ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উত্তর প্রদেশ ও বিহারের পানি নেমে আসছে দ্রুত

গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকায় ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বন্যা

প্রকাশিত: ২২:৫২, ২৪ জুলাই ২০২০

গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকায় ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বন্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকায় অশনি সঙ্কেত বয়ে আনছে বন্যা পরিস্থিতি। এক সপ্তাহের মধ্যে উত্তর প্রদেশ ও বিহারের বন্যার পানি দ্রুতগতিতে নেমে আসছে। ফলে এই নদীর অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতিও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন এক সময় পদ্মার উজান থেকে পানি আসছে যখন সহজেই পানি সাগরে নেমে যেতে পারবে না। কারণ এই মাসের শেষ নাগাদ সাগরে নি¤œœচাপ দেখা দিতে পারে। ফলে সাগরের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকবে। পানি নামতেও দেরি হবে। এছাড়া এই সময়ে নি¤œœচাপের কারণে প্রচুর বৃষ্টিপাত হতে পারে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। এর বিস্তৃতিও ঘটবে অনেক বেশি এলাকায়। টানা ২৮ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল যখন বন্যায় ভাসছে ঠিক তখনি উজানে গঙ্গা পদ্মা অববাহিকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিপাতে ভারতের উত্তর প্রদেশ ও বিহার রাজ্য এখন বন্যায় ভাসছে। ভারতের এই রাজ্যে নদ নদীগুলোতে এখন দ্বিগুণ তিনগুণের বেশি পানি জমা হয়েছে। সেই পানি এখন নেমে আসার অপেক্ষায় রয়েছে। উজানের এই পানি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পদ্মা নদীতে জমা হবে। তখন পদ্মা অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। এতদিন দেশে বন্যা পরিস্থিতির একটানা অবনতি ঘটছে। মূলত উজান থেকে নেমে আসার পানিতে যমুনা এবং আপার মেঘনা অববাহিকার মধ্যে এই বন্যা পরিস্থিতি সীমিত রয়েছে। এই পানি ভাটিতে নেমে এসেও দেশের মধ্যাঞ্চলে এমনকি ঢাকাও বন্যার প্রকোপে পড়েছে। গত ২৬ জুন থেকে দেশে বন্যা শুরু হলেও এখন পর্যন্ত তা উত্তরাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। পদ্মা অববাহিকায় এখনও বড় ধরনের বন্যার কবলে পড়েনি। কিন্তু উত্তর প্রদেশ ও বিহারের পানি নেমে এলে পদ্মা অববাহিকা বন্যার জন্য দুঃসংবাদ বয়ে আনতে পারে। জানা গেছে, উজানে গত ২১ জুলাই পর্যন্ত ভারতের এই অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই পানি এখন পদ্মা নদী হয়ে বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করার অপেক্ষায় রয়েছে। ফলে পদ্মা অববাহিকার সব নদীর পানি কয়েকগুণ বেড়ে যেতে পারে বলে জানা গেছে। ঠিক এমনি এক সময়ে এই পানি নেমে আসছে যে সময়ে পানি সহজে নেমে যেতে পারবে না। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন জুলাইয়ের শেষ নাগাদ আন্দামান নিকোবর অঞ্চলে একটি নি¤œœচাপ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এটি জোরদার হয়ে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে দেশের উপকূলে আসতে পারে। নি¤œচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি না হলে এর প্রভাবে সাগরের পানির স্তর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক ওপর থাকবে। ফলে পানি ধীরগতিতে নামবে। এছাড়াও নি¤œচাপের কারণে সারাদেশের প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টিপাত হতে পারে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। বন্যা আগস্ট মাস নাগাদ স্থায়ী হয়ে যেতে পারে। এদিকে পানি বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গাÑপদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে। ঢাকা জেলার আশপাশের নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া, কুশিয়ারা ব্যতীত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে। অন্যদিকে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বালু নদীর ডেমরা পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং ধরলা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। তারা জানায় ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নওগাঁ জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। অপরদিকে, সিলেট, সুনামগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনা, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর ও ঢাকা জেলার