ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

করোনায় এ পর্যন্ত সুস্থ ৯৩ হাজার ৬১৪, নতুন আক্রান্ত ২৬৬৬

প্রকাশিত: ২২:২৮, ১৩ জুলাই ২০২০

করোনায় এ পর্যন্ত সুস্থ ৯৩ হাজার ৬১৪, নতুন আক্রান্ত ২৬৬৬

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর চেয়ে দ্বিগুণ ৫৫৮০ করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৯৩ হাজার ৬১৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৪৭ জনের মৃত্যু এবং নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২৬৬৬জন। এ নিয়ে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৩৫২ এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৭৯৫ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৫৯টিসহ এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৯ লাখ ৪০ হাজার ৫২৪টি। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ১১ শতাংশ, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হারও বেড়ে ৪৯ শতাংশ থেকে ৫১ শতাংশে উঠেছে এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ। রবিবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৪৭ জনের মধ্যে ৩৬ পুরুষ এবং ১১ নারী। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীর মধ্যে পুরুষ এক হাজার ৮৬০ এবং নারী ৪৯২ জন। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৪৭ জনের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়- ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ২ জন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ জন, খুলনা বিভাগে ৬ জন, বরিশাল বিভাগে ২ জন, রংপুর বিভাগে ২ জন এবং সিলেট বিভাগে ৪ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৪৩ জন এবং বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ জন। অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৭৩৭ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৭ হাজার ৩১৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৯০৯ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ১৯ হাজার ১৮৬ জন। এখন পর্যন্ত মোট আইসোলেশন করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৫০৫ জনকে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন মিলে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ২ হাজার ৫৩১ জনকে। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৮৫৪ জনকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৯০০ জন। কোয়ারেন্টাইন থেকে এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৩ লাখ ৩০ হাজার ৭৭১ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৬৩ হাজার ৮৩ জন। ডাঃ নাসিমা সুলতানা আরও জানান, দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ছয় হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২। আর দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে। অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, লিঙ্গভেদে শনাক্তের হার পুরুষ ৭১ শতাংশ এবং নারী ২৯ শতাংশ। বয়স বিবেচনায় ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৭ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৭ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৭ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের ২৮ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ৭ শতাংশ এবং ১ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ৩ শতাংশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে। ঢাকা বিভাগেই মারা গেছেন ৫০ দশমিক ১১ শতাংশ। ঢাকা বিভাগের পরই বেশি মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিভাগে। এ বিভাগে মৃত্যুর হার ২৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ, রাজশাহীতে পাঁচ দশমিক শূন্য এক শতাংশ, খুলনায় চার দশমিক ৯২ শতাংশ, বরিশালে তিন দশমিক ছয় শূন্য শতাংশ, সিলেটে চার দশমিক ৩৫ শতাংশ, রংপুরে তিন দশমিক ১২ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে মারা গেছেন দুই দশমিক ৪২ শতাংশ। ডাঃ নাসিমা সুলতানা আরও জানান, সারাদেশে করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ১৪ হাজার ৯৪৫টি। তাতে রোগী ভর্তি আছে চার হাজার ৩৬১ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৫৮৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা ৩৯৪টি। তার মধ্যে রোগী ভর্তি আছে ২২৬টিতে এবং খালি আছে ১৬৮টি। অর্থাৎ সাধারণ ও আইসিইউ মিলে রয়েছে মোট ১৫ হাজার ৩৩৯ শয্যা। তার মধ্যে ভর্তি আছেন চার হাজার ৫৮৭ রোগী। আর শয্যা ফাঁকা আছে ১০ হাজার ৭৫২টি। সব হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে মোট ১০ হাজার ২৪০টি, হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা ৮০টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৫৫টি। তিনি আরও জানান, ঢাকা মহানগরীর করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ছয় হাজার ৩০৫টি। তাতে ভর্তি আছেন দুই হাজার ১৯৯ এবং শয্যা খালি আছে চার হাজার ১০৬টি। অন্যদিকে ঢাকা মহানগরীতে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ১৪২টি। তাতে ভর্তি আছেন ১০৮ জন এবং খালি আছে ৩৪টি। আর চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ৬৫৭টি। এই শয্যায় ভর্তি আছেন ৩১৩ জন এবং খালি আছে ৩৪৪টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯টি। তাতে ভর্তি আছেন ১৫ জন এবং খালি আছে ২৪টি।
×