ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যার পানি নেমে গেলেই ভ্রাম্যমাণ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসবে

প্রকাশিত: ২২:৪৮, ২২ জুলাই ২০২০

বন্যার পানি নেমে গেলেই ভ্রাম্যমাণ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসবে

ফিরোজ মান্না ॥ দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। বন্যাকবলিত বহু মানুষ বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কটে পড়েছেন। বন্যার পানি নেমে গেলে ওই সব এলাকার পানি বিশুদ্ধ হতে বেশ সময় লাগবে। পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ যাতে বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি পায় তার জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বিভিন্ন এলাকায় তাৎক্ষণিকভাবে ভ্রাম্যমাণ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসানোর জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রী জনকণ্ঠকে বলেন, করোনা মহামারীতে এমনিতেই মানুষ চরম ভীতিকর পরিস্থিতিতে রয়েছেন। এর মধ্যে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ পানির অভাবে মানুষের পেটের পীড়া দেখা দিতে পারে। যাতে বন্যা পীড়িত কোন মানুষ অনিরাপদ পানি পান না করেন তার জন্য অস্থায়ীভাবে বিভিন্ন এলাকায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় মালামাল মজুদ রাখার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরকে বলা হয়েছে। বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ডুবে যাওয়া নলকূপ জীবাণুমুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্লিচিং পাউডার জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মজুদ রাখতে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। মানুষ যাতে নিরাপদ পানির অভাব বোধ না করে সেজন্য সংশ্লিষ্ট সবাই সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, গুণগত মানসম্পন্ন কর্মকা- নিশ্চিত করতে গিয়ে কেউ যদি প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়, তাহলে মন্ত্রণালয় তা শক্ত হাতে মোকাবেলা করবে। আমরা এর মাধ্যমে নিশ্চিত করতে চাই দেশের উন্নয়ন। কোন নিম্নমানের কাজ করতে দেয়া হবে না। কেউ যদি নিম্নমানের কাজের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর নির্দেশ অনুযায়ী কোন কর্মকর্তা কাজ না করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মানুষের জীবন নিয়ে আর কাউকে খেলতে দেয়া হবে না। উন্নত দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কেউ যদি অনিয়ম করেন-তার কঠিন বিচার হয়। আমরাও স্বাস্থ্যের সঙ্গে জড়িত যারাই রয়েছেন তাদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসব। কারো প্রভাব খাটবে না। এ বিষয়ে কোন আপোস করা হবে না। জনস্বাস্থ্যের বিষয়ে সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করেছে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যেকোন ধরনের ঝুঁকি এবং সমস্যার সম্মুখীন হলে তা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি। বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় পাঠানো চিঠিতে-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর পরিশ্রমকে বাস্তবে রূপ দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন সব প্রতিষ্ঠানকে দেশের উন্নয়নে একযোগে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। দেশের উন্নয়ন অনেকাংশেই স্থানীয় সরকার বিভাগের ওপর নির্ভর করে। প্রতিবছরই বর্ষাকালে অতিবর্ষণ এবং উজান থেকে পানি এসে অনেক চরাঞ্চল তলিয়ে যায়। এতে করে বাড়িঘর ও ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থা থেকে মানুষের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে অনেক সময় লেগে যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে হবে আমাদের।
×