জোবায়দা আক্তার চৌধুরী ॥ নাট্যকার, নির্দেশক, অভিনেতা, গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীতশিল্পী শান্তনু বিশ্বাসের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়ে গেল ১২ জুলাই। মৃত্যুকালে মানবতার জন্য দেহ দান করে অনন্য হয়েছিলেন প্রয়াত শান্তনু বিশ্বাস। তিনি মৃত্যুর অনেক আগেই চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য লিখিতভাবে ওনার দেহ দান করে গিয়েছিলেন। শ্রদ্ধায় মাথা অবনত করি এই মহান মানুষটির প্রতি।
শান্তনু বিশ্বাস এ শুধু একটি নাম নয়, এ যেন এক আলোর বাতিঘর। যা শুধু অন্ধকারের বুকে আলো জ্বালিয়ে দিতে পারে। হয়ত ধরণীর বুক থেকে নিভে গেছে এই বাতিঘর, তবুও আলো ফুটছে তার স্বমহিমায়। কীর্তিমানের মৃত্যু হয় না।
শান্তনু বিশ্বাসকে আমি খুব অল্প সময়ের জন্য পেয়েছি, এ আমার ভীষণ আফসোসের একটি জায়গা।
অপর্ণা চরণের থিম সং-এর স্রষ্টা প্রয়াত শান্তনু বিশ্বাস। সেই থেকে দাদার সঙ্গে পরিচয়। গানের কথা ও সুর যেন এক অনবদ্য সৃষ্টি। এমন কথা ও সুর কোন সাধারণ শিল্পীর পক্ষে সম্ভব না। এ এক মহান শৈল্পিক কারিগরের পক্ষেই সম্ভব। সেদিনই বুঝতে পেরেছি আমি এক বাতিঘরের সংস্পর্শে এলাম। শান্তনু দাদা ছিলেন আমাদের প্রাণের অপর্ণা, চট্টগ্রামের অভিনয় জগতের আরেকটি নক্ষত্র শুভ্রা দী’র জীবন সঙ্গী। যার কারণে দাদার কাছ পর্যন্ত পৌঁছানো আমার জন্য আরও সহজ হলো। প্রয়াত শান্তনু দাদাকে আমি মনে প্রাণে আমার লেখার জগতের একজন শিক্ষা গুরু হিসেবে মনে করি এবং আজও কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি এবং আজীবন করে যাব।
প্রয়াত শান্তনু দাদা মুখে যাই বলতেন , আমার কাছে কবিতার মতো শোনাত। সবসময় উনি আমাকে যা বলতেন-
পড়ো আরো পড়ো
ভেতর থেকে নতুন নতুন শব্দ খুঁজে আনো
খেলো আরো খেলো, শব্দের খেলা করো
ছন্দের সাথে মিতালি করে রঙিন পাপড়ি মেলো
ওড়ো, ওড়াও তোমার ডানা
তোমার মন কী বলে শোনও
কে কী বলে যাকনা চুলোয়
শুনবে নাকো কারো মানা।
কী লিখেছো? আমায় পাঠাও
লেখা হাতে পেয়ে বলেন
না হয়নি কিছু নতুন করে সাজাও
লেখা যদি মনের মতন হয়
বলতেন, বাহ বেশ বেশ বেশ
হবে হবেই তোমার জয়।