ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৮শ’কোটি ডলার ঘোষণা

প্রকাশিত: ২২:৫০, ১৭ জুলাই ২০২০

রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৮শ’কোটি ডলার ঘোষণা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চলতি অর্থবছর রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮শ’ কোটি ডলার। করোনা সঙ্কটের কারণে বিদায়ী অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রফতানি করা সম্ভব হয়নি। গত বছর পণ্য ও সেবা খাত মিলে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৪শ’ কোটি ডলার। ওই হিসেবে লক্ষ্যমাত্রা ৬ বিলিয়ন ডলার কমানো হয়েছে। তবে শিল্প খাত উন্নয়নে সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে রফতানিখাত ঘুরে দাঁড়ানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পণ্য ও সেবা রফতানি করা সম্ভব হবে। কাঁচা চামড়া রফতানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ শিল্প রক্ষায় কাঁচা চামড়া রফতানির বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে রফতানির অনুমতি দেয়া হতে পারে। বৃহস্পতিবার জুম প্ল্যাটফর্মে ২০২০-২১ অর্থবছরের রফতানি লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বাণিজ্য সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দিনের সঞ্চালনায় জুমে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম, বিজিএমইর প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হক, এফবিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, বেসিসের সভাপতি আলমাস কবীর, চামড়াজাত পণ্য রফতানিকারক সমিতির প্রেসিডেন্ট মোঃ সাইফুল ইসলাম এবং বিকেএমইর প্রথম সহ-সভাপতি মোঃ হাতেম। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮শ’ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে পণ্য রফতানি খাতে ৪ হাজার ১শ’ কোটি মার্কিন ডলার এবং সেবা রফতানি খাতে ৭শ’ কোটি মার্কিন ডলার। পণ্য রফতানির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ২১ দশমিক ৭৫ ভাগ এবং সেবা রফতানিতে খাতে এই হার ৯.৪৬ ভাগ নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত অর্থবছর এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৪শ’ কোটি বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্ববাণিজ্যে কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাবে সে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। বিশ্ব বাণিজ্যের সাম্প্রতিক গতিধারা, দেশীয় এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ এর প্রভাব প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত লক্ষাধিক কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা, রফতানি সম্ভাবনাময় নতুন পণ্য ও সেবা খাতের বিকাশ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টাস্কফোর্সের পর্যালোচনা মোতাবেক গৃহীত স্বল্প ও মধ্যমেয়াদী পদক্ষেপসহ গত বছরের রফতানি খাতে অর্জিত প্রবৃদ্ধির গতিধারা পর্যালোচনা করে এ রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। টিপু মুনশি বলেন, বিশ্ব বাণিজ্যে কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাবের ফলে বিগত মার্চ, এপ্রিল এবং মে মাসে পণ্য খাতের রফতানি আয় হ্রাস পেয়েছে, তবে জুন মাস থেকে তা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। আশা করা যায়, সঠিক নীতি অনুসরণ এবং সময়মতো তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা গেলে রফতানির গতি বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, চলতি অর্থবছরের ৬ মাস পর বিশ্ব অর্থনীতি এবং আমাদেরর রফতানির গতিচিত্র পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে ঘোষিত ৪ হাজার ৮শ’ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রা পুনর্নির্ধারণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকলে ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। কাঁচা চামড়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছর কোরবানি চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করার জন্য সরকার সবকিছু করবে। বিষয়টির উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এবং বিগত দিনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। চামড়া সংগ্রহের জন্য এবার কোন অর্থ সঙ্কট থাকবে না। এবার প্রয়োজনে সরকার কাঁচা চামড়া রফতানির বিষয়টিও মাথায় রেখেছে। গত বছরের মতো পরিস্থিতি কোন অবস্থাতেই হতে দেয়া হবে না। কয়েকদিনের মধ্যে ট্যানারি মালিকরা চামড়ার ক্রয়মূল্য আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবেন। আমরা আশাবাদী এ বছর কোরবানির চামড়ার ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে চামড়ার ক্রয়মূল্য আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবে মন্ত্রণালয়।
×