ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

করোনায় অনলাইনে জমজমাট কোরবানির পশুর হাট

প্রকাশিত: ২২:৪৮, ১২ জুলাই ২০২০

করোনায় অনলাইনে জমজমাট কোরবানির পশুর হাট

ওয়াজেদ হীরা ॥ কোরবানির ঈদের অন্যতম উপলক্ষ্য পশু কোরবানি। এবার করোনার কারণে পশুর হাটে যেতে অনেকের অনীহা রয়েছে আর আগ্রহ বেড়েছে অনলাইন হাটগুলোতে পশু কেনাকাটায়। করোনা পরিস্থিতিতে ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে ঘরে আনছেন কোরবানির পশু। করোনাকালে অনলাইনে মানুষের আগ্রহ বাড়বে ধারণা করে জমজমাট আয়োজনের পসরা সাজিয়েছে বিভিন্ন নামের অনলাইন পশুর হাট। বিভিন্ন রঙ আর সাইজের পশুতে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন ওয়েবসাইট। ক্রেতারা পছন্দমতো দেখছেন আর ঘরে বসেই অর্ডার দিয়ে কিনতে পারছেন। সরকারীভাবে চালু হয়েছে অনলাইন পশুর হাট। জাতীয় পর্যায় এমনকি জেলা উপজেলা পর্যায়েও চালু হচ্ছে অনলাইন পশুর হাট। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১ আগস্ট মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আযহা উদযাপিত হতে পারে দেশে। কয়েক মাস ধরে চলা করোনাভাইরাসের প্রভাব যে এবারের কোরবানির ঈদেও কমবে না সে ধারণা সামনে রেখেই প্রায় একমাস ধরে নানা প্রস্তুতি নিয়ে সামনে আসে বিভিন্ন অনলাইন মার্কেট প্লেসগুলো। ইতোমধ্যেই কোন সাইটে কেনাকাটা জমজমাট, কোনটিতে শুরু হয়েছে মাত্র আবার কোন সাইটে এখনও শুরু হয়নি। অনলাইন মার্কেট সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছোঁয়াচে এই ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে অনলাইনে পশু বিক্রিতেও এবার বাড়তি সতর্কতা নিয়েই কাজ করছেন। মানুষের অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি আগ্রহ আছে। অনলাইনে কোরবানির পশু বেচাকেনা অনেক আগে থেকেই শুরু হলেও এবার অনলাইনে বেচাকেনা জমবে ভাল। কারণ করোনাভাইরাস বদলে দিয়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সচেতন মানুষ এখন ভিড় এড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই দৈনন্দিন কাজকর্ম করছেন। ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে মানুষ এখন অফিস, ব্যবসা-বাণিজ্য, নিত্যপণ্য কেনাকাটা, শিক্ষা-স্বাস্থ্য সবকিছুতেই ব্যবহার করছেন অনলাইন প্লাটফর্ম। রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষীরা যখন তাদের উৎপাদিত আমের বিক্রি নিয়ে হতাশ ছিলেন এই অনলাইন মার্কেটিং তাদের সে হতাশা দূর করেছে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডাঃ আবদুল জব্বার শিকদার বলেন, যেহেতু এবার দেশের পরিস্থিতিটা অস্বাভাবিক, সে কারণে অনলাইনে বিক্রির পরিমাণটা অন্য বছরগুলোর তুলনায় বাড়বে। ই-কমার্স উদ্যোক্তারা বলছেন, দেশে অনলাইনে পশুর হাটের যাত্রা শুরু প্রায় এক দশক হলেও গত কয়েক বছরে অনলাইনে পশুর হাটের জনপ্রিয়তার সোজা উর্ধমুখী। করোনা পরিস্থিতির কারণেই এ বছর পশুর এই ভার্চুয়াল হাট নিয়ে এ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী থেকে শুরু করে প্রান্তিক খামারিদেরও। ঈদ-উল-আযহা সামনে রেখে এরইমধ্যে অনলাইনে গরুর বুকিং দিয়েছেন সজিব আল আমিন। পেশায় ব্যবসায়ী তিনি বলেন, প্রতিদিনই বিভিন্ন সাইটে দেখে আগেভাগেই অর্ডার দিয়ে দিয়েছি। গতবার থেকে অনলাইনে কেনার অভ্যাস হয়েছে। এবার তো আরও হাটে যাব না বলে সিদ্ধান্ত ছিল তাই আগেই অর্ডার করেছি। সারাবছর দেশে যে সংখ্যক পশু জবাই হয়, তার বড় অংশ এই কোরবানির ঈদের সময় হয়। ইতোমধ্যে রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনে ২৪টি কোরবানির পশুর হাট বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারাদেশে পশুর হাট বসানোর কথা বলেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রীও। এরপরও অনলাইনে এ বছর বেশি আগ্রহের জায়গায় তৈরি করেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। করোনাভাইরাস