ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কুড়িগ্রামে দুর্বিসহ দিন কাটছে বানভাসীদের

প্রকাশিত: ১৭:৫৯, ২৫ জুলাই ২০২০

কুড়িগ্রামে দুর্বিসহ দিন কাটছে বানভাসীদের

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরির্বতিত রয়েছে। ধরলা,তিস্তা,ব্রক্ষপুত্র,দুধকুমোর সহ ১৬টি নদ-নদীর পানি ধীর গতিতে কমলেও প্রতিটি নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার ধরলা নদীর পানি বিপদ সীমার ৬৫ সেঃ মিঃ ও ব্রক্ষপুত্রনদের পানি ৭৭ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রৌমারী উপজেলায় বন্যায় শহর রক্ষার বাঁধের জলিলের বাড়ি নামকস্থানে ভেঙ্গে গেছে। রাজীবপুরের কোদালকাটি নামক দুটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া খনজনমারা বেঁড়িবাঁধের তিনটি,ঝগড়ারচর বেঁড়িবাঁধের দুইটি, সাহেবের আলগা বেঁড়িবাঁধের দুটি স্থানে বন্যায় ভেঙ্গে গেছে। দীর্ঘ এক মাস ধরে জেলার ৬৫টি ইউনিয়নে ৪০৫টি চর-দ্বীপ চরের প্রায় সাড়ে ৬শতাধিক গ্রামে সাড়ে ৪ লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দী মানুষ চরম কষ্টে দিন কাটােেচ্ছ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন চরাঞ্চলের কর্মজীবি মানুষেরা। বন্যা আর বৃষ্টির ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এ অঞ্চলের বানভাসীদের। মাঠের ফসল, বাড়ির চারপাশের সবজি বাগানসহ বীজধান নষ্ট হয়ে গেছে। প্রয়োজনীয় ত্রান সহায়তা না মেলায় খেয়ে না খেয়ে দিন পাড় করছেন তারা। জেলার ৯ উপজেলায় প্রায় ৪০ হাজার নলকুপ তলিয়ে থাকায় মিলছে না বিশুদ্ধ খাবার পানি। পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এসব এলাকার বন্যা দুর্গতরা। এস ব মানুষের পেটের পীড়া ও জ¦র দেখা দিয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন অফিস সুত্রে জানা গেছে বন্যা কবলিত এলাকায় ৮৫টি মেডিকেল টিম কাজ করলেও দুর্গত এলাকায় এদের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য ঝুকি বাড়ছে বন্যা দুর্গত এলাকার শিশুদের। পাঁচগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন মাস্টার জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী। ত্রাণ পাইছি মাত্র সাড়ে ৩শ’। শুকনো খাবার পাই না। ভিজিএফ পাইছি ৭ হাজার মানুষের। বানভাসিদের জন্য যে ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা অপ্রতুল। তিনি আরো জানালেন, বন্যার সময় অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চায় না। কষ্ট করে হলেও তারা বাড়িতে থাকার চেষ্টা করে। কেউ কেউ বাড়ির আশে পাশে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। রৌমারীর ফলুয়ারচর গ্রামের ওসমান আলী, জাইদুল ইসলাম, ছবুর মিয়া,আতাউর মিয়া বলেন, প্রায় ১ মাস থেকে বন্যায় আমাদের ঘর বাড়ি তলিয়ে গেছে গরু বাছুর সন্তানদের নিয়া আমরা রাস্তার উপর আশ্রয় নিয়েছি। চরম খাবার কষ্ট শুরু হয়েছে বন্যা কবলিত প্রতিটি গ্রামে।উপজেলা হির্বাহী অফিসার মো.আল ইমরান বলেন,পানি বন্দি পরিবারের মধ্যে জিআর চাউল,শুকনা খাবার বিতারণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। উপজেলার সকল বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় উপজেলা সদরসহ বাঁধের ভেতর ও বাহিরে বসবাসকারী প্রায় সকলেই বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বন্যা দুর্গত সহ জেলার ৯টি উপজেলায় ৪ লাখ ২৮ হাজার ৫শ ২৫ পরিবারকে ভিজি এফ এর চাল দেয়া হচ্ছে পর্যায ক্রমে। ইতিমধ্যে ১শত ৯২ মেঃ টঃ চাল ৬ হাজার শুকনো খাবার ২লাখ টাকার শিশু খাদ্য ও ৪ লাখ টাকার গো খাদ্য ও ৮ হাজার শুকনো খাবার বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায় ক্রমে বিতরণ করা হয়েছে বন্যার্তদের মাঝে।
×