নি¤œœাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে। সারাদেশে পর্যবেক্ষণাধীন ১০১টি পানি সমতল স্টেশনের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৭টির, হ্রাস পেয়েছে ৪৩টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ১টির এবং বিপদসীমার ওপরে নদীর সংখ্যা ২০টি। আগের ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে গাইবান্ধা ২৫০ মিলিমিটার, বরগুনা ১৮৫ মিলিমিটার, সুনামগঞ্জ ১০০ মিলিমিটার, সাতক্ষীরা ৮৩ মিলিমিটার, দেওয়ানগঞ্জ ৮০, পটুয়াখালী ৭৮ মিলিমিটার, মহাদেবপুর ৭৩ মিলিমিটার, চাঁদপুর বাগান ৬৯ মিলিমিটার এবং চট্টগ্রাম ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর। নীলফামারী ॥ তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার নিচে নেমেছে। পঞ্চম দফায় উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে গত দুইদিন ধরে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহের পর বৃহস্পতিবার সকাল হতে বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ১০ ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী চর, দ্বীপচর ও নি¤œাঞ্চল এখনও তলিয়ে রয়েছে। এতে প্রায় ৮ হাজার পরিবার এখনও বানের পানির দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এলাকাগুলো ডিমলা উপজেলা পূর্বছাতনাইম খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাঁপানী ও ঝুনাগাছ চাঁপানী এবং জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের তিস্তা অববাহিকার চর, চরদ্বীপ ও নি¤œœাঞ্চল। এছাড়া থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় বন্যা কবলিত পরিবারগুলো চরম বিপাকে পড়েছে। টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হক জানান, চরখড়িবাড়ি মৌজার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের টেপুর চরের প্রায় এক হাজার একশত পরিবার, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বখড়িবাড়ি গ্রামের প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার বানের পানির সঙ্গে বসবাস করছে। এলাকার ফসলি জমিগুলো তলিয়ে থাকায় সেখানে কোন আবাদ করতে পারছে না তারা। ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ছাতুনামার চর, ফরেস্টের চর, সোনাখুলির চর ও ভেন্ডাবাড়ি চরের দেড় হাজার পরিবার বন্যার পানিতেই রয়েছে। পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন তার এলাকা ঝাড়শিঙ্গেশ্বর গ্রামটি এখনও বানের পানিতে ভাসছে। গাইবান্ধা ॥ ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে চতুর্থ দফায় ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, করতোয়া ও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি এখন বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আবারও অবনতি হয়েছে এবং নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এদিকে করতোয়া নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি, তালুককানুপুর ও হরিরামপুর ইউনিয়ন এবং পৌরসভার বেশকিছু এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে এবং পলাশবাড়ি উপজেলার কিশোরগাড়ি ও হোসেনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করায় বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এছাড়া গাইবান্ধা পৌর এলাকার কিছু কিছু এলাকাসহ সদর উপজেলার খোলাহাটি, কুপতলা, ঘাগোয়া, গিদারি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলোর বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ায় এলাকার লোকজন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এদিকে দীর্ঘমেয়াদী বন্যায় জেলার ১০টি ইউনিয়নের ৬৫টি চরাঞ্চলের বন্যা কবলিত মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে দীর্ঘদিন যাবত আশ্রয় নিয়ে পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যা, জ্বালানি সঙ্কট, বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার ও গবাদি পশুর খাদ্য সঙ্কটে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। কুড়িগ্রাম ॥ ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি আবারও বাড়ছে। ফলে নতুন করে আরও ১শ’ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ৪শ’ ৫টি চর-দ্বীপ চরে প্রায় ৬শ’ গ্রামে চার লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। ধরলার প্রবল ¯্র্েরাতে সদর উপজেলার হোলখানা ইউনিয়নের সারডোব গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে দু’দিনে প্রায় ৫০টি ঘর ভেসে গেছে। পানিবন্দী হয়েছে প্রায় শতাধিক পরিবার। নৌকার অভাবে ¯্র্েরাতের মাঝে মানুষজন তাদের ঘরবাড়ি ও জিনিসপত্র সরাতে পারেনি। অনেক বাড়ির জিনিসপত্র ভেসে গেছে। অন্যদিকে তিস্তার পানির প্রবল ¯্র্েরাতে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের বুড়ির হাট এলাকায় ক্রস বারের মাটির ৫০ মিটার পানিতে ভেসে গেছে। ভাঙ্গন দেখা দিয়ে রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রতিরাম এলাকার ক্রস বারেও। এতে করে ওই দুই ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রাম ভাঙ্গনের হুমকিতে পড়েছে। গত ৫ দিন ধরে জিও ব্যাগ ও বালুর বস্তা ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার অববাহিকার ৪ লক্ষাধিক মানুষ তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নৌকায় ও ঘরের ভেতর পানির মধ্যে বসবাস করছে। এ অবস্থায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। অধিকাংশ মানুষ পুরোপুরি শ্রমের ওপর নির্ভরশীল। একবেলা খাচ্ছে দু’বেলা উপোষ থাকছে। সবচেয়ে কষ্টে পড়েছে শিশু আর বৃদ্ধরা। ত্রাণের অভাবে খেয়ে না খেয়ে দিন পাড় করছে দুর্গম চরাঞ্চলের বন্যাকবলিত মানুষজন। পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এসব এলাকার বন্যা দুর্গতরা। এসব মানুষের পেটের পীড়া ও জ¦র দেখা দিয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যাকবলিত এলাকায় ৮৫টি মেডিক্যাল টিম কাজ করলেও দুর্গত এলাকায় এদের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে বন্যা দুর্গত এলাকার শিশুদের। চরাঞ্চলের চারণভূমি দীর্ঘদিন বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় গৃহপালিত পশুর খাদ্য সঙ্কট দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষজনের। নদ-নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে উঁচু বাঁধ, পাকা সড়ক ও বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া বন্যা দুর্গত মানুষজন সহসাই ঘরে ফিরতে পারছে না। শরীয়তপুর ॥ বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ৪টি পৌরসভাসহ শরীয়তপুর সদর, নড়িয়া, জাজিরা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার ৫০টি ইউনিয়নের ৬ লাখ লোক পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। জেলার চরাঞ্চলের মানুষ ইতোমধ্যে ম্যাঁচানে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে ঢাকার সঙ্গে সড়কপথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম শরীয়তপুর-মাওয়া সড়কের বিভিন্নœ স্থান ২ থেকে ৩ ফুট পানির নিচে ডুবে যাওয়ায় এ সড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ঢাকা হতে আগত লোকজন জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় যেতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। যাত্রী সাধারণ ডুবে যাওয়া রাস্তার বিভিন্ন স্থানগুলো দেশীয় নৌকায় পারাপার হচ্ছে। দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য বুধবার সন্ধ্যা থেকে এ সড়কে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যার পানিতে পন্টুন ডুবে যাওয়ায় শরীয়তপুর-চাঁদপুর ফেরি সার্ভিস ব্যাহত হচ্ছে। টাঙ্গাইল ॥ জেলার পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের উপজেলায় নতুন নতুন এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে বাসাইল উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৬৫টি গ্রামের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ নতুন করে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে সবগুলো ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টির কারণে মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। বেশকয়েকটি সড়ক ও সেতু ধসে যাওয়ায় এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ভুঞাপুর, গোপালপুর, কালিহাতী, নাগরপুর ও সদর উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলো এখনও বন্যাকবলিত রয়েছে। বন্যায় বাড়ি-ঘর ও আবাদি ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এদিকে নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা-সিংজোড়া সড়কের ঘুণী খালের ওপর স্থাপিত ব্রিজটি বন্যার পানির ¯্র্েরাতে বুধবার রাতে ভেসে যায়। ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে সিংজোড়ায় অবস্থিত স্কুল, কলেজ, হাট, বাজার ও পার্শ্ববর্তী শ্যামপুর, তেহালিয়া, বাটরাসহ বিভিন্ন এলাকার জনসাধারণের সরাসরি উপজেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
×