পশুর হাটে ব্যাপক সমাগমের মাধ্যমে আরও বেশি ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে বলে সচেতন ব্যক্তিরা অনলাইন প্লাটফর্ম বেছে নিচ্ছেন। দেশের খামারি ও ক্রেতাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য ডিজিটাল হাটের ব্যবস্থা করেছে। এটিই হচ্ছে সরকারী উদ্যোগে দেশের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল পশু কোরবানির হাট। এ হাটে ক্রেতারা ঘরে বসেই গরুর ছবি ও ভিডিও দেখার এবং লাইভ ওজন জানার সুযোগ পাবেন। একইসঙ্গে তিনি গরুর মালিক, খামারি বা ব্যাপারীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার সুযোগ পাবেন। এই ডিজিটাল হাটের জন্য সারাদেশ থেকে গরু-ছাগলের চাষী, খামারের মালিক ও সাধারণ পশু ব্যবসায়ীদের নিবন্ধন কার্যক্রমসহ অন্যান্য কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সব ধরনের মানুষ যঃঃঢ়ং:// ভড়ড়ফভড়ৎহধঃরড়হ.মড়া.নফ/য়ঁৎনধহর২০২০/ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে বিনামূল্যে নিবন্ধন করার সুযোগ পাবেন। নিবন্ধনের পর নিজস্ব প্যানেল থেকে পশুর ছবি, ভিডিও ও অন্যান্য তথ্য আপলোড করতে হবে। এসব ছবি ও তথ্য ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকার তার নিজ খরচে প্রচার করবে। ফলে ক্রেতারা সহজেই তাদের কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় পশু পছন্দের সুযোগ পাবেন এবং বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে ডেলিভারি নিতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ফুড ফর নেশন প্লাটফর্মটি কোরবানির পশুর জন্য দেশের সবচেয়ে বড় ম্যাচ মেকিং ডিজিটাল হাট হতে যাচ্ছে। খামারি ও চাষীদের অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং তাদের ও ক্রেতাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আমরা এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমরা দেশের সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষা অটুট রেখেই আমাদের অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় কর্মকা-গুলো চালু রাখতে চাই। জুনাইদ আহমেদ পলক আরও বলেছেন, তিনটি পর্যায়ে ডিজিটাল পশুর হাট তৈরি করছি। একটি জাতীয় পর্যায়ে যেখানে সবগুলো বেসরকারী উদ্যোক্তা, স্থানীয় উদ্যোক্তারা সম্পৃক্ত হচ্ছেন। ঢাকা শহরের জন্য উত্তর সিটিতে ডিজিটাল হাট করব। তৃতীয় পর্যায় হলো স্থানীয় অর্থাৎ জেলা উপজেলা পর্যায়। স্থানীয় খামারি, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আছেন এবং ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তারা পশুর ছবি এ্যাপসে নিয়ে আসছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও সম্পৃক্ত হচ্ছেন। ভাল সারাও পাচ্ছি ইতোমধ্যেই ১৭০০ পশু জাতীয় প্লাটফর্মে এসেছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে শনিবার গবাদিপশু বিপণনের অনলাইন প্লাটফর্ম ‘ডিএনসিসি ডিজিটাল হাট’-এর উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মাস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ ইমরান বলেছেন, এ বছর বেশ কয়েকটি কোম্পানি প্রফেশনালি ভার্চুয়াল গরুর হাট নিয়ে আসবে। এছাড়া শহরে যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করে এমন খামারি বা এ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারীরা তো এরই মধ্যে ফেসবুক বা বিভিন্ন প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করেছেন। ইতোমধ্যেই বিক্রিও শুরু হয়েছে। বিক্রয় ডটকমে দুটি গরুর বিক্রয়ের জন্য ছবি পোস্ট করেছেন কুষ্টিয়ার আব্বাস আলী। দুটি গরুর মূল্য ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা লিখলেও আলোচনা সাপেক্ষে বিক্রি হবে বলেও লেখা রয়েছে। কথা বলে জানা গেল প্রতিদিনই অনেকেই ফোন করে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাচ্ছে কেউ দাম করছেন। অনেকেই