ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় আরও ৩৮ জনের মৃত্যু

নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়াল

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ২৬ জুলাই ২০২০

নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়াল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে করোনায় মোট পরীক্ষিত নমুনার সংখ্যা এগারো লাখ ছাড়াল। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৩৮ জনের মৃত্যু এবং শনাক্ত হয়েছেন নতুন ২৫২০ জন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৮৭৪ এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২ লাখ ২১ হাজার ১৭৮ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ১১১৪ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ১ লাখ ২২ হাজার ৯০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ৪৪৬টিসহ এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১১ লাখ ১ হাজার ৪৮০টি। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ১২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৫ দশমিক ২০ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৩০ শতাংশ। সারাদেশে বর্তমানে প্রায় ১১ হাজার করোনা রোগীর সাধারণ বেড এবং ২৫০টি আইসিইউ খালি রয়েছে। শনিবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৮ জনের মধ্যে মধ্যে ২৯ জন পুরুষ এবং ৯ জন নারী। তাদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১০০ বছরের ওপরে একজন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৮ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৬ জন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ জন, রংপুর বিভাগে একজন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ৮ জন, সিলেট বিভাগে একজন এবং খুলনা বিভাগে ৪ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৩৪ জন, বাসায় ৩ জন এবং মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে একজনকে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৬৪৯ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৯ হাজার ২০২ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৪১৭ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ২৭ হাজার ৩৫৭ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৪৬ হাজার ৫৫৯ জনকে। প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন মিলে ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে এক হাজার ৭০৯ জনকে। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ৪ লাখ ২৩ হাজার ৪৬১ জনকে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন এক হাজার ৭৮৯ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৩ লাখ ৬৪ হাজার ১১ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫৯ হাজার ৪৫০ জন। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, সারাদেশে করোনা রোগীদের জন্য সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৫ হাজার ১৮২টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪৩০২ জন এবং খালি ১০ হাজার ৮৮০টি শয্যা। এর মধ্যে ঢাকা শহরের হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭০০৪টি, ভর্তি রোগী ২১৬০ জন এবং শয্যা খালি আছে ৪৮৪৪টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ৭৬২টি, ভর্তিকৃত রোগী ৩৩১ জন এবং খালি রয়েছে ৪৩১টি শয্যা। দেশের অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ৭৪১৬টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৮১১ জন এবং খালি রয়েছে ৫৬০৫টি শয্যা। অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, এ পর্যন্ত যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১৮ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩০ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৮২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৯৪ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪০৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৮৩৭ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী ১৩০৬ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১৩৮৯জন, যা ৪৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ; চট্টগ্রাম বিভাগে ৭১১ জন, যা ২৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ; রাজশাহী বিভাগে ১৬৭ জন, যা ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ; খুলনা বিভাগে ১৯৮ জন, যা ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ; বরিশাল বিভাগে ১০৯ জন, যা ৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ; সিলেট বিভাগে ১৩৪ জন, যা ৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ; রংপুর বিভাগে ১০৫ জন, যা ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬১ জন, যা ২ দশমিক ১২ শতাংশ। নাসিমা সুলতানা জানান, ঢাকা মহানগরীতে আইসিইউ শয্যা ২৮১টি, ভর্তি আছেন ১৭১ জন, খালি আছে ১১০টি শয্যা। চট্টগ্রাম মহানগরীতে আইসিইউ শয্যা ৩৯টি, ভর্তি আছেন ২২ জন, খালি আছে ১৭টি। দেশের অন্যান্য হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা ২১৩টি, ভর্তিকৃত রোগী ৯০ জন এবং খালি রয়েছে ১২৩টি। এভাবে দেশে মোট আইসিইউ শয্যা রয়েছে ৫৩৩টি, ভর্তিকৃত রোগী ২৮৩ জন এবং খালি রয়েছে ২৫০টি আইসিইউ শয্যা। দেশে মোট অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে ১২ হাজার ৩২৬টি, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা রয়েছে ৩০৫টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর রয়েছে ১১২টি। নমুনা সংগ্রহ কম হচ্ছে স্বীকার করে লক্ষণ কিংবা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে নমুনা পরীক্ষার আহ্বান জানিয়ে ডাঃ নাসিমা সুলতানা বলেন, পরীক্ষাগারগুলোতে নমুনার সংখ্যা অনেক কম আসছে, নমুনা সংগ্রহ কম হচ্ছে। আপনাদের যাদের কোন রকম লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে অথবা আপনারা কোন আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে তবে অবশ্যই নমুনা পরীক্ষা করাবেন। আমাদের নমুনা সংগ্রহের জন্য প্রত্যেক উপজেলা, শহর সব জায়গায় নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা আছে। আপনারা নমুনা দিতে আসুন এবং নমুনা পরীক্ষা করে এই রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করুন।
×