ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জামালপুরে বন্যায় প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি

প্রকাশিত: ২১:৫৬, ১৪ জুলাই ২০২০

জামালপুরে বন্যায় প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ জামালপুরে বন্যা পরিসিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ১১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার চারটি উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বন্যা দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসনের হিসেব মতে বন্যায় জেলার সাতটি উপজেলায় প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অপরদিকে যমুনা নদীর পানি দ্রুত বাড়তে থাকায় জেলার পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরাম, ঝিনাই ও দশানি নদীর পানি বাড়ছে। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এখনো বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার বিস্তীর্ণ নিচু এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, যমুনার পানি বিপদসীমার ১১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদী তীরের জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বন্যা দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় যমুনা নদীর পানি আর গ্রামের পর গ্রাম একাকার হয়ে গেছে। এই উপজেলাগুলোর গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এ ছাড়া জেলার মেলান্দহ, বকশীগঞ্জ ও জামালপুর সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ নিচু এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী ও চুকাইবাড়ি ইউনিয়ন সম্পূর্ণরূপে বন্যা কবলিত হয়েছে। এ দুটি ইউনিয়নের অন্ততপক্ষে ১০ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছে। বন্যার পানির প্রবল ¯্রােতে দেওয়ানগঞ্জ-তারাটিয়া-সানন্দবাড়ী পাকা রাস্তা ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে এই সড়কের ঝালরচর, গুলুর ঘাটসহ বেশ কয়েকটি স্থানে রাস্তার ওপর দিয়ে পানি বইছে। ফলে যেকোনো মুহূর্তে এই পাকা রাস্তায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া শঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয়রা। জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের কাবারিয়াবাড়ী বাজারের পেছনে যমুনাপাড়ের বেড়িবাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ওই বাজারে স্কুল-মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনাসহ অন্তত ৬০টি দোকান হুমকিতে রয়েছে। এ ছাড়া সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের ঝালুপাড়া থেকে চেচিয়াবাঁধা পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধটিতে বন্যার পানি আঘাত হানছে। ইতিমধ্যে এই বাঁধের বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি ছুঁই ছুঁই করছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জনকণ্ঠকে জানান, দ্বিতীয় দফা বন্যায় জেলার সাতটি উপজেলায় ১৫৯টি গ্রামের এক লাখ ৯৭ হাজার ৬৫৮ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। বন্যাদুর্গতদের সহায়তায় জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী ও নগদ অর্থ মজুদ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
×