ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে পশু বিক্রি

প্রকাশিত: ২০:২৫, ২৫ জুলাই ২০২০

নীলফামারীতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে পশু বিক্রি

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে জেলার ২৫টি কোরবানির পশুর হাটে কেনাবেচার ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন ও উপজেলাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুক্রবার সরেজমিনে নীলফামারীর ঢেলাপীর, বসুনিয়া, জেলা শহরের বৃহৎ হাট, মিরগঞ্জ, বোড়াগাড়ী, ডিমলার বাবুরহাট, ভবানীগঞ্জের হাট, উপজেলা পর্যায়ের বৃহৎ হাটগুলো কোরবানির গরু-ছাগলে ভরে গেছে। ব্যাপকহারে বিক্রি না হলেও মাঝামাঝিভাবে কেনাবেচা চলছে। খামারি বা গরু ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার গরু নিয়ে ঢাকা বা চট্টগ্রামে যাওয়ার কথা কেউ ভাবছেন না। গরু ব্যবসায়ী রমজান আলী বললেন, নিরাশ হচ্ছি না। এখনও হাতে সময় আছে। স্থানীয় হাটবাজার ও অনলাইনে কোরবানির পশু তারা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। কোরবানির পশুর দাম কম বা বেশি এটি নিয়ে কেউ ভাবছে না। কারণ লোকসান না হলেও হয়ত লাভ কমে হবে। হয়ত শেষ মুহূর্তে সকল দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যাবে। ক্রেতা বাড়বে- বিক্রি হবে চাহিদা মতো গরু-ছাগল। তবে এর মাঝেও বিভিন্ন হাটবাজারে ৪৪ হাজার কোরবানির পশু বিকিকিনি হয়েছে। এখনও সাতদিন বাকি। বিক্রি বাড়ছে এবং বাড়বে। জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগ, সেনাবাহিনীসহ আমরা নীলফামারীর বিভিন্ন পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি সব থেকে প্রাধান্য দিয়েছি। কোন রোগাক্রান্ত পশুকে হাটে তুলতে দেয়া হয় না। এছাড়া কোরবানির ঈদ ঘিরে পশুর হাটে ভিড় সামলাতে এখন সপ্তাহের দুটি করে হাটের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিদিন কোরবানির হাট চালু করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার পথ পৃথক করা হয়েছে। গরুর হাটে সারিবদ্ধতা (লাইন) করা হয়েছে সামাজিক দূরত্ব রেখে। নীলফামারী পুলিশ সুপার মোখলেছুর রহমান জানালেন, ক্রেতা-বিক্রেতারা যাতে নিরাপদে পশু কেনাবেচা করতে পারেন সেজন্য সব ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রতিটি পশুর হাটে মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধাসহ জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন রাখা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তৎপর রয়েছে। রাজশাহীতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী থেকে জানান, আর কদিন পরেই ঈদ-উল-আজহা। ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর এই ঈদ উদ্যাপনের প্রধান লক্ষ্য কোরবানি। ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ সাধ ও সাধ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করবেন। ইতোমধ্যে জমে উঠতে শুরু করেছে রাজশাহী অঞ্চলের পশুহাট। হাটগুলোয় মানুষ ও কোরবানির পশুতে একাকার পরিস্থিতি এখন। চলমান করোনার কারণে কোরবানির ব্যাপারে এখনও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ সিদ্ধান্তহীতায় ভুগছেন। এরই মধ্যে হাটে পর্যাপ্ত পশু উঠলেও ক্রেতা নেই তেমন! করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে পশুহাটে যাচ্ছেন না অনেকে। আবার শেষ সময়ে এসেও অনেকে ঈদের দিন কাদের দিয়ে কোরাবানির কাজ করাবেন সেই ভাবনায় সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। আর বড় একটি অংশ প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও শুধু অর্থাভাবেই কোরবানির পশু কিনতে হাটে যেতে পারছেন না। এছাড়া প্রস্তুতির অনেক কথা বলা হলেও কোরবানির হাটে ন্যূনতম কোন স্বাস্থ্যবিধি নেই। সব মিলিয়ে কোরবানির পশুর হাটে পর্যাপ্ত গরু থাকলেও এখনও ক্রেতা নেই। গরু ছাগলের সঙ্গে মানুষ (বিক্রেতা) একাকার হলেও ক্রেতার উপস্থিতি তেমন পরিলক্ষিত হয়নি শুক্রবার রাজশাহীর সবচেয়ে বড় পশুহাটে। উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় পশুর হাট ‘রাজশাহী সিটি হাট’। প্রতিবছর এমন সময় পশুহাটের কেনাবেচা জমজমাট হয়ে ওঠে। কিন্তু এবার ঈদের মাত্র এক সপ্তাহ সময় থাকলেও ব্যস্ততার লেশমাত্র নেই। এখন কোরবানির পশুতে চারিদিক গমগম করলেও জমেনি রাজশাহী সিটি হাটের কেনাবেচা। ঢিলেঢালাভাবেই চলছে কোরবানির পশুর দর-দাম। কেনাবেচার এ অবস্থা থাকলে কোরাবনির জন্য তৈরি গরু হাট থেকে ফিরিয়েই নিয়ে যেতে হবে। আর শেষমেশ পথে বসতে হবে স্থানীয় অনেক খামারিকে। এমন আশঙ্কাই ভর করেছে তাদের মাথায়। সিটি হাটে আসা পবা উপজেলার পারিলার গ্রামের খামারি মাসুদ রানা বলেন, প্রথম দিকে হাটে গরু কম উঠছিল। কিন্তু ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসছে হাটে গরুর সরবরাহ ততই বাড়ছে। তার মতো অনেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরু নিয়ে আসছেন হাটে। কিন্তু দিন শেষে আবারও ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে। প্রতিদিন কিছু মানুষ হাটে এলেও দর-দাম করেই চলে যাচ্ছেন। এতে কেনাবেচা হচ্ছে খুবই কম। আর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসায়ীরা রাজশাহীর এই সিটি হাট থেকেই পাইকারি দরে কোরবানির পশু কিনে ট্রাকে করে নিয়ে যান। কিন্তু করোনা পরিস্থতিতে এবার তাদের আনাগোনা নেই। ফলে শেষ সময়ে কেনাবেচা না জমে ওঠায় সবদিক থেকেই লোকসানে পড়তে যাচ্ছেন স্থানীয় গরুর খামারি ও ব্যবসায়ীরা। হাটের এই চিত্র বহাল থাকলে তার মতো অনেক খামারিকেই এবার পথে বসতে হবে বলেও জানান মাসুদ রানা। রাজশাহীর পুঠিয়ার ভাল্লুকগাছি ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের হোসেন আলী নামের এক খামারি জানান, পরিবহনে করে গরুর নিয়ে আসা, হাটে তোলা, খাওয়ানো ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলা- এই পুরো সময়ে তাদের হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়। এ সময় নাকে-মুখে মাস্ক পরে থাকা তাদের জন্য কষ্টসাধ্য। যে কারণে হাটে আসা অধিকাংশ ব্যবসায়ী ও খামারিই নাকে-মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে পারছেন না।
×