ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

অনুস্বরের বর্ষপূর্তিতে লাভজনক থিয়েটারবিষয়ক আলোচনা

প্রকাশিত: ২৩:১০, ২৬ জুলাই ২০২০

অনুস্বরের বর্ষপূর্তিতে লাভজনক থিয়েটারবিষয়ক আলোচনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মঞ্চনাটক মানেই যেন অলাভজনক এক শিল্পচর্চা। যুগের পর যুগ ধরে চলছে সেই ধারাবাহিকতা। কোন অর্থপ্রাপ্তি ছাড়াই শুধু থিয়েটারকর্মীদের শ্রম ও ভালবাসায় টিকে আছে শিল্প মাধ্যমটি। এমন বাস্তবতায় থিয়েটার চর্চাকে একটি লাভজনক শিল্প হিসেবে গড়ে তোলার কৌশল নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো সংলাপ। প্রতিষ্ঠার এক বছরপূর্তি উপলক্ষে এ বিষয়ে আলোচনার আয়োজন করে নাট্যদল অনুস্বর। শনিবার রাতে ‘আমাদের লাভজনক থিয়েটার : চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয় দলটির ফেসবুক পেজে। আলোচনায় অংশ নেন নাট্যকার মাসুম রেজা এবং শিক্ষক ও নির্দেশক ইউসুফ হাসান অর্ক। সংলাপ পর্বের সঞ্চালনা করেন অনুস্বরের দলপ্রধান মোহাম্মদ বারী। আলোচনায় মাসুম রেজা বলেন, প্রায় পাঁচ দশক ধরে এদেশে থিয়েটার চর্চা হলেও এখন পর্যন্ত এই শিল্পে গড়ে ওঠেনি পেশাদারিত্ব। এর নেপথ্যে রয়েছে শিল্প মাধ্যমটি বিষয়ে উপযুক্ত প্রচারের অভাব। প্রচারের অভাবে অনেক মানুষ হয়ত জানেই না যে, প্রতিদিন রাজনধানীর কয়েকটি মঞ্চে নাটকের প্রদর্শনী হয়। অথচ এই শহরে প্রায় দুই কোটি মানুষ বাস করে। আর একটি মঞ্চনাটকের প্রদর্শনীতে তিন থেকে চার শ’ দর্শক হলেই শো পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। কিন্তু এই স্বল্পসংখ্যক দর্শকও আমরা মঞ্চে নিয়ে আসতে পারছি না। প্রতিটি প্রদর্শনীতে পরিপূর্ণ দর্শক হলে অনেকটাই স্বনির্ভর হতে পারত মঞ্চনাটক। সেক্ষেত্রে দলগুলো অন্তত প্রদর্শনীর অর্থ দিয়েই চলতে পারত। আমাদের এখানে মূলত প্রচারের সীমাবদ্ধতায় ধুঁকছে থিয়েটার। অনেকেরই নাটক দেখার ইচ্ছা থাকলেও কোথায়-কবে প্রদর্শনী হবে, সে বিষয়ে কিছুই জানে না। অথচ বাইরের অনেক দেশেই মানুষ দুই বছর আগে থেকে টিকেট কেটে রাখে। লাভজনক থিয়েটার মানে বাণিজ্যিক থিয়েটার নয়, নিজস্ব অর্থায়নের শক্তিতে গড়ে ওঠা থিয়েটার। থিয়েটারের নিজস্ব শক্তিতে চলতে পারার সক্ষমতাই এখানে মূল বিষয়। সেক্ষেত্রে নাট্য চর্চাকেও একটি স্ট্যান্ডার্ডে নিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি মঞ্চনাটক মানসম্পন্ন হতে হবে। দর্শকের মনন ও রুচিকে স্পর্শ করার মতো উপকরণ থাকতে হবে প্রযোজনায়। একটা নাটকের মধ্যে ম্যাচিউরিটির জায়গা থাকতে হবে। একটি বা দুটি দল যখন ভাল নাটকের মাধ্যমে দর্শক টানবে তখন অন্যরাও ভাল করবে। কারণ, দর্শকই হচ্ছে থিয়েটারের মূল পৃষ্ঠপোষক। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় মানবিক সমাজ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে গত বছরের ২৫ জুলাই যাত্রা শুরু করে নাট্যদল অনুস্বর। এরই মধ্যে দলটি একটি মঞ্চ ও একটি পথনাটক উপহার দিয়েছে। করোনার লকডাউনের আগ পর্যন্ত নাটক মঞ্চায়নে সক্রিয় ছিল অনুস্বর। এর বাইরে ‘বিকেন্দ্রী অভিমুখে নাট্য যাত্রা’ শিরোনামে কর্মসূচী গ্রহণ করে অনুস্বর। যার অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের থিয়েটার ইনস্টিটিউটে নাট্যোৎসব আয়োজন করে। দলের কর্মীদের জন্য কর্মশালাও করছে নিয়মিত। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতেও থেমে নেই অনুস্বর। অনলাইনে চলছে নতুন নাটকের মহড়া। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মঞ্চে আসবে ‘মূল্য অমূল্য’ নামের নতুন নাটক।
×