ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মোঃ জাহিদ হাসান

কবে ফিরব চিরচেনা ক্যাম্পাসে?

প্রকাশিত: ০০:৩৮, ১২ জুলাই ২০২০

কবে ফিরব চিরচেনা ক্যাম্পাসে?

অনেকদিন পর দেখা। চায়ের দোকানে আড্ডা যেন শেষই হচ্ছে না। আড্ডা-গল্পে মুখরিত চারপাশ। সরল বন্ধুটিকে নিয়ে আবারও শুরু হয়েছে হাসি-টাট্টা। সবার সঙ্গেই চলছে কুশল-বিনিময়। ছোট-বড় সবাই যেন ভেদাভেদ ভুলে কাছে টানছে একে অপরকে। আবাসিক হলগুলোতে এক বন্ধু ছুটছে আরেক বন্ধুর কক্ষে। খোঁজখবর নিচ্ছে পরস্পরের। কেউ বা ছুটছে পিতৃতুল্য শিক্ষকদের কাছে। কেমন আছেন তারা, একটু খোঁজ নিতে। এমনই হবে হয়ত করোনা পরবর্তী ক্যাম্পাসের প্রথম দিন। করোনা মহামারীর এই দুর্যোগে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ। অনেকদিন যাওয়া হয় না প্রাণের ক্যাম্পাসে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেই তো আর আবেগ, ভালবাসাকে থামিয়ে রাখা যায় না। সুস্থ পৃথিবীতে আবারও চিরচেনা সেই ক্যাম্পাসে ফেরার প্রহর গুনছে সবাই। কবে ফিরে পাব চিরচেনা সেই বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ও (বাকৃবি) ক্যাম্পাস। কবে প্রাণ ফিরে পাবে জব্বারের মোড়, কেয়ার মার্কেট। সরগরম হয়ে উঠবে টিএসসি, কর্মমুখর হয়ে উঠবে প্রশাসনিক ভবন। ক্লাসের ব্যস্ততা শুরু হয়ে যাবে আবার। এক ডিপার্টমেন্ট থেকে আরেক ডিপার্টমেন্টে শুরু হবে শিক্ষার্থীদের ব্যস্ত পদচারণা। দেরি করে ক্লাসে আসলে আবারও চলবে স্যারদের চিরচেনা বকাবকি। ব্যাকবেঞ্চারদের হয়ত আবারও ধমক দিয়ে সামনের সারিতে এনে বসাবেন স্যারেরা। এগ্রোনমি ফিল্ডে শুরু হবে শিক্ষার্থীদের ধান লাগানোÑ ধান কাটার প্রাকটিক্যাল ওয়ার্ক। লাইব্রেরিটা আবারও খুলে দেয়া হবে। আসনগুলো খুঁজে পাবে তার পরিচিত মানুষদের। বঙ্গবন্ধু চত্বরে আবারও বন্ধুদের জন্মদিন পালনের উৎসব শুরু হবে। বিশ্বকাপ ক্রিকেট কিংবা ফুটবল খেলা দেখতে মেতে উঠবে আবাসিক হলের টিভি রুমগুলো। ছুটির দিনগুলোতে বোটনিক্যাল গার্ডেন, আম বাগান মুখরিত হবে দর্শনার্থীদের আনাগোনায়। নদীর পাড়ে আবারও ফুচকার দোকান বসবে। পালতোলা নৌকা ভেসে বেড়াবে ব্রহ্মপুত্রের বুকে। জমে উঠবে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা। ফটোকপির দোকানগুলোতে শুরু হবে সকাল- সন্ধ্যা ব্যস্ততা। খাবারের হোটেলগুলো হয়ে উঠবে জমজমাট। খেলার মাঠগুলো ফিরে পাবে তার চিরচেনা সদস্যদের। জিমনেশিয়াম থেকে প্ল্যাটফর্ম, কোলাহলে মুখরিত থাকবে সব সময়। বৈশাখি চত্বরে আবারও বৈশাখি মেলা বসবে। কৃষিবিদ দিবসে ক্যাম্পাস সাজবে বর্ণিল আলোকসজ্জায়। অডিটোরিয়ামের আসনগুলো আবারও দর্শকে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে। এভাবেই পুরনো দিনগুলো খুঁজে পেতে প্রহর গুনছে সবাই। কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী দেওয়ান তালুকদার বলেন, বাড়িতে বসে একাডেমিক ও চাকরির পড়াগুলো এগিয়ে রাখতে পারছি ঠিকই, কিন্তু ক্যাম্পাসটাকে ভীষণভাবে মিস করছি। সব সময় ক্যাম্পাসের জন্য খারাপ লাগা কাজ করে। আবার কবে পৃথিবীটা সুস্থ হবে, কবে আবার প্রাণের ক্যাম্পাসে ফিরতে পারব, সেই প্রতীক্ষায় আছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ প্রজনন ও কৌশলতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. রাসেল বলেন, শিক্ষার্থীরাই তো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। করোনার এই দুর্যোগে শিক্ষার্থী শূন্য ক্যাম্পাসটাও যেন আজ নিষ্প্রাণ। পৃথিবীর নানা প্রান্তে বিজ্ঞানীরা দিনরাত চেষ্টা করে যাচ্ছেন এই রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য। খুব শীঘ্রই কঠিন সময় পার হয়ে যাবে। আজ হোক অথবা কাল, সুদিন ফিরে আসবেই।
×