ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জাহাজ বিল্ডিং

কল্যাণপুরে জঙ্গী ডেরায় অপারেশনের চার বছর আজ

প্রকাশিত: ২৩:৩৪, ২৬ জুলাই ২০২০

কল্যাণপুরে জঙ্গী ডেরায় অপারেশনের চার বছর আজ

গাফফার খান চৌধুরী ॥ আজ ঢাকার কল্যাণপুরে জঙ্গী আস্তানায় অপারেশন চালানোর চার বছর পূর্ণ হলো। আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রহস্যঘেরা সেই জাহাজ বিল্ডিং। পুরো বাড়িটিতে জঙ্গীরা আস্তানা গড়ে তুলেছিল। মজুদ করেছিল ভারী অস্ত্র গোলাবারুদ। ইতোপূর্বে কোন জঙ্গী আস্তানায় একসঙ্গে নয় জঙ্গীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশের সঙ্গে জঙ্গীদের রাত আটটা থেকে টানা প্রায় দশ ঘণ্টা গোলাগুলি হয়েছিল। আহত হন এগারো জন পুলিশ সদস্য। আস্তানাটিতে নিহত হয় নয় জঙ্গী। এক জঙ্গী পালানোর সময় ধরা পড়ে। একজন পালিয়ে যায়। মোট এগারো জঙ্গীর মধ্যে দশজনই ছিল ছাত্র শিবিরের সদস্য। জামায়াত-শিবির পরিচালিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আস্তানাটির সার্বিক ব্যয়ভার বহন করত। আর শিবির পরিচালিত বিভিন্ন কোচিং সেন্টার থেকেই এগারো জনকে দলে ভিড়িয়ে আত্মঘাতী জঙ্গী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা, ১৭ বিদেশী ও তিন বাঙালীসহ ২২ জনকে হত্যার ঘটনার পর সারা দুনিয়ায় হৈ চৈ পড়ে যায়। তদন্তের এক পর্যায়ে কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের ৫৩ নম্বর জাহাজ বিল্ডিংয়ে জঙ্গী আস্তানার সন্ধান পাওয়া যায়। ওই বছরের ২৬ জুলাই রাত আটটার দিকে ছয় তলা বাড়িতে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি চলতে থাকে। বাড়ির মালিক বাড়িটির মালিক সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা হাজী আতাহার উদ্দিন আহমেদের পুরো পরিবার জামায়াতে ইসলামীর আদর্শে বিশ্বাসী। তার স্ত্রী মমতাজ বেগম বাড়িতে ঢুকতে পুলিশকে বাধা দেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ভেতর থেকে জঙ্গীরা একের পর এক গ্রেনেড ছুঁড়তে থাকে। নিরুপায় হয়ে পুলিশ গুলি চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশ টিকতে না পেরে দৌঁড়ে বেরিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক সকল জায়গায় খবর পাঠানো হয়। পুরো বাড়ি ঘেরা করে রাখা হয়। রাত দশটার দিকে শুরু হয় সম্মিলিত সাঁড়াশি অভিযান। একের পর এক গ্রেনেড হামলায় পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠতে থাকে। বাড়ির চারদিকে ভিড় করে হাজার হাজার মানুষ। পরে লোকজনদের সরিয়ে দিয়ে চূড়ান্ত অপারেশন শুরু করা হয় রাত একটার দিকে। ভোর পর্যন্ত জঙ্গীদের সঙ্গে গোলাগুলি চলতে থাকে। এরপর কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করা হয়। চারদিক থেকে বাইনোকুলার ও ¯œাইপার রাইফেল দিয়ে বাড়ির ভেতরে দেখার চেষ্টা করা হয়। যাতে জঙ্গীরা ওঁৎ না থেকে আবার হামলার ঘটনা ঘটাতে পারে।
×