ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা : অধিদপ্তরের সামগ্রিক আচরণে জনগণ হতাশ ও ক্ষুব্ধ

প্রকাশিত: ২১:১৪, ২৫ জুলাই ২০২০

করোনা : অধিদপ্তরের সামগ্রিক আচরণে জনগণ হতাশ ও ক্ষুব্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতা দূর করে সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই নীতি বাস্তবায়নে অবিলম্বে এ খাতে কাঠামোগত পরিবর্তন আনার দাবি জানিয়েছে ১৪ দলের অন্যতম শরিক মিত্র ওয়ার্কার্স পার্টি। শনিবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভা থেকে এ দাবি জানানো হয়। করোনা ভাইরাসের হাত থেকে সুরক্ষা পেতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি তথা নিয়মিত হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক পরিধানের জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ঐ স্বাস্থ্যবিধি কঠোর অনুসরণে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার কর্মসূচী গ্রহণ করেছে দলটি। পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত এক প্রস্তাবে বলা হয়, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামগ্রিক আচরণে জনগণ হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তারা এই দুর্যোগ মুহূর্তে কোনভাবেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখতে পারছেনা। জনগণকে তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মধ্য দিয়ে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নিজেদের ও পরিপার্শ্বজনের সুরক্ষার দায়িত্ব নিজেদেরই তুলে নিতে হবে। প্রস্তাবে বলা হয়, করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার এখন প্রায় একই জায়গায় ওঠানামা করলেও দেশ ঐ সংক্রমণের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে তা বলা যাবে না। বরং ঈদকে কেন্দ্র করে এর বিস্ফোরণ ঘটার সম্ভাবনাই বেশি। অন্যদিকে করোনা ভ্যাকসিন আবিস্কারে সহযোগিতার ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষযেভাবে গয়ংগচ্ছ চালে চলছে তাতে পৃথিবীতে ঐ ভ্যাকসিন আবিস্কৃত হলেও বাংলাদেশের মানুষের তা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। ঐ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে যোগাযোগ করা, বিশেষ করে চীন কর্তৃক উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ে ট্রায়ালে অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে গড়িমসি এর প্রমাণ। অথচ ব্রাজিল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের দেশে এই কার্যক্রম শুরু করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রীর করোনা সংক্রমণ রোধে ভাল নম্বর পাওয়ার আত্মতৃপ্তিমূলক বক্তব্য বালখিল্যতা আখ্যা দিয়ে বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, উনি সম্ভবত নিজেই নিজেকে নম্বর দিচ্ছেন। দেশে করোনা মৃত্যুহারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মৃত্যু হারের তুলনাও কতখানি নির্বোধের আনন্দ দক্ষিন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মৃত্যুহার তার প্রমাণ। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সামগ্রিক দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতার সমালোচনার মুখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদত্যাগকে ইতিবাচক আখ্যা দিয়ে বলা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ যদি ওসবের নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে সরে যেতেন তা’হলেও দেশবাসী মনে করত যে এদের সবার বোধোদয় হয়েছে। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে বন্যা পরিস্থিতিতে জনজীবনে দুর্ভোগে দুঃখ প্রকাশ করে বলা হয়, এখানেও বাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে চুরি, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা এই বন্যা পরিস্থিতিকে আরও সংকটপূর্ণ করেছে। প্রস্তাবে বন্যাত্তর পুনর্বাসনে সর্বোত উদ্যোগ নেয়ার আহ্ববান জানান হয়। ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভা সংবিধান ও প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত নীতির বিপরীতে গিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলসমূহ বন্ধ করে দেয়া, পাট পণ্যবাজার অন্যের হাতে তুলে দেয়া, পাটকলের জমি ও সম্পদ লুটপাটকে আনুষ্ঠানিকতার শামিল বলে উলেøখ করা হয় এবং অবিলম্বে ঐ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে রাষ্ট্রায়ত্ব খাতে পাটকল আধুনিকরণের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান হয়। স্বাস্থ্যখাত ও পাটখাত নিয়ে ১৪ দলের আলোচনা ও সরকারকে সে বিষয়ে অবহিত করতে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র ও সংশিøষ্ট দলসমূহের প্রতি আহŸান জানান। পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে সভায় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা রাজনৈতিক রিপোর্ট করেন। আলোচনায় অংশ নেন, কামরূল আহসান, নুর আহমদ বকুল, তপন দত্ত চৌধুরী, আনিসুর রহমান মলিøক, ড. সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হক্কানী, হাজী বশিরুল আলম, জ্যোতি শংকর ঝন্টু, নজরুল ইসলাম, লিয়াকত আলী লিকু, নজরুল ইসলাম, আবু হানিফ প্রমুখ।
×