ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বছর শেষে ঘুুরে দাঁড়াবে অর্থনীতি ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৩:০২, ২৪ জুলাই ২০২০

বছর শেষে ঘুুরে দাঁড়াবে অর্থনীতি ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত। রফতানিসহ নানা খাতে তীব্র প্রভাব পড়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন চলতি বছরের মধ্যেই করোনা সঙ্কটের অবসান হবে এবং আগামী বছরের শুরুতেই দেশের অর্থনীতি ভালভাবে ঘুরে দাঁড়াবে। বৃহস্পতিবার যৌথভাবে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম এবং রিসার্চ এ্যান্ড পলিসি ইনটিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‌্যাপিড) আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ এ্যান্ড বাংলাদেশ ইকোনমি’ শীর্ষক ভার্চুয়াল কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মশালায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র‌্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক। বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের গেস্ট অব অনার বিল্ডের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম খান ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি সামস মাহমুদ। অনুষ্ঠানে দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও র‌্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ড. মোঃ আবু ইউসুফ বক্তব্য রাখেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিল। বাংলাদেশ যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। কোভিড-১৯ শেষ হওয়ার পর আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াব, আমরা সেটা পারব। সামনে আমাদের জন্য শুভদিন অপেক্ষা করছে। কোভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্ববাণিজ্যের সুযোগ কাজে লাগানোর সময় এসেছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, করোনায় পরিবর্তিত এবং প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে অনেক কিছু হবে। চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। জাপান চীন থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। নিজেদের সক্ষমতা ও যোগ্যতা দিয়ে বিশ্ববাণিজ্যে জায়গা করে নেয়ার সময় এসেছে। সময় নষ্ট না করে দ্রুত এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এবং পরবর্তী সময়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্ব একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এ টাস্ক ফোর্স কাজ করে যাচ্ছে। আগামী এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম এফটিএ স্বাক্ষর করবে ভুটানের সঙ্গে। এরপর পর্যায়ক্রমে ৪২ দেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর করব। ইন্দোনেশিয়াসহ ১১ দেশের সঙ্গে আলোচনা অনেক এগিয়ে গেছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। রফতানি বাজারে শুধু তৈরি পোশাকের উপর নির্ভর করে থাকলে আমাদের চলবে না। দেশের আইটি, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, সিরামিক, বৈদ্যুতিক সামগ্রী রফতানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে, সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অতিসম্প্রতি এক্সপোর্ট কম্পেটেটিভনেস ফর জবস ইসিফোরজে প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের মিরসরাই ইকোনমিক জোনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে বেজার ১০ একর জমির ওপর এবং গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে ৫ একর জমির উপর দুটি টেকনোলজি সেন্টার গড়ে তোলার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ টেকনোলজি সেন্টারে আধুনিক ডিজাইন ও প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা সম্ভব হবে। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তিনি আরও বলেন, আশা করা যায় এ বছরের শেষে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সুযোগ আসতে পারে। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশ সরকার সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে। র‌্যাপিড চেয়ারম্যান ড. আবদুর রাজ্জাক জানান, করোনার কারণে বিশ্ববাণিজ্য ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। পণ্য আমদানিতে অনেক দেশ রক্ষণশীল অবস্থান নিতে পারে। এছাড়া করোনা পরবর্তীকালে অনেকদিন পর্যন্ত পর্যটন বা মানুষের চলাচল সীমিত থাকতে পারে। তাতে তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্যসহ অনেক পণ্যের চাহিদা কমে যেতে পারে। এমন অবস্থায় রফতানির প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে নানামুখী উদ্যোগ নিতে হবে।
×