ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মন পশুকে কোরবানির আহ্বান জানিয়েছি- মোল্লা জালাল

প্রকাশিত: ০০:০০, ২৬ জুলাই ২০২০

মন পশুকে কোরবানির আহ্বান জানিয়েছি- মোল্লা জালাল

ঈদ মানেই আনন্দ। এই আনন্দের অন্যতম অনুষঙ্গ গান। ঈদকে নিয়ে গীতিকারদের মধ্যে গান সৃষ্টির চেষ্টা অবিরত। সেই ধারাবাহিকতায় কোরবানির ঈদের জন্য নতুন গান লিখেছেন সাংবাদিক ও গীতিকবি মোল্লা জালাল। এ সম্পর্কে কথা হয় তার সঙ্গে। আপনার লেখা কোরবানির ঈদের গান সম্পর্কে বলুন মোল্লা জালাল: আমার লেখা গানের শিরোনাম ‘কোরবানি’। গানটির সুর করেছেন নাজির মাহমুদ, কণ্ঠ দিয়েছেন কাজী শুভ এবং সঙ্গীতায়োজন করেছেন মুশফিক লিটু। এর মিউজিক ভিডিওতে মডেল হয়েছেন শিল্পী নিজেই। গানটি আমার ঃৎরঃধষসঁংরপ ্ ফৎধসধ ইউটিউব চ্যানেলে রিলিজ হচ্ছে। ঈদের গান লেখার ইচ্ছা হলো কেন? মোল্লা জালাল: এর আগে রোজার ঈদেও আমার লেখা ও সুরে ইবরার টিপুর সঙ্গীতায়োজনে ‘ওই দেখ আকাশে খুশিতে চাঁদ হাসে’ কথায় একটি গান রিলিজ হয়। এতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন ইবরার টিপু, সাব্বির জামাল ও বিন্দুকনা। গানটি শ্রোতার কাছে ব্যাপক সাড়া জাগায়। ঈদ হচ্ছে একটা বৃহৎ উৎসব। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে এই উৎসবে সবাই একাকার হয়ে যায়। এতে সামাজিক সম্পর্কটা অনেক দৃঢ় হয়। কোরবানি হচ্ছে ¯্রষ্টার প্রতি আত্ম সমর্পণ। নিজের জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে যা কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি আল্লার কাছে নিবেদন করা। এতে পরিশুদ্ধ হওয়া যায়। যে কারণে আমার গানের বাণীর মধ্যে বলা আছে আত্মশুদ্ধির জন্যে ধরো মন পশুকে কোরবানি। মনের পশু হচ্ছে লোভ, লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, গ্লানি এসব। এই মন পশুকে কোরবানি করার আহ্বান আমি আমার গানের মধ্যে জানিয়েছি। নিজের ভোগের জন্য নয়, ¯্রাষ্টার সন্তুষ্টির জন্যে নিজেকে উৎসর্গ করাই হচ্ছে কোরবানি। এ জন্য আমি মনে করেছি যে কোরবানির বাণীটা মানুষের কাছে পৌঁছে যাক। আপনার লেখা অন্য গান সম্পর্কে কিছু বলেন মোল্লা জালাল: আমার কথা ও সুরে বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা দেশাত্মবোধক গান গেয়েছেন। আমার লেখা এবং আলাউদ্দিন আলী সুরে গান গেয়েছেন সামিনা চৌধুরী, সুজেয় শ্যামের সুরে সুবীর নন্দী, সেলিম আশরাফের সুরে কনক চাঁপা ও আলম আরা মিনু, নাজির মাহমুদের সুরে রফিকুল আলম, ডলি সায়ন্তনি, ফকির শাহাবুদ্দিন, বাপ্পা মজুমদারের সুর ও সঙ্গীতায়োজনে ফাহমিদা নবী এবং নিজের সুরে বেলাল খান গেয়েছেন। একজন ব্যস্ত সাংবাদিক হয়ে গান লেখার সময় কিভাবে পান? মোল্লা জালাল: যখন দিন তখন আমার সহকর্মীদের সমস্যা, সম্ভাবনা ও গণমাধ্যম পরিস্থিতি, দেশের আর্থসামাজিক রাষ্ট্রীয় অবস্থা এসবের মধ্যে ইনভলব থাকি। বাংলাদেশের সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠনের নেতা হিসেবে আমাকে এগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। যখন রাত হয়, আমি যখন একান্তই আমার হই, তখন আমার মধ্যে গানের এই ভাবনাগুলো জাগে। মানুষের কল্যাণের জন্যে, অগ্রগতির জন্যে, সম্পৃতির জন্যে আমার বিবেচনায় মনে যা যা ভাল আমি সেটা আমার গীত কথার মধ্যে দিয়ে, ছন্দের মধ্য দিয়ে তা প্রকাশ করি। সেটি গান হয়। আমাদের দেশে বর্তমান গানের প্রেক্ষাপট নিয়ে কিছু বলেন মোল্লা জালাল: সব মানুষের ভাব প্রকাশের ধরন, আচার-আচরণ, চাওয়া-পাওয়া এক রকমের না। বাঙালীর হাজার বছরের একটা সমৃদ্ধ সংস্কৃতি আছে। আমরা জাতিগতভাবে খুব আবেগপ্রবণ, বিরহ প্রবণ। বাঙালী এই বিরহে কাতর হয় না, এটাকে সুখ হিসেবে দরদ দিয়ে ধারণ করে। বাংলা গানের ঐতিহ্য হচ্ছে লোক সংস্কৃতি ও ভাবনা। মূলত এর ছন্দবদ্ধ রূপের নাম হচ্ছে গান। গানের ক্ষেত্রে আমাদের একটা মৌলিক অবস্থান আছে। কিন্তু ইদানিংকালে এই গানের যথার্থ চর্চার অভাবে, যতেœর অভাবে অবহেলায় রয়েছে। কথার মধ্যে গভীরতা নেই, সুরের মধ্যে কোন আবেদন নেই, মানবতা নেই। আমাদের কোরবানির গানটা খেয়াল করলে বোঝা যাবে এর মধ্যে ধর্ম আছে, ফিলসোফি আছে। বর্তমান প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যে গানের গভীরতা কম। -গৌতম পাণ্ডে
×