ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাহেদকে ধরতে এত দেরি হলো কেন? : রিজভী

প্রকাশিত: ১৭:৪৫, ১৫ জুলাই ২০২০

সাহেদকে ধরতে এত দেরি হলো কেন? : রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নামে কোন অভিযোগ পেলে আইনশৃংখলা বাহিনী দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধরে ফেললেও রিজেন্ট হাসপাতালের কর্ণধার সাহেদকে ধরতে এত দেরি হলো কেন এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বুধবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে তিনি এই প্রশ্ন তুলেন। জাতীয়তাবাদী হোমিও চিকিৎসক এ্যাসোসিয়েশন এই মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করে। সাহেদ আওয়ামী লীগের লোক উল্লেখ করে রিজভী বলেন, তার মা মহিলা আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। সাহেদ নিজেও আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য। এ ছাড়া সাহেদ আওয়ামী লীগের পক্ষে টেকশো করতো। আওয়ামী লীগের লোকদের প্রশ্রয়ে এতো লুটপাট করে, বাটপারি করে, টাকা ইনকাম সাহেদ এখন হাওয়া ভবনের লোক হয়ে গেলো? নিজেদের দোষ চাপা দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগ নেতারা সাহেদকে এখন হাওয়া ভবনের লোক বলছে। রিজভী বলেন, যত বাটপার, যত ঠগ, যত ক্যাসিনো-দুর্নীতিবাজ সব আওয়ামী লীগের লোক। আর যখন এটা প্রচার-প্রকাশ হয়ে গেছে তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ওরা বিএনপি করতো, জামায়াত করতো। এসব বলে তারা জনমনে এখন বিভ্রান্তি তৈরী করছে। রিজভী বলেন, সাতক্ষীরা থেকে ভোরে রিজেন্ট হাসপাতালের কর্ণধার মো. সাহেদের গ্রেফতারের ঘটনা ‘কোমেডি’ না ‘ট্যাজেডি’ নাটক? আইনশৃংখলা বাহিনীকে উদ্দেশ করে তিনি বলে আপনারা ছাত্রদল নেতা আকরামকে খুজে পান, টিটো হায়দারকে খুজে পান, পিলকে খুজে পান অথচ এতদিন রিজেন্টের মালিক সাহেদকে খুঁজে পাননি। সাহেদ নাকি পালানোর সময় নৌকার মধ্যে সাতক্ষীরার কোনো অঞ্চল থেকে ধরা পড়েছে। আমরা তা জানি না। এটা মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা। আওয়ামী লীগ যে নাটক তৈরী করতে পারে সেটা আমরা জানি। রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ এখন আরেকটা নাটক করে শরিয়তপুরে বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী মিয়া নুরুউদ্দিন অপুকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। কেনো জানেন? তাকে টর্চার করে পুলিশের শেখানো বুলি তার মুখ দিয়ে বের করবে। রিজভী বলেন, জেকেজি, রিজেন্ট হাসপাতালের ভূয়া সনদ এবং এখানকার যে ঠকবাজী, বাটপারী সারা দেশ ও বিশ্বে উন্মোচিত হয়েছে। এখন এটাকে আড়াল করার জন্য আরেকটা নাটক তৈরি করবে নুরউদ্দিন অপুকে দিয়ে, তাকে দিয়ে টর্চার করে নানাভাবে তার মুখ দিয়ে বলানোর চেষ্টা করবে এগুলোর সঙ্গে আর কারো নাম দেয়া যায়। রিজভী বলেন, এই করোনা পরিস্থিতিতেও বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। অর্থাৎ এতোদিন অপুর ওপর অত্যাচার, তার ওপর আক্রমন করলো আওয়ামী লীগ, নির্বাচনের মুহুর্তে তাকে ঢাকাতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হলো। তার ওপর কত রিমান্ড গেছে। এই মুহুর্তে আবার অপুকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তাহলে নাটকটা এবার পরিস্কার বুঝতে পারছে সবাই। নাটকটাকে একেবারে ক্লাইমেক্সে নিয়ে যাওয়ার জন্যে এই ঘটনা করা হচ্ছে যে, বিএনপি নেতা অপুকে নতুন করে রিমান্ডে নিয়ে তার মুখ দিয়ে কিছু বলানোর জন্য। যাতে সাহেদ কান্ড, জেকেজি কান্ড এগুলো আড়াল হয়ে যায়। দেশের এই অবস্থা থেকে উত্তরণে জনগনকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান রিজভী। রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনগনকে অবিশ্বাস করে বলেই, জনগনকে অবজ্ঞা করে বলেই আওয়ামী লীগ সরকার রাতের অন্ধকারে নির্বাচন করে, তারা ভোটার ছাড়া নির্বাচন করে। কারণ, তারা জনগন যে একটা শক্তি সেটাকে পাত্তাই দেয় না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মো. সাহেদের একটি টকশোর প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, টকশো ভিডিওতে দেখলাম সে বলছে, সবাই এই সরকারকে চায়, বিরাট রাজনৈতিক বিশ্লেষক তিনি নির্বাচনের ব্যাখ্যা দিচ্ছেন কেনো আওয়ামী লীগ জিতবে। যেমন সাহেদ তেমনি তার সরকার, তেমনি তার কথাবার্তা। এসব লোক কি করে টকশোতে আমন্ত্রণ পান? আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অহিদুল ইসলাম চৌধুরী স্বপনের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহাসচিব শাহজালাল আহমেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি সামছুজ্জোহা আলম, সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগরের দক্ষিনের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, শ্যামপুর থানা মহিলা দলের সভানেত্রী নাসিমা তালুকদার প্রমুখ।
×