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল শাখার সভাপতি আমানুল্লাহ আমান, সহ-সভাপতি আনোয়ার খান প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে রহিম গ্রুপের শ্রমিকদের অর্জিত ছুটির টাকা মালিক কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে কেটে নেয়ায় শ্রমিকরা এর প্রতিবাদ জানালে মালিক প্রতিবাদকারী ১৩ শ্রমিকের নামে মিথ্যা মামলা দেয় ও ১৬ জনকে বেআইনীভাবে ছাঁটাই করে। গাজীপুরে ঈদ বোনাস দাবি স্টাফ রিপোর্টার গাজীপুর থেকে জানান, গাজীপুরে এক পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়াসহ দেড় শ’ ভাগ ঈদ বোনাস ও বাৎসরিক ছুটির টাকার দাবিতে শনিবার কর্মবিরতি, বিক্ষোভ ও ভাংচুর করেছে। এসময় শ্রমিকদের মারধরে কারখানার উপ-ব্যবস্থাপক আহত হয়েছেন। কারখানার উপ-ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের চান্দনা এলাকাস্থিত শফি টেক্স পোশাক কারখানার শ্রমিকদের কোন বকেয়া পাওনা নেই। তাদের সকল পাওনাদি নির্ধারিত সময়েই পরিশোধ করা হয়েছে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী গত ঈদ-উল-ফিতরের শতকরা ৫০ ভাগ বোনাস শ্রমিকদের পরিশোধ করা হয়েছে। অথচ শ্রমিকরা কয়েকদিন ধরে কর্তৃপক্ষের কাছে গত ঈদ-উল-ফিতরের অবশিষ্ট ৫০ ভাগ ও আসন্ন ঈদ-উল-আজহার শতভাগসহ মোট দেড় শ’ ভাগ ঈদ বোনাস এবং বাৎসরিক ছুটির টাকার দাবি অযৌক্তিভাবে জানিয়ে আসছিল। শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ আসন্ন ঈদ-উল-আজহার শতভাগ বোনাস ও বাৎসরিক ছুটির টাকা পরিশোধের আশ্বাস দেয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের ওই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে শ্রমিকরা। শিল্প পুলিশের এসআই সুব্রত দেব ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকালে কারখানায় কারখানায় এসে জড়ো হয়। তারা কারখানায় প্রবেশ করে মেইন গেট তালাবদ্ধ করে দেয়। এ সময় তারা দেড় শ’ ভাগ ঈদ বোনাস ও বাৎসরিক ছুটির টাকা পরিশোধের দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে এবং কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। একপর্যায়ে তারা কারখানার উপ-ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমানকে (৬৫) মারধর করে। এ সময় তারা কারখানার দরজা জানালার কাঁচসহ বিভিন্ন মালামাল ভাংচুর করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলেও গেট তালাবদ্ধ থাকায় ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। একপর্যায়ে পুলিশ কৌশলে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে এবং মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
×