নিজের খামারের নামে ফেসবুকে পেজ খুলে সেখানে পশুর ছবি, ভিডিও, বিবরণ, দামসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্যই তুলে ধরছেন। সঙ্গে থাকছে ফ্রি হোম ডেলিভারি। শুধু তাই নয়, কোন কোন খামারি ও অনলাইন প্লাটফর্ম পশু কোরবানি ও মাংস প্রক্রিয়াজাত করে ক্রেতার বাসায় পৌঁছে দেয়ারও অফার দিচ্ছেন। ‘বিক্রয় ডট কম’ গরু-ছাগলের অনলাইন হাট বসিয়েছে। এখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যেমন-ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, বগুড়া, কুমিল্লার খামারের গরু-ছাগলের ছবি, তার বিবরণ, মূল্য সবই তুলে দেয়া হয়েছে। ক্রেতারা চাইলে এসব পশুর মধ্য থেকে পছন্দ করে অর্ডার করলেই তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হবে সেই পশু। ঈদ উপলক্ষে অনলাইনে কোরবানির পশু কেনা যাবে অথবা ডটকমেও। ফেসবুকে পশু কেনাবেচার জন্য বেশকিছু গ্রুপ রয়েছে। সেখানে অনেক উদ্যোক্তারা এরইমধ্যে কোরবানির পশুর বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন। অনেক এ্যাগ্রো ফার্মও বিভিন্ন অনলাইনে প্লাটফর্মে তাদের গরুর বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করেছে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজের মাধ্যমে বুকিং নিচ্ছে। কয়েক বছর অনলাইনে কোরবানির পশু সরবরাহ আগে থেকেই করে আসছে বেঙ্গলমিট। গত বছর দেড় হাজারের বেশি কোরবানির পশু অনলাইনে বিক্রি করেছিল তারা। বেঙ্গলমিটের হেড অব রিটেইল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, এবার যেহেতু মাংস প্রক্রিয়াজাত করে সরবররাহ করা হবে, সেক্ষেত্রে আমরা ৭০০ এর বেশি অর্ডার নিতে পারব না। এবার কোভিড-১৯ মহামারী বিবেচনায় শুধু প্রসেসড মিট সরবরাহ করা হবে। সরাসরি কোরবানির পশু সরবরাহে সংক্রমণ শঙ্কা থেকে এ সিদ্ধান্ত বলেও জানান তিনি। কেনার প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, কোন ক্রেতা অনলাইনে গরু পছন্দ করার পর ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে মূল্যে পরিশোধ করে তা নিশ্চিত করতে পারবেন। এছাড়া ঢাকার ২৯টি আউটলেটেও এ মূল্যে পরিশোধ করা যাবে। ওয়েল এ্যান্ড সিড এবারই তারা প্রথম অনলাইনে গরু বিক্রি করছে। প্রতিষ্ঠানটির কুহেলী পারভীন জানিয়েছেন, আমরা কোরবানির গরুর জন্য বুকিং নিতে শুরু করেছি। বেশকিছু বুকিং পেয়েছিও। করোনার কারণেই সম্ভবত এবার রেসপন্স ভাল। সামনে আরও বাড়বে বলে আশা করছি। যারা বুকিং দিচ্ছেন, ঈদের দু’দিন আগে তাদের বাসায় গরু পৌঁছে দেয়া হবে। ই-কমার্স সাইট দারাজও অনলাইনে ক্রেতাদের দিচ্ছে পশু কেনার সুযোগ। দারাজ বাংলাদেশ তৃতীয়বারের মতো আয়োজন করেছে অনলাইন গরুর হাট। এই হাটের বিশেষত্ব হলো প্রতিটি গরু শতভাগ অর্গানিক এবং গরুগুলো লালন-পালন করেছেন শেরপুর, মুন্সীগঞ্জ, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের খামারি, উদ্যোক্তারা। ক্রেতারা খুব সহজেই কোরবানির পশুর সকল বিস্তারিত বিষয় জেনে ও ভিডিও দেখে দারাজ এ্যাপে কোরবানির গরু অর্ডার করতে পারবেন। ৩৫০টি গরুর সমারোহে সাজানো এই হাটে। গত ৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া দারাজ অনলাইন গরুর হাটে প্রি-পেমেন্টের মাধ্যমে অর্ডার নেয়া হবে ২৫ জুলাই পর্যন্ত। সেগুলো ক্রেতাদের বাড়িতে ডেলিভারি দেয়া শুরু হবে ২৭ জুলাই থেকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে (শুধু ঢাকা ও চট্টগ্রামবাসীদের জন্য প্রযোজ্য)। দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ মোস্তাহিদাল হক বলেছেন, বিগত সময়ের চেয়ে এই বছরের ঈদগুলো খুবই আলাদা। কোভিড-১৯ চলাকালীন আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি ক্রেতাদের সুরক্ষিত রেখে তাদের চাহিদা মেটাবার। আর এজন্যই অনলাইন গরুর হাটের আয়োজন। আশা করছি, সবাই নিরাপদে ঘরে বসে আমাদের অর্গানিক গরুর হাট থেকে কোরবানির পশু কিনে উপকৃত হবেন। অনলাইনে গরু বিক্রি