ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শনাক্ত বিবেচনায় ২৪ ঘণ্টায় সুস্থতার হার ৫৪ ভাগের ওপরে

প্রকাশিত: ২২:৩৯, ২০ জুলাই ২০২০

শনাক্ত বিবেচনায় ২৪ ঘণ্টায় সুস্থতার হার ৫৪ ভাগের ওপরে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৩৭ জনের মৃত্যু এবং শনাক্ত হয়েছেন নতুন ২৪৫৯ জন করোনা রোগী। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ২৬১৮ এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২ লাখ ৪ হাজার ৫২৫ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ১৫৪৬ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজার ৬৪২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ৬২৫টিসহ এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ লাখ ২৮ হাজার ২৯৯টি। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ। রবিবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ২৯ জন পুরুষ এবং ৮ জন নারী। তাদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাদের মধ্যে ৯০ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে একজন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ২০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৭ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮ জন, রাজশাহী বিভাগে তিন জন, সিলেট বিভাগে ২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে একজন, রংপুর বিভাগে একজন এবং খুলনা বিভাগে ৭ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে ৩২ জন এবং বাসায় ৫ জন মারা গেছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৬০৯ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৫৯১ জন। আইসোলেশন থেকে ২৪ ঘণ্টায় ৫১৬ জন এবং এখন পর্যন্ত ২৩ হাজার ৫৫৬ জন ছাড়া পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৪২ হাজার ১৪৭ জনকে। প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন মিলে ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ২ হাজার ৬৮৬ জনকে। এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৯ হাজার ৯৯৭ জনকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৫২৫ জন এবং এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৫০ হাজার ১৪৩ জন ছাড়া পেয়েছেন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫৯ হাজার ৮৫৪ জন। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, সারাদেশে করোনা রোগীদের জন্য সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ৬৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ১৬৭ জন এবং খালি ১০ হাজার ৭৯৭টি শয্যা। এছাড়া ঢাকা শহরের হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৩০৫টি। সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ২ হাজার ৫১ জন। শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ২৫৪টি। নাসিমা সুলতানা জানান, ঢাকা মহানগরীতে আইসিইউ শয্যা ১৪২টি, ভর্তি আছেন ৮৭ জন, খালি আছে ৫৫টি শয্যা। চট্টগ্রাম মহানগরীতে আইসিইউ শয্যা ৩৯টি, ভর্তি আছেন ১৯ জন, খালি আছে ২০টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা ৬৫৭টি, ভর্তি আছেন ৩১১ জন, খালি আছে ৩৪৬টি বেড। তিনি আরও জানান, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বাদে দেশের অন্যান্য জেলার হাসপাতালে শয্যা আছে ৭ হাজার ৭০২টি। এখানে রোগী ভর্তি আছেন এক হাজার ৮০৫ জন, খালি আছে ৫ হাজার ৮৯৭টি বেড। আইসিইউ আছে ১৯৩টি, রোগী ভর্তি আছেন ৮০ জন এবং খালি আছে ১১৩টি আইসিইউ শয্যা। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, ১৮ মার্চে প্রথম রোগীর মৃত্যু হলেও সেই মাসে মারা যান পাঁচ জন। এপ্রিল মাসে মারা যান ১৬৩ জন, মে মাসে মারা যান ৪৮২ জন, জুন মাসে এক হাজার ১৯৭ জন, আর চলতি মাসে ১৮ জুলাই পর্যন্ত মারা গেছেন ৭৩৪ জন। ৬ এপ্রিল থেকে নিয়মিত মৃত্যুর সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। গত ৬ এপ্রিল থেকে ৯ মে পর্যন্ত প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১০ জনের মধ্যে, ১০ থেকে ১৭ মে পর্যন্ত মৃত্যু হয় ১১ থেকে ১৯ জনের মধ্যে। ১৮ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত দুদিন বাদে মৃত্যু হয় ২০ থেকে ২৮ জনের। গত ৩১ মে থেকে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। প্রতিদিনই মৃত্যুর সংখ্যা ৩০-এর ওপর চলে যায়। গত ২৫ মে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের মোট সংখ্যা ৫০১ জনে দাঁড়ায়। ১০ জুন মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়ায়। সেদিন ৩৭ জনের মৃত্যুসহ মোট এক হাজার ১২ জনের মৃত্যু সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। প্রথম রোগী মারা যাওয়ার এক মাস দুই দিন পর ২০ এপ্রিল মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়ায়, ২৫ মে ছাড়ায় ৫০০ জন। গত ১০ জুন মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়, ২২ জুন ছাড়ায় দেড় হাজার, ৫ জুন ছাড়ায় দুই হাজার, আর আড়াই হাজার ছাড়িয়ে গেল ১৭ জুলাই। স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেয়া তথ্যে মৃতের সংখ্যা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ১৮ মার্চে প্রথম মৃত্যুর পর ৫০০ জন ছাড়াতে সময় লেগেছে দুই মাস সাত দিন, ৫০০ থেকে এক হাজার জনের মৃত্যু ছাড়িয়েছে ১৬ দিনে, এক হাজার থেকে মৃত্যু দেড় হাজার জনে পৌঁছায় ১২ দিনে, দুই হাজার জন হয়েছে ১৩ দিনে, আর আড়াই হাজার ছাড়িয়েছে ১২ দিনে।
×