ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গরু-মহিষের মাংস আমদানি নিষিদ্ধের দাবি

প্রকাশিত: ২৩:৫৩, ১২ জুলাই ২০২০

গরু-মহিষের মাংস আমদানি নিষিদ্ধের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভারত ও মিয়ানমার থেকে গরু ও মহিষের মাংস আমদানি নিষিদ্ধ, কোরবানির কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণসহ সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন মাংস ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশে গরু পাচার করে বছরে ৬০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে ভারত ও মিয়ানমার। এই গরু পাচার বন্ধ হলেই দেশের কৃষকরা পশু উৎপাদনে আরও আগ্রহী হবেন বলেও জানানো হয়। শনিবার সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাজানানো হয়। বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির যৌথ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন কহয়। মাংস ব্যবসায়ীদের দাগুলো হলো- ভারত ও মিয়ানমারের গরু, মহিষ, মাংস আমদানি নিষিদ্ধ করা। চামড়া শিল্পের সিইটিপি, রফতাজন্য ছাড়পত্র দেয়া। গাবতলী গরুর হাটের অতিরিক্ত খাজনা আদায় বন্ধ করা। মাংস শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ এবং কোরবানির কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা। বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম লিখিত বক্তব্যে বলেন, দেশীয় পশু পালনের উন্নয়নের স্বার্থে ভারত ও মিয়ানমার থেকে গরু, মহিষ ও মাংস আমদানি বন্ধ করতে হবে। ভারত ও মিয়ানমার গরু পাচার করে প্রতি বছর ৬০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে। ১০ ও ২০ হাজার কোটি টাকা কৃষিঋণ দিলে দেশের কৃষকরাই চরাঞ্চলে পশু পালন করে আমাদের চাহিদা পূরণ করেও বিদেশে মাংস, হাড়, শিং, নাড়ি-ভুঁড়ি, চামড়া রফতাকরে ৬০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। তিনি বলেন, ভারত ও মিয়ানমারের পশু পাচার বন্ধ না হলে দেশীয় পশু পালন উন্নয়ন ও সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা যাবে না। সরকার, শিল্পপতি ব্যবসায়ী, সমাজের প্রতিষ্ঠিতরা জাকাতের অর্থ থেকে গরিব, কৃষক, বিধবা, বেকার যুব সমাজের মাঝে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়ার বাচ্চা বিতরণ, পশু পালনে উৎসাহিত করতে পারেন। তাহলে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে আমরা ৩০০ টাকা কেজিতে মাংস খাব। ইতোমধ্যে আমাদের সেনাবাহিনী স্বর্ণচরে পশু পালন প্রকল্প শুরু করেছে। রবিউল ইসলাম বলেন, চামড়া শিল্প উন্নয়ন ও রফতানির প্রধান প্রতিবন্ধকতা বর্জ্য ও পানি শোধনাগার সিইটিপি পরিপূর্ণ করতে হবে। রফতানি সচল না হলে সরকারের শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে চামড়া শিল্পনগরী উন্নয়নের সফলতা আমরা ভোগ করতে পারব না। কোরবানির কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, মাংস কাটা ও চামড়া সংগ্রহ বিষয়ে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। পশুর হাটে সরকার নির্ধারিত খাজনার চেয়ে বেশি খাজনা নেয়া হয় জানিয়ে বলেন, একটি গরু সীমান্ত থেকে ঢাকা পর্যন্ত নিয়ে আসতে তিনবার হাটে বিক্রি হয়। তিনবারই খাজনা দিতে হয়। এতে গরুর দাম বেড়ে যায়। এছাড়া নির্ধারিত খাজনার বেশি টাকা নেয় ইজারাদার। আছে পথের মাস্তানেরা। এটা বন্ধ করতে হবে। ইজারাদারদের অসাধু কাযক্রম বন্ধ করে সিটি কর্পোরেশন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও স্থানীয় সরকার হাটে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারে। গরুর হাট ইজারাদারদের নিজস্ব আইনে চলছে। মাথায় বাড়ি দিয়ে টাকা আদায় করে। এই বিষয়ে গরু ব্যবসায়ীদের শত শত অভিযোগ রয়েছে সিটি কর্পোরেশন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে। তবে কোন কাজ হয়নি। একটা অভিযোগেরও সমাধান হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মাধ্যমে মাংস শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ হাতেকলমে দিতে পারলে রফতানিযোগ্য শত শত কোটি টাকার পশুর বর্জ্য রক্ষা করা যাবে। জবাইখানাভিত্তিক দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণশালা গঠন করতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কোরবানির কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফরিদ আহম্মেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক শামিম আহম্মেদ কোরেশী, বাংলাদেশ পশুর বর্জ্য সংগ্রহকারী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহম্মেদ, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ ইমরান।
×