এবারও করছেন ই-কমার্স সাইট বিক্রয় ডটকম। সাইটটির শুক্রবার পর্যন্ত গবাদি পশু ক্যাটাগরিতে ১২শ’র বেশি বিভিন্ন গবাদি পশুর পোস্ট রয়েছে। ৫০ হাজার থেকে কয়েক লাখ টাকার গরু রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কো-ম্যানেজিং ডিরেক্টর ঈশিতা শারমিনের মতে, আমরা গত ছয় বছর ধরে অনলাইনে গরুর হাট আয়োজন করে আসছি। এবারও অনলাইনে এটি থাকছে। আমরা আমাদের সদস্যদের কিছু ডিসকাউন্ট অফার দিয়ে থাকি, এবার এ্যাগ্রো ফার্মগুলোকে আমরা এবার আরও কম রেটে মেম্বারশিপ দিচ্ছি। আমাদের টিম ফার্মগুলো ভিজিট করার পরই কেবল কোন ফার্মকে হাটে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। ফলে মানের প্রশ্নে কোন আপোস নেই। গ্রামীণফেন্ডসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, কোরবানির পশু বাড়িতে পৌঁছে দেয়া এবং প্রক্রিয়াজাত করে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদেরও। আজকের ডিলের অপারেশন হেড রফিকুল ইসলাম বলেছেন, তারাও এ বিষয়ে কাজ করছেন। সব ধরনের নিরাপত্তা ও সতর্কতা নিয়েই ক্রেতাদের পশু সরবরাহ করা হবে। খামার ই অনলাইন, গরুর হাটসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছেন। ঢাকার অদূরে বসিলা গার্ডেন সিটির পাশে অবস্থিত বিশাল গরুর ফার্ম ‘মেঘডুবি এগ্রো-৪’। সারাদেশে তাদের ১৪টি শাখা রয়েছে। এই খামারে তিন হাজার গরু মোটাতাজাকরণ হচ্ছে। খামার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন কোরবানি নয় সারাবছরই এখান থেকে গরু বিক্রি হয়। ২০১৪ সালে এই খামার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে কখনও হাটে গরু বিক্রি করা হয়নি। অনলাইনে ছাড়াও অনেক ক্রেতা পরিবারের লোকজন নিয়ে গরু কিনতে আসে। ফার্মের গরু দেখার জন্য একটা গ্যালারি করা হয়েছে। গ্যালারিতে বসে ক্রেতারা সব গরুই দেখতে পারবেন। যে গরুটি পছন্দ হবে তা তাদের সামনে এনে দেখানো হবে। বাংলাদেশ ডেইরি ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও দেশের বৃহত্তম এগ্রো ফার্ম সাদিক এগ্রো লিমিটেডের মালিক ইমরান হোসেন বলেন, অনলাইন হাটকে আরও বেশি কীভাবে শক্তিশালী করা যায় সেটা নিয়ে ভাবা উচিত। এজন্য সরকার হেল্পলাইন দিয়ে সহযোগিতা করতে পারে। অর্থাৎ অনলাইন ব্যবসার নামে কেউ যেন কোন গরু ক্রেতার টাকা মেরে দিতে না পারে বা ঠকাতে না পারে সেটা দেখভাল করা। এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের একটা হটলাইন থাকতে পারে। এর মাধ্যমে তারাও তদারকি করতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের ফার্মের কোন গরু হাটে নেয়া হয় না। ইতোমধ্যে বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। ঈদের দু’একদিন আগে সব গ্রাহকের বাসায় পৌঁছে যাবে গরু। জেলায় জেলায় চালু হচ্ছে অনলাইন হাট ॥ রংপুর পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে অনলাইনে ৯টি পশুর হাট চালু করা হয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ‘পশুরহাট’ নামে একটি অনলাইন পেজ খুলে এই হাট চালু করেছে। রংপুরের ৮ উপজেলায় ৮টি এবং জেলায় একটি অনলাইন পশুর হাট করা হয়েছে। ‘পশুরহাট’ নামক এই অনলাইন পেজের মাধ্যমে ক্রেতারা সহজেই গবাদি প্রাণী কেনাবেচা করতে পারবেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসন অনলাইন গরুর হাট চালু করেছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ‘অনলাইন কোরবানি হাট’ নামে একটি মোবাইল এ্যাপের উদ্বোধন করা হয়েছে। দিনাজপুরের হিলিসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় কোরবানি পশু বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। অনলাইনে কোরবানির পশুর হাট চালু করেছে হাকিমপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন চালু করেছে অনলাইন ক্যাটল মার্কেট, কক্সবাজার নামে এক ডিজিটাল প্লাটফর্ম। এছাড়াও অন্যান্য জেলায় উপজেলায় দ্রুতই চালু হবে বলেও জানা গেছে।
×