ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

হোম ভেন্যুতে তিন ম্যাচ নিয়ে তপুর ভাবনা

প্রকাশিত: ০০:১৯, ১৫ জুলাই ২০২০

হোম ভেন্যুতে তিন ম্যাচ নিয়ে তপুর ভাবনা

রুমেল খান ॥ বাংলাদেশ জাতীয় দলের এই ডিফেন্ডারকে অনেকেই ডাকেন ‘বাংলার রামোস’ বলে। আর বেশিরভাগ ফুটবলবোদ্ধাই তাকে বলেন, ‘জাতীয় দলের অন্যতম মূল ভরসা।’ ২০১৬-১৭ মৌসুমে সর্বোচ্চ ৫৮ লাখ টাকায় আবাহনী লিমিটেড থেকে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবে যোগ দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। রক্ষণভাগ থেকে আক্রমণে উঠে গোল করে বিভিন্ন সময়ে ক্লাব দলকে (মোহামেডান, শেখ জামাল, আবাহনী, সাইফ এবং বসুন্ধরা কিংস) এবং জাতীয় দলকে (২৪ ম্যাচে ৩ গোল) বুঝিয়েছেন তিনি আসলেই দলের জন্য অপরিহার্য খেলোয়াড়। ১৯৯৪ সালের ২০ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে জন্ম নেয়া ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী এই ফুটবলারের নাম তপু বর্মণ। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত এশিয়া অঞ্চলের ‘ই’ গ্রুপের বাকি চারটি দল ৫টি করে ম্যাচ খেললেও একমাত্র বাংলাদেশই খেলেছিল ৪টি করে ম্যাচ। তাই স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের বাকি আছে আরও সমসংখ্যক ম্যাচ। এই ম্যাচগুলোর তিনটিই লাল-সবুজবাহিনী নিজেদের মাঠে। আর এমনটা হওয়াতে নিজেদের মাঠে পয়েন্ট অর্জন করার বেশ ভাল সম্ভাবনা দেখছেন তপু বর্মণ। তপু তিনটি হোম ভেন্যুর প্রথমটি আগামী ৮ অক্টোবর। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। তাদের বিপক্ষে প্রথম মোকাবেলায় ০-১ গোলে পরাভূত হয়েছিল বাংলাদেশ (ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল নিরপেক্ষ ভেন্যুতে, তাজিকিস্তানের দুশানবেতে)। কিন্তু তপু মনে করেন দল হিসেবে আফগানিস্তানের চেয়ে অনেক ভাল বাংলাদেশ, ‘আমরা তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রশিক্ষণের বাইরে আছি। আশা করছি আগস্ট মাসে আমাদের ক্যাম্পটি শুরু হবে এবং আমরা তৈরি হবার জন্য যথেষ্ট সময় পাব। হোম ম্যাচ হওয়ার কারণে আমরা কিছু বাড়তি সুবিধা পাব। আফগানিস্তানের সঙ্গে আমরা ভাল খেলেও শেষ মুহূর্তে গিয়ে হেরে গিয়েছিলাম। কিন্তু দলগতভাবে তুলনা করতে হলে আমরাই বরং তাদের চেয়ে এগিয়ে থাকব। আমরা দেশের বাইরের ম্যাচগুলোতে ভাল খেলেছি তাই আমরা আশা করছি আমরা হোম ম্যাচেও ভাল করব। আমি একটি পজিটিভ ফলাফল আশা করছি।’ ঘরের মাঠে ভারতকে বাংলাদেশ মোকাবেলা করবে আগামী ১২ নবেম্বর। গত ১৫ অক্টোবর স্বাগতিক ভারতের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত খেলে জিততে জিততেও শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলে ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল বাংলাদেশ দলকে। এবার ভারতের বিপক্ষে ফিফটি-ফিফটি সম্ভাবনা দেখছেন তপু, ‘আমরা ভারতের মাটিতে ভারতের বিরুদ্ধে যেভাবে খেলেছি তাতে এটা আমাদের অনেক বড় ইতিবাচক একটা দিক। ওই ম্যাচে জয়ের খুব কাছাকাছি গিয়েও দুর্ভাগ্যবশত ড্র করেছিলাম। আমরা ওদের সম্পর্কে জানি, ওদের বিপক্ষে অনেকবারই খেলেছি। আমি তাদের সঙ্গে আমাদের কোন পার্থক্য খুঁজে পাইনি। আমাদের উভয়ই সমান অবস্থানে রয়েছি। এর পাশাপাশি এবার আমরা হোম ম্যাচের অতিরিক্ত সুবিধা পাব।’ গ্রুপে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ ওমানের বিরুদ্ধে, আগামী ১৭ নবেম্বর, এটাও হবে ঘরের মাঠে। গত বছরের ১৪ নবেম্বর ওমানের মাটিতে গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে খেলে ১-৪ গোলে হার মেনেছিলেন তপুরা। তবে এবার নিজেদের মাঠে মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিশালী এই ফুটবল দেশকে আটকে দিতে চান তপু, ‘নিজেদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে ঘরের মাঠে আমরা ওমানকে রুখে দেয়ার চেষ্টা করব। এই ম্যাচে ভাল ফল করার লক্ষ্য থাকবে আমাদের। যদিও আমরা জানি যে ওমান একটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। আমরা তাদের মাটিতে ১-৪ গোলে পরাজিত হয়েছিলাম। আমি মনে করি সেটিই ছিল বাছাইপর্বে আমাদের জন্য সবচেয়ে কঠিন ম্যাচ। আমরা আমাদের দেশের বাইরে খেলেছি আর এবার ওমান ওদের দেশের বাইরে খেলতে আসছে। ওমানের বিপক্ষে আমাদের দলের সবাই ভাল খেলার চেষ্টা করব। তাদের বিপক্ষে দলগতভাবে ভাল খেলতে পারলে আমরা পজিটিভ ফলাফল পাব। সর্বশেষে আমি আমাদের তিনটি হোম ম্যাচেই ভাল ফলাফলের ব্যাপারে আশাবাদী।’ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) আগামী আগস্টে জাতীয় দলের জন্য আবাসিক শিবির করবে। প্রাথমিকভাবে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ৪৪ খেলোয়াড় এবং কোচিংকর্মীদের ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যারা ১০ থেকে ১৫ দিনের জন্য পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবে এবং শিবিরটি শুরুর আগে সবাই কোভিড-১৯ টেস্ট করবে। এরপরে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ খেলোয়াড় চূড়ান্ত শিবিরের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত হবেন যা আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাঁচ দলের গ্রুপে (‘ই’) এখন কাতার আছে পাঁচ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে এবং বাংলাদেশ চার ম্যাচের এক পয়েন্ট তলানিতে অবস্থান করছে। অন্যদের মধ্যে ওমান ১২, আফগানিস্তান ৪ এবং ভারত ৩ পয়েন্ট অর্জন করেছে।
×