ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মনোবল ও শৃঙ্খলা

প্রকাশিত: ২১:৫৮, ১৬ জুলাই ২০২০

মনোবল ও শৃঙ্খলা

কয়েক মাস আগেও আমরা কল্পনা করতে পারিনি এমন কোন দিন আমাদের জীবনে আসতে পারে যখন আমরা ঘরেই থাকব, অনেকটা খাঁচায় বন্দী পশুর মতো। আমরা কখনও কল্পনাতেও আনিনি যে আমাদের বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে, আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে মিশতে পারব না, তাদের বাড়ি বেড়াতে যেতে পারব না। প্রায় তিন মাস লকডাউনে থাকার পরে এখন প্রায় সব অফিস, শপিংপ্লেস, রেস্টুরেন্ট খুলে দিয়েছে শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া। কিন্তু এরমধ্যেও তো কত শত মানুষ মারা যাচ্ছে করোনায়, আবার অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থও হয়ে উঠেছে। আমারই দেখামতো আমার আত্মীয়, বন্ধুরা যারা কিনা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, তারা এখন দিব্বি সুস্থ আছেন? তারা হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতেই নিজেরা সচেতন থেকে কিছু নিয়ম- কানুন মেনে, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেয়ে সেরে উঠেছেন। সুস্থ থাকতে হলে খুব বেশি নিয়ম-কানুন নয়, কিছু নিয়ম মানলেই অনেকটাই সম্ভব এই করোনাকে দূরে রাখা। আমরা যখন বাসায় আছি সবসময়, আমরা বারে বারে সাবান দিয়ে হাত ধুই, যেন করোনার জীবাণু বাড়িতে আসলেও সেটা সাবান পানিতে চলে যায়। আবার বাইরে থেকে যেসব জিনিসপত্র আসছে সেসবও খুব ভালভাবে জীবাণু মুক্ত করা উচিত। কাঁচাবাজারগুলো বড় বালতিতে বা গামলায় রেখে ট্যাপের পানি ছেড়ে দিয়ে খুব ভালভাবে ধুয়ে নিলেই ভাইরাস থেকে মুক্ত করতে পারব। তারপরও সবজি কাটার আগে এবং পরে হাত ভালভাবে ধুয়ে নিতে হয়। কাঁচা মাছ-মাংস আমরা ভালভাবে পানিতে ধুয়ে প্যাকেট করে ফ্রিজে রাখতে পারি। তবে মাছ মাংস কাটার সময় আলাদা বঁটি, ছুরি ব্যবহার করাই ভাল। কাঁচা শাকসবজি যে বঁটি বা ছুরি দিয়ে কাটা হবে সেটা দিয়ে মাছ মাংস না কাটাই ভাল। তবে মাছ মাংস কাটার সময় মাস্ক পরে নেওয়া উত্তম। তৃতীয়ত প্যাকেটজাত দ্রব্যগুলো আমরা কয়েক ঘণ্টা রোদে রেখে দিয়ে তারপর প্যাকেটগুলো খুলে ভেতরের দ্রব্য ব্যবহার করতে পারি। এবার দৃষ্টি দিই আমাদের নিত্যদিনকার খাদ্য রুটিনে। এ সময়ে ভাজাপোড়া খাবার, সফট ড্রিংকস এবং ফাস্টফুড খাবারগুলো আমরা পরিহার করতে পারি, আর খেলেও খুব অল্প পরিমাণে। আর প্রতিদিনের রুটিনে তাজা শাকসবজি, ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার যেমন পেয়ারা, লেবু, মালটা বেশি করে খেতে পারি। আরেকদিকে আমরা বিশেষ খেয়াল রাখতে পারি তা হলো ফ্রিজের ঠা-া কোন খাবার আমরা খাব না, যেটাই খাব গরম করে খাব। বাইরে বের হবার সময় আমরা কিন্তু মুখে মাস্ক আর আরও সাবধানতার জন্য গ্লাভস পড়ব এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার সাথে রাখব। আর বাইরে গিয়ে চোখে- মুখে বা নাকে যেন হাত না দিই সেসব দিকে বিশেষ খেয়াল রাখব। আর বাড়িতে ফিরে কারও সঙ্গে দেখা না করে বা কথা না বলে গোসল করব। এখানেই শেষ নয়, আরও বেশি সাবধানতার জন্য গোসল শেষে গরম পানির ভাপ নিব এবং গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করব এবং এক কাপ গরম চা খাব। সর্বোপরি আমাদের মনোবল অটুট রাখাটাই বোধ করি সবচেয়ে বেশি জরুরী। আমাদের শারীরিক, মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য। কেননা দুশিন্তাগ্রস্ত নাগরিক না পারবে নিজেকে সুস্থ-সবল রাখতে, না পারবে দেশের অর্থনীতিতে কোন অবদান রাখতে। কল্যাণপুর, ঢাকা থেকে
×