ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অভিমত জাতীয় ফুটবল দলের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার ওয়ালী ফয়সালের

‘স্থানীয় ফুটবলারদের নিয়ে একটি টুর্নামেন্ট হোক’

প্রকাশিত: ০০:০৫, ২১ জুলাই ২০২০

‘স্থানীয় ফুটবলারদের নিয়ে একটি টুর্নামেন্ট হোক’

রুমেল খান ॥ যখন তিনি প্রাইমারী স্কুলের ছাত্র তখন দেশের ফুটবলে আবাহনী-মোহামেডানের রাজত্ব। নিজের প্রিয় দলের পতাকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন সেই সময়। প্রিয় দল মানে আবাহনী। মামা আবদুল্লাহ পারভেজ বিজেএমসির ফুটবলার ছিলেন। তার মাধ্যমেই চর্মগোলকের এই খেলায় হাতেখড়ি হয় তার। চারিদিকে ফুটবল খেলার জোয়ার দেখে ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে জিদ তৈরি হয় ভাল ফুটবল খেলে ভাল ক্লাবে সুযোগ করে নেয়ার। যার কথা বলছি তিনি হচ্ছেন ওয়ালী ফয়সাল। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য-অভিজ্ঞ লেফটব্যাক। বাংলাদেশের ফুটবলের ব্রাজিল বলা হয় ঢাকার পাশে শীতলক্ষ্যা নদী তীরবর্তী নারায়ণগঞ্জকে। জাতীয় দলে ঢাকার শীর্ষ ফুটবল আসরে সবসময়ই দাপট থাকে এ জেলার ফুটবলারদের। ওয়ালী এসেছেন সেই পথ ধরেই। হওয়ার কথা ছিল গায়ক কিন্তু হয়ে যান ফুটবলার। মামা আবদুল্লাহ্ পারভেজের অনুপ্রেরণায় ফুটবলার হওয়া তার। জাতীয় দলে দীর্ঘদিন ধরে খেলছেন। দ্বিতীয় পেশাদার লীগে সেরা ফুটবলারের মর্যাদাও পেয়েছেন। পরিবারের অনীহার পরও ফুটবল খেলা শুরু করেছিলেন তিনি। তার খেলা দেখে কোচ আজমল খন্দকার মুগ্ধ হন। তার খেলার শৈলী দেখে অভিভূত হন কিংবদন্তি-প্রয়াত মোনেন মুন্না (তিনিও ছিলেন নারায়ণগঞ্জের অধিবাসী)। তাকে আবাহনীর জুনিয়র দলে খেলার আমন্ত্রণ জানান। এভাবেই মুন্নার হাত ধরে পেশাগত ফুটবল জীবনে পা রাখা ওয়ালীর। পরবর্তীতে ওয়ারী ক্লাবের জুনিয়র টিমের হয়ে খেলেন তিনি। ২০০৩ সালে যোগ দেন শৈশবের প্রিয় ক্লাব আবাহনীতে। প্রথম বছর সে রকম খেলার সুযোগ জোটেনি। পরের বছরই মূল দলের একাদশে খেলার সুযোগ পান এবং অসাধারণ পারফর্মেন্স দেখান। এরই ফলে ২০০৫ সালে ডাক পান জাতীয় দলে। আবাহনীর পাশাপাশি শেখ জামাল ধানমন্ডিতেও খেলেছেন। সবচেয়ে বেশি সময় ধরে খেলেছেন আবাহনীর হয়ে। ২০০৩ থেকে ২০০৯ এবং ২০১২ থেকে খেলছেন আবাহনীর জার্সি পরে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে অভিমানে আচমকাই আন্তদর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছিলেন ওয়ালী। জাতীয় দলের তৎকালীন কোচ টম সেইন্টফিটের অবহেলায় এবং দল থেকে বাদ দেয়ায় অভিমানে অবসর নেয়ার ঘোষণা দেন। তার খেলা ছেড়ে দেয়া নিয়ে তখন সর্বপ্রথম দৈনিক জনকণ্ঠই প্রতিবেদন প্রকাশ করলে ফুটবলাঙ্গনে তখন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল। পরে অবশ্য টম বিদায় নিলে কিছুদিনের মধ্যেই অবসরের সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন ওয়ালী। আবারও জাতীয় দলেও ফিরে আসেন নিজ যোগ্যতায়। ৩৫ বছর বয়সী এবং ৫ ফুট সাড়ে ৭ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ওয়ালী এখন ফুটবলের বাইরে। কারণ করোনাভাইরাস। এই স্থবিরতা মোটেও ভাল লাগছে না তার। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি চাই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) দ্রুত শুরু হোক। মহামারীর কারণে অন্যান্য দেশের ফুটবল স্থবির হয়ে পড়েছিল, তবে এখন তারা আবার শুরু করছে। আমরা বিপিএল খেলোয়াড়রা প্রায় চার-পাঁচ মাস যাবত ফুটবলের বাইরে আছি। আমরা এখন ফুটবলে ফিরতে চাই, আমরা বিপিএলে ফিরতে চাই। আমি অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলোকে অনুরোধ করব, আপনারা লীগ শুরু করুন। আমি ফেডারেশনকেও অনুরোধ করব লীগ শুরু করার আগে বিদেশী খেলোয়াড়দের ছাড়া একটি টুর্নামেন্টের ব্যবস্থা করুন, এতে আমাদের স্থানীয় খেলোয়াড়রা লীগ ও জাতীয় দলের জন্য তাদের পারফর্মেন্সকে আরও উন্নত করতে পারবে।’
×