নিজস্ব সংবাদদাতা, লক্ষ্মীপুর, ১১ জুলাই ॥ রায়পুরে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে ২০জন গুরুতর আহত হয়েছে। এতে আলতাফ মাস্টার গ্রুপের একটি প্রাইভেটকারও ভাংচুর করা হয়। শুক্রবার রাত ১১টার দিকে রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসেরহাট এলাকায় আওয়ামী লীগ দু’গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার, দলীয় কোন্দল ও পূর্ব শক্রতার জের দরে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং এ সংষর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়ে পান্নু মাঝি, সবুজ হাওলাদার, মাইনুদ্দিন, সোহাগ দেওয়ান, আব্দুল কাদের, রুহুল খলিফা, মুযাহিদ, জসিম, বাবু, সাহাবুদ্দিন, রাসেদ, ইমন, সিদ্দিক, জুলহাস, ইব্রাহিম, সোহেল ২০ নেতা-কর্মী রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে রায়পুর, সদর ও হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ি তিনটি থানার পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ যুগ্ম আহ্বায়ক রহুল আমিন খলিফা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন হাওলাদার প্রকাশ আলতাফ মাস্টারের ভাতিজাসহ তাদের অনুসারী মোঃ আওলাদ হোসেন ও রুহুল আমিন খলিফার ছেলে ও রাশেদ খলিফার গ্রুপের মধ্যে ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি পোস্ট- লেখালেখির মাধ্যমে হুমকি দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উপজেলা নির্বাচনের পর থেকে সাবেক চেয়ারম্যান আলতাফ মাস্টারকে কেন্দ্র করে উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দলীয় কর্মকা- চালাচ্ছিল। এতে কয়েকবার সংঘর্ষ, ভাংচুর, আহত ও পাল্টাপাল্টি একাধিক মামলা হয়েছে। মামলাগুলো বর্তমানে আদালতে চলমান। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ নেতা ওসমান খাঁ ও আলাউদ্দিন খাঁ আলতাফ মাস্টারের সঙ্গে এক পর্যায়ে মীমাংসা হয়ে যায় এবং মামলা তুলে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। এর মাঝে শুক্রবার সকালে ওসমান খাঁ গ্রুপের রুহুল আমিন খলিফার অনুসারী এক কর্মী ‘খাসেরহাট স্বাধীন হয়েছে ও প্রয়োজনে আবার স্বাধীন হবে’ এমন লেখাকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রুপের মধ্যে ফেসবুকে হুমকি-ধমকি শুরু হয়। পরে এ ঘটনার জের ধরে শুরক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রুহুল আমিন ও রাশেদ খলিফার নেতৃত্বে ৭/৮ কর্মী আলতাফ মাস্টারের কার্যালয়ের সামনে দেশীয় অস্র দিয়ে ৫ জনকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় বাধা দেয়ায় আরও ১৫ কর্মীকে পিটিয়ে আহত এবং স্থানীয় দলীয় কার্যালয়সহ আলতাফ মাস্টারের প্রাইভেটকারটি ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনায় রুহুল আমিন ও রাশেদ খলিফা জানান, শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে দলীয় সভা করছিলাম। এ সময় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলতাফ মাস্টারের ভাতিজা আলাউদ্দিন মিথ্যা অজুহাতে আমাদের ওপর হামলা চালায়। বর্তমানে আমাদের ৬ নেতা-কর্মী লক্ষ্মীপুর ও ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে এ ঘটনায় আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। এ বিষয়ে রায়পুর থানার ওসি আব্দুল জলিল বলেন, উভয় পক্ষের লোকদের শান্ত রাখতে রাত থেকেই ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনও কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি।
