ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভার্চুয়াল হাটেও নজরদারি বাড়ানোর দাবি

প্রকাশিত: ২১:১৬, ২০ জুলাই ২০২০

ভার্চুয়াল হাটেও নজরদারি বাড়ানোর দাবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কোরবানির পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া ভার্চুয়াল দুনিয়ায় গড়ে উঠা অনলাইন পশুর হাটে যাতে কোন প্রতারণার ঘটনা না ঘটে সে বিষয়েও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকা এবং অনলাইনে ভুয়া ব্যবসায়ী ও প্রতারণাকারীদের বিরুদ্ধে সরকারকে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। রবিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আজহায় কোরবানির পশুর হাটসহ দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব কথা উঠে আসে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, ‘কোরবানি ঈদ স্থানীয় কৃষি ও প্রাণিসম্পদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের সার্বিক অর্থনীতির কথা বিবেচনা করে সরকার সীমিত আকারে কোরবানির পশুর হাট বসানোর অনুমতি দিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও সামাজিক দূরত্ব মানার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে। পাশাপাশি, কোরবানির পশু পরিবহন, হাটে জাল নোট বন্ধে তৎপরতা, অতিরিক্ত হাসিল বন্ধ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখা খুবই জরুরী। এ লক্ষ্যে প্রশাসনের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠন সম্পৃক্ত করে একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করা যেতে পারে।’ প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয়। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে সারাদেশকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসমূহ আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যবৃন্দ শুরু থেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। সীমিত পরিসরে স্থাপিত কোরবানির পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে, তবে এ বিষয়ে সাধারণ জনগণের জনসচেনতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন।’ ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধতত্ত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি প্রায় ২.২ শতাংশ কমে যেতে পারে, এর ফলে আমাদের দেশে স্থানীয় বাজারে চাহিদা, বৈশ্বিক রফতানি এবং প্রবাসী আয় কমে গেলে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার অবনতির পাশাপাশি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তিনি আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আজহায় কোরবানির পশুর হাটসমূহে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নজরদারি বাড়ানো এবং অনলাইনে কোরবানির পশু বেচাকেনা কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য জনগণের মাঝে জনসচেতনতা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন।’ বাংলাদেশ ট্যানার্স এ্যাসোসিয়েশন-এর চেয়ারম্যান মোঃ শাহীন আহমেদ বলেন, গতবছর কোরবানির পশু ও কাঁচা চামড়ার বাজার ছিল প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার। তিনি এ বছরের পশুর হাটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম জোরদার এবং সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোরারোপ করেন এবং বিশেষ করে, বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকলকে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যবৃন্দকে আরও মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। ই-ক্যাব-এর সভাপতি শমী কায়সার বলেন, ‘চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশে যাদের ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে, তাদের মধ্যে প্রায় ২২ শতাংশ মানুষ অনলাইনের কেনাবেচা কার্যক্রমে নিয়োজিত ছিল, তবে করোনায় এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তিনি আসন্ন কোরবানির ঈদে অনলাইনে পশু কেনাবেচার জন্য ‘ডিজিটাল হাট’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমিয়ে এ ধরনের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আরও জানান, অনলাইনে ভুয়া ব্যবসায়ী ও প্রতারণাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও এফবিসিসিআই’র প্রাক্তন সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, ঢাকা চেম্বারের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আল আমিন, ডিসিসিআই সহসভাপতি মোহাম্মদ বাশির উদ্দিনসহ আরও অনেকেই সংযুক্ত ছিলেন।
×