ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কারের আশ্বাসেই দুই যুগ পার

তানোর-আমনূরা সড়ক এখন মরণ ফাঁদ

প্রকাশিত: ১৯:৫৮, ২০ জুলাই ২০২০

তানোর-আমনূরা সড়ক এখন মরণ ফাঁদ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনূরা সড়কটি ওই এলাকার মানুষের জন্য ছিল স্বপ্ন। সেই তিন দশক আগে রাস্তাটি পাকা করা হয়। কষ্টে থাকা সেই অঞ্চলের মানুষের চোখে স্বপ্ন হয়ে এসেছিল সেই রাস্তা। কিন্তু সেই রাস্তাই এখন দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে। সেই তিন দশক আগে তৈরি হওয়া রাস্তা কোন সংস্কার হয়নি। রাস্তার পিচ ও পাথর উঠে গেছে অনেক আগেই। পুরো রাস্তা খানা-খন্দে ভরা। প্রতিদিনই সেখানে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা-আমনূরা প্রধান সড়কের চিত্র এটি। পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে যাতায়াতের আর কোন বিকল্প রাস্তা না থাকায় অনেকটা বেকায়দায় পড়ে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করছে তানোর ও মোহনপুর উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। তবে, এ সড়কটি সংস্কারের বিষয়ে কয়েক যুগ ধরে কর্তৃপক্ষ আশার বাণী শোনালেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন পদেক্ষপ দেখা যায়নি। শুধু মুন্ডুমালা-আমনূরা সড়কেই নয়, তানোরের সঙ্গে গোদাগাড়ী উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র সড়কটির অবস্থাও অনেকটা করুণ। মুন্ডুমালা হতে গোদাগাড়ীর জটাবটতলা পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সড়কটি ১৫ বছর ধরে সংস্কার না হওয়াই এমন পর্যায়ে গেছে যে দেখে মনে হবে এটি পাকা সড়ক নয়। যেন কাদাময় কোন গ্রামের রাস্তা। পিচ পাথর ইট বালুর কোন চিহ্ন নেই। বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। তানোর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্রমতে, ১৯৯২ সালে প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়ক আমনূরা থেকে তানোর হয়ে রাজশাহী পর্যন্ত প্রধান সড়ক কাঁচা থেকে পাকাকরণ করা হয়। স্থানীয়রা জানান, আমনূরা থেকে মুন্ডুমালা মাত্র সাত কিলোমিটার রাস্তার জন্য নওগাঁর পোরশা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর, নাচোল আড্ডার কয়েক লাখ মানুষকে ৪০ কিলোমিটার ঘুরে গোদাগাড়ী হতে রাজশাহী শহরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে খরচ ও সময় উভয়ই বেশি লাগছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) তানোর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তানোর হতে আমনূরা ধামধুম ১৭ কিলোমিটার সড়ক শুধু সংস্কারই নয়, সড়কের দুই পাশে তিন ফুট করে সম্প্রাসরণ করা হবে। ইতোমধ্যে এ সড়কের আংশিক কাজ শুরু হয়েছে। অক্টোবর-নবেম্বর মাসে পুরোদমে কাজ শুরু করবে ঠিকাদার। বাঁশখালী নিজস্ব সংবাদদাতা বাঁশখালী থেকে জানান, জনদুর্ভোগের অপর নাম চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গ্রামীণ সড়কগুলো। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার অধিকাংশ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে গ্রামীণ সড়কগুলো সংস্কার না করায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। রাস্তার দু’পাশ ভেঙ্গে গিয়ে সড়কগুলো সঙ্কুচিত হওয়ায় যানবাহন প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আহত হচ্ছেন অনেক যাত্রী। ফলে এই সড়কগুলো যেন ‘মরণ ফাঁদে’ পরিণত হয়েছে। প্রতি বছরে এই সড়কগুলো সংস্কারের নামে উপজেলা এলজিইডি অফিস হতে বরাদ্দ দিলেও জনপ্রতিনিধি ও ঠিকাদার লোক দেখানো নামমাত্র কাজ করে পুরো টাকা লুটপাট করে হাতিয়ে নেয় বলে মন্তব্য করেছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। তাছাড়া শুরুতে সড়কের উন্নয়ন কাজ প্রতিবারেই সংস্কার করা হলেও মাস দুয়েক না যেতেই সড়কগুলো পুনরায় পূর্বের ন্যায় খানাখন্দকে ভরে উঠে বলে অভিযোগ তুলেছেন যানবাহন শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ। এদিকে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলেও উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতরের তদারকির অভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বর্ষার আগে কাজ শুরু না করায় স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। রবিবার সকালে বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশার চিত্র তুলে ধরতে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পুঁইছড়ি ইউপির প্রেমবাজার থেকে সরলিয়া পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়কের পুরোটাই ছোট খাটো নদীতে পরিণত হয়েছে। যানবাহন চলাচলে একেবারেই অনুপযোগী হয়ে অযত্ন অবহেলার মধ্যে দিয়ে পড়ে থাকলেও ঝুঁকি নিয়ে কিছু গাড়ি চলাচল করছে। টাঙ্গাইল নিজস্ব সংবাদদাতা টাঙ্গাইল থেকে জানান, মধুপুরের কুড়াগাছা-কামারচালা ৪ কি.মি. সড়ক বেহাল। সড়ক নয় যেন চষা ক্ষেত। স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও সড়কটি পাকা না হওয়ায় এলাকাবাসী দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এলাকার উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারজাত করতে কৃষকদের কষ্ট হচ্ছে। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রবিবার সকালে সড়কটি পাকাকরণের দাবিতে এলাকাবাসী কুড়াগাছা গ্রামে মানববন্ধন করেছে। স্থানীয়রা জানায়, মধুপুরে কুড়াগাছা ইউনিয়নের কুড়াগাছা-কামারচালা একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এ সড়ক দিয়ে চাপাইদ দাখিল মাদ্রাসা, পিরোজপুর রাম জীবন উচ্চ বিদ্যালয়, কুড়াগাছা প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিরোজপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প, পিরোজপুর ও কুড়াগাছা বাজারে যাতায়াতকারী এলাকাবাসী ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কুড়াগাছা, চাপাইদ, পিরোজপুরসহ কয়েকগ্রামে প্রচুর পরিমাণে আনারস, কলা, পেঁপে, আদা, কচু ও সবজি চাষ হয়ে থাকে। এলাকা সবজি চাষের জন্য বিখ্যাত। এখানে উৎপাদিত সবজি বিদেশেও রফতানি হয়ে থাকে। সড়কটি বেহাল থাকার কারণে কৃষিপণ্য পরিবহন করতে কষ্ট হচ্ছে। কৃষকরা এজন্য ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও এলাকাবাসী জানান। সড়কটি পাকাকরণের দাবিতে কয়েক শ’ মানুষ ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে হাতে হাত ধরে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করে।
×