ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাধন সরকার

করোনাবর্জ্য থেকে সাবধান!

প্রকাশিত: ২১:৫৭, ১৬ জুলাই ২০২০

করোনাবর্জ্য থেকে সাবধান!

বৈশ্বিক মহামারী করোনা সম্পূর্ণ ছোঁয়াচে একটি রোগ। যার ফলে এর সংক্রমণ দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে এবং পড়ছে। হাসপাতালগুলো করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে! নতুন সংক্রমিত করোনা রোগীদের বেশিরভাগই বাড়িতে অবস্থান করে ডাক্তারের পরামর্শ ও সকল নিয়ম-কানুন মেনে করোনা মোকাবিলা করছেন। ফলে রাজধানী শহরে তো বটেই, জেলা ও উপজেলা শহরের বাসাবাড়িতে এখন ব্যাপক মাত্রায় করোনা বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। করোনা রোগীর ব্যবহৃত মাস্ক-গ্লাভস-পিপিই বাসাবাড়ির সাধারণ বর্জ্য-আবর্জনার সঙ্গে এখন মিলেমিশে একাকার! ব্যবহৃত করোনা সুরক্ষাসামগ্রী এখন রাস্তাঘাটে, শহরের অলিতে-গলিতে, ফুটপাথে, ড্রেনে, হাসপাতালের আশপাশে দেখা যাচ্ছে। বাসায় থেকে যেসব রোগী সঙ্গনিরোধের নিয়ম মেনে করোনা চিকিৎসা করে চলেছেন, স্বাভাবিকভাবেই ওই বাসার অন্য সদস্যরাও সম্ভাব্য সংক্রমণ থেকে বাঁচতে করোনা সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহার করছেন। ফলে বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত সুরক্ষাসামগ্রীর মাত্রাতিরিক্ত বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। এসব ব্যবহৃত করোনা সুরক্ষাসামগ্রী সাধারণ বা গৃহস্থালি বর্জ্যরে সঙ্গে মিশিয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাছে দেওয়া হচ্ছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মী বাসাবাড়ির বর্জ্য সংগ্রহ করার সময় ও সংগ্রহ করার পর বর্জ্য নাড়াচাড়ার মাধ্যমে এসব করোনা সুরক্ষাসামগ্রীর (মাস্ক-গ্লাভস-গগলস-পিপিই) সরাসরি সংস্পর্শে আসছেন। ফলে করোনার এই সময়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। আবার না বুঝে ঢালাওভাবে বহু লোক গ্লাভস ও পিপিই ব্যবহার করছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের থেকে বার বার বলা হচ্ছে, সবার পিপিই ও গ্লাভস ব্যবহার করার দরকার নেই। কিন্তু কে শোনে কার কথা! করোনায় পলিথিন আগ্রাসনও থেমে নেই! রাস্তাঘাটে পলিথিনের তৈরি গ্লাভস, পিপিই, মাস্কসহ নানা ধরনের করোনা সুরক্ষাসামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে। পলিথিন আর প্লাস্টিকের তৈরি এসব করোনারোধী সামগ্রী দেদার বিক্রি হচ্ছে। যদিও বিশেষজ্ঞদের থেকে বলা হচ্ছে, পলিথিনের তৈরি গ্লাভস ও পিপিই করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা করে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে নকল সুরক্ষাসামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। ভাইরাসে অনাক্রান্তরাও করোনা সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহার করছেন। আবার ব্যবহৃত এসব করোনা বর্জ্য অসচেতনভাবে যত্রতত্র ফেলে দেওয়া হচ্ছে। ফলে বর্জ্য সংগ্রহকারীসহ চলাফেরা করা জনসাধারণের জন্যও ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। মাটিতে পড়ে থাকা ব্যবহৃত মাস্ক-গ্লাভস জনস্বাস্থ্যের জন্য মোটেও নিরাপদ নয়। কারণ করোনাভাইরাস অন্তত দুই-তিনদিন পর্যন্ত বাঁচতে পারে। করোনা-কালে ব্যবহৃত সুরক্ষাসামগ্রীর সঠিক ব্যবস্থাপনায় জোর না দিলে তা মাটি ও পানির সঙ্গে খাদ্যচক্রে প্রবেশ করতে পারে। সূত্রাপুর, ঢাকা থেকে
×