মধুপুরে চার খুনের হোতা সাগর গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ১৯ জুলাই ॥ টাঙ্গাইলের মধুপুরে একই পরিবারের চারজনকে গলাকেটে হত্যা মামলার মূল হোতা সাগর আলীকে (২৭) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এই হত্যাকন্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও ডাকাতি করে নেয়া মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার সকাল ৮টায় হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি মধুপুরের মির্জাবাড়ী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণবাড়ি এলাকার মগবর আলীর ছেলে সাগর আলীকে (২৭) নিজ বসতবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ বিষয়ে রবিবার সন্ধ্যায় মধুপুরের ব্রাহ্মণবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। এ সময় র‌্যাব-১২, সিপিসি-৩, টাঙ্গাইলের কোম্পানি কমান্ডার মেজর আবু নাঈম মোঃ তালাত জানান, হত্যাকান্ডের ঘটনার পর থেকে র‌্যাব-১২ সকল প্রকার গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার সকাল ৮টায় হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি মধুপুরের মির্জাবাড়ী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পের এলাকার মগবর আলীর ছেলে সাগর আলীকে (২৭) নিজ বসতবাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকান্ডের সত্যতার কথা স্বীকার করেছে। আসামি সাগর আলী র‌্যাবকে জানায়, ভুক্তভোগী আব্দুল গনি সুদের ব্যবসা করত। আসামি সাগর আলীর সঙ্গে পূর্বে থেকেই সুদের লেনদেন ছিল। আসামি কয়েকবার সুদের টাকা দিতে ব্যর্থ হয়। গত মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) আব্দুল গনির কাছে পুনরায় ২শ’ টাকার জন্য গেলে তাকে অনেক বকাঝকা করে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এতে সাগর আলী অপমান বোধ করলে তার অপর এক সহযোগীকে নিয়ে হত্যা এবং টাকা পয়সা ও সম্পদ লুণ্ঠনের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সাগর তার সহযোগীকে নিয়ে বুধবার (১৫ জুলাই) রাত আনুমানিক ১০টায় ভুক্তভোগী গনি মিয়ার বাসায় যায়। যাওয়ার পূর্বে সাগরের সহযোগী বাজার থেকে চেতনানাশক ওষুধ নিয়ে যায়। আসামি ভুক্তভোগীর পূর্ব পরিচিত হওয়ায় খুব স্বাভাবিকভাবে বাসায় ঢোকার অনুমতি পায়। আকস্মিকভাবে চেতনানাশক ব্যবহার করে গনি মিয়াকে অচেতন করে ফেলে। এ সময় পরিবারে অন্য সদস্যরা ঘুমে থাকায় তাদের অচেতন করতে সহজতর হয়। সবাইকে ঠান্ডা মাথায় ভুক্তভোগীর বাসায় ব্যবহৃত কুরাল ও আসামিদের ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রত্যেককে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। এরপর বাসা থেকে বের হওয়ার পূর্বে বাসার মূল্যমান জিনিসপত্র নিয়ে পলায়ন করে এবং বাসার বাইরে থেকে তালা মেরে পালিয়ে যায়। আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পরবর্তীতে আসামির বোনের বাড়ি মধুপুরের ব্রাহ্মণবাড়ি (মজিদ চালা) গ্রাম থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাকু ও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়। অপর সহযোগীকে গ্রেফতার করতে র‌্যাব-১২’র অভিযান চলমান রয়েছে।