ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশে ৬২ লাখ ধূমপায়ী কমাতে পারে ভেপিং

প্রকাশিত: ১৭:৪৯, ১৪ জুলাই ২০২০

বাংলাদেশে ৬২ লাখ ধূমপায়ী কমাতে পারে ভেপিং

অনলাইন রিপোর্টার ॥ সিগারেট ছাড়ার অন্যতম উপায় হিসেবে ই-সিগারেট বা ভেপিং জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকেরা ধূমপান ত্যাগের মাধ্যম হিসাবে ভেপিংয়ের পরামর্শ দিচ্ছেন। বাংলাদেশেও অনেকেই ধূমপান ছাড়ার জন্য এই উপায়কে বেছে নিচ্ছেন। ভেপিং করাকে উৎসাহিত করা হলে দেশে ৬২ লাখের বেশি ধূমপায়ী প্রচলিত সিগারেট ছেড়ে দিতে পারে বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংগঠনের গবেষণায়। ভোক্তাদের পছন্দ নিয়ে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া-ভিত্তিক সংগঠনের নাম কনজুমার চয়েস সেন্টার। তারা ৬১ দেশের ভেপিং ওপর একটি গবেষণা করেছে। সেখানকার বর্তমান নিয়মিত এবং অনিয়মিত ভেপিংয়ের হার পর্যালোচনা করে তারা আগামীতে তুলনামূলক নিরাপদ ভেপিংয়ের বাজার প্রসারিত হওয়া সম্পর্কে ধারণা পাওয়া চেষ্টা করেছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সংগঠনটি বলছে যুক্তরাজ্যের পদ্ধতি অনুসরণ করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ভেপিং করাকে উৎসাহিত করা হলে দেশে ২৫ শতাংশ ধূমপায়ী প্রচলিত সিগারেট ছেড়ে ভেপিংয়ে আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী, দেশে ধূমপায়ীর সংখ্যা ২ কোটি ৪৯ লাখ। ভেপিং করাকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে উৎসাহিত করা হলে এদের মধ্যে থেকে ৬২ লাখ ২৫ হাজার ধূমপায়ীকে সিগারেট থেকে সরিয়ে ভেপিং ব্যবহারে নিয়ে আসা সম্ভব। বাংলাদেশেও অনেকেই ধূমপান ছাড়ার জন্য এই উপায়কে বেছে নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন এনাম মেডিকেল কলেজের মেডিসিনের অধ্যাপক মিথুন আলমগীর। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ সিগারেটের তুলনায় ভেপিংয়ে ক্ষতির মাত্রা ৯৫ ভাগ কম। তাই তিনি সিগারেট ছাড়ার উপায় হিসেবে ভেপিং করার পরামর্শ দেন। গবেষণায় বলা হয়েছে, ভেপিংকে উৎসাহিত করা হলে ৬০টি দেশে ১৯ কোটি ৬০ লাখের বেশি ধূমপায়ী প্রচলিত সিগারেট ছেড়ে ভেপিংয়ে আগ্রহী হবে। এতে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নতি হবে। ওই গবেষণা অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ধূমপায়ীর সংখ্যা কমতে পারে চীনে। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার এই তালিকায় ৬১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। বাংলাদেশের আগে আছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে ৬৩ লাখ ৬২ হাজার লোক প্রচলিত ধূমপান ছেড়ে দিতে পারে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য হারে ধূমপান হ্রাস পেলে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতিতে ইতিবাচক প্রভাই পড়বে বলে মত এই খাত নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর। যুক্তরাজ্যের রয়্যাল কলেজ অব ফিজিশিয়ান এক নিবন্ধে বলেছে, ভেপিংয়ে নিকোটিন, প্রোপাইলিন গ্লাইকল অথবা ভেজিটেবল গ্লিসারিন এবং সুগন্ধী মিশ্রিত থাকে। কিন্তু প্রচলিত সিগারেটে রাসায়নিকের তুলনায় (যেমন টার এবং কার্বন মনোক্সাইড) নিকোটিন তুলনামূলক কম ক্ষতি করে। হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সাজ্জাদ খান মনে করেন ভেপিং হতে পারে ধূমপান থেকে সরে আসার অন্যতম কার্যকর উপায়। সরকারেরও এই বিষয়কে ইতিবাচকভাবেই নেওয়া উচিত। ধূমপানের ঝোঁক ছাড়াতে কার্যকরি উপায় হতে পারে ভেপিং। কারণ এটা শরীরের ক্ষতিকারক রাসায়নিকের চাহিদা ধীরে ধীরে কমিয়ে ফেলে।
×