ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শাহরীন তাবাসসুম

সচেতনতার বিকল্প নেই

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ১৬ জুলাই ২০২০

সচেতনতার বিকল্প নেই

সরকারের ওপর দায়ভার চাপানোর সংস্কৃতি আমাদের সমাজে বহু পুরনো। জীবনটা যেমন নিজের, দায়ভারও নিজেদেরই। আপনার পরিবারের কাছে আপনি খুবই প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তাই তাদের কান্না দেখার আগেই সুরক্ষিত হোন। সরকারের ওপর দায় চাপিয়ে দিলেই চলবে না। সরকার আপনাকে সুরক্ষিত থাকার পথ বাতলে দিতে পারে, বাকি কাজ নিজেকেই করতে হবে। ইতোমধ্যে আমরা জেনে গেছি যে করোনার নির্দিষ্ট কোন লক্ষ্মণ নেই। তবে জ্বর, কাশি, গলাব্যথা, ঘ্রাণশক্তি হ্রাস ইত্যাদি খুবই সাধারণ এবং আক্রান্ত সকলের মধ্যেই দৃশ্যমান হয়েছে। করোনার প্রাক্কালে ধারণা করা হয়েছিল রোগটি শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে তুলনামূলক বেশি প্রভাব বিস্তার করবে, কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। কিন্তু বর্তমান দৃশ্যপট তার উল্টো। এই মারণরোগ শিশু থেকে শুরু করে কিশোর, তরুণ, বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষকেই আক্রান্ত করছে। তাই নিজের সুরক্ষার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। আপনি আক্রান্ত হওয়া মানে আপনার পরিবারের সদস্যদেরও ঝুঁকির মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়া। এই মহামারীকালে বিশেষ দরকার ছাড়া কারও ঘরের বাইরে বের হওয়া উচিত নয়। নিতান্তই কাজের উদ্দেশ্যে বা কোন প্রয়োজনে বের হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে এ ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায়। তাই এর ভয়াবহতা ডাক্তার, বিজ্ঞানী, গবেষকদের কেউই নিরূপণ করতে পারছেন না। সব সময় সঙ্গে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে। লিফট, সিঁড়ি, দরজার হাতলে যথাসম্ভব কম হাত দিতে হবে। চীনে লিফটের বোতাম চাপার জন্য টুথপিক ব্যবহার করা হচ্ছে এবং সেটি ডাস্টবিনে ফেলে যথাযথ উপায়ে নিয়ম মেনে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। যাতে করে একজনের ব্যবহৃত জিনিস অন্যজনকে স্পর্শ করতে না হয়। বাইরে থেকে ঘরে প্রবেশ করার পূর্বে বাইরের ব্যবহার্য সামগ্রী অবশ্যই জীবাণুনাশক দিয়ে স্প্রে করে দিতে হবে। বাইরের ব্যবহৃত জুতা নিয়ে ঘরে প্রবেশ করা যাবে না। সর্বোপরি নিজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নিয়মিত প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, স্নেহ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। পরিমিত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। অন্য দেশের সংরক্ষণ করা ফলের থেকে নিজের দেশের মৌসুমি ফল গ্রহণের দিকে আগ্রহ বাড়াতে হবে। আসুন পরিবারের কথা চিন্তা করে, নিজের কথা চিন্তা করে নিজের জীবন নিয়ে ভাবি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ মেনে চলি। নিজে সচেতন হয়ে অন্যকে সচেতন হতে সাহায্য করি। নিজে সচেতন থাকলেই বাঁচানো যাবে নিজের পরিবার এবং দেশকে। পরিশেষে বলা যায়, করোনাভাইরাস থেকে রক্ষায় সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। ময়মনসিংহ থেকে
×