ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৩০ জনের মৃত্যু শনাক্ত ২৬৮৬

প্রকাশিত: ২২:৪৫, ১২ জুলাই ২০২০

২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৩০ জনের মৃত্যু শনাক্ত ২৬৮৬

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৩০ জনের মৃত্যু এবং নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২৬৮৬ জন। এ নিয়ে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৩০৫ এবং মোট অক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৮১ হাজার ১২৯ জনে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ১৬২৮ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ৮৮ হাজার ৩৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ১৯৩টিসহ এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৯ লাখ ২৯ হাজার ৪৬৫টি। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৮ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৭ শতাংশ। শনিবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩০ জনের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ এবং ৫ জন নারী। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে পুরুষ এক হাজার ৮২৪ জন এবং নারী ৪৮১ জন। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩০ জনের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৮ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন, খুলনা বিভাগে ৩ জন এবং বরিশাল বিভাগে একজন রয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ১৮ জন, বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১১ জন এবং মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয় একজনকে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৮৫৩ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৭ হাজার ৪৯১ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৫৫৪ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ১৮ হাজার ২৭৭ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৭৬৮ জনকে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন মিলে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে ২ হাজার ১৪২ জনকে। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৯১ হাজার ৩২৩ জনকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ২২৭ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৩ লাখ ২৭ হাজার ৮৭১ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৬৩ হাজার ৪৫২ জন। ডাঃ নাসিমা সুলতানা আরও জানান, দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ছয় হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২। আর দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে। অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, লিঙ্গভেদে শনাক্তের হার পুরুষ ৭১ শতাংশ এবং নারী ২৯ শতাংশ। বয়স বিবেচনায় ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৭ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৭ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৭ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছরের ২৮ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ৭ শতাংশ এবং ১ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ৩ শতাংশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে। ঢাকা বিভাগেই মারা গেছেন ৫০ দশমকি ১১ শতাংশ। ঢাকা বিভাগের পরই বেশি মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিভাগ। এ বিভাগে মৃত্যুর হার ২৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ, রাজশাহীতে পাঁচ দশমিক শূন্য এক শতাংশ, খুলনায় চার দশমিক ৯২ শতাংশ, বরিশালে তিন দশমিক ছয় শূন্য শতাংশ, সিলেটে চার দশমিক ৩৫ শতাংশ, রংপুরে তিন দশমকি ১২ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে মারা গেছেন দুই দশমিক ৪২ শতাংশ। ডাঃ নাসিমা সুলতানা আরও জানান, সারাদেশে করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ১৪ হাজার ৯৪৫টি। তাতে রোগী ভর্তি আছে চার হাজার ৩৬১ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৫৮৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা ৩৯৪টি। তার মধ্যে রোগী ভর্তি আছে ২২৬টিতে এবং খালি আছে ১৬৮টি। অর্থাৎ সাধারণ ও আইসিইউ মিলে রয়েছে মোট ১৫ হাজার ৩৩৯ শয্যা। তার মধ্যে ভর্তি আছেন চার হাজার ৫৮৭ জন রোগী। আর শয্যা ফাঁকা আছে ১০ হাজার ৭৫২টি। সব হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে মোট ১০ হাজার ২৪০টি, হাইফ্লো নেজাল ক্যানেলা ৮০টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৫৫টি। তিনি আরও জানান, ঢাকা মহানগরীর করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ছয় হাজার ৩০৫টি। তাতে ভর্তি আছেন দুই হাজার ১৯৯ জন এবং শয্যা খালি আছে চার হাজার ১০৬টি। অন্যদিকে ঢাকা মহানগরীতে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ১৪২টি। তাতে ভর্তি আছেন ১০৮ জন এবং খালি আছে ৩৪টি। আর চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ৬৫৭টি। এই শয্যায় ভর্তি আছেন ৩১৩ জন এবং খালি আছে ৩৪৪টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯টি। তাতে ভর্তি আছেন ১৫ জন এবং খালি আছে ২৪টি। এদিকে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ওয়ার্ল্ডোমিটার’ এর পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, করোনা সক্রিয় আছে এমন রোগীর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। প্রথম অবস্থানে আছে ভারত, আর তৃতীয় অবস্থানে পাকিস্তান। ১১ জুলাই ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য বলছে, করোনায় মোট সুস্থ এবং মৃত্যুর সংখ্যা যোগ করে তা মোট শনাক্ত থেকে বাদ দিলে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা পাওয়া যায়। সেই হিসাবে ভারত প্রথম অবস্থানে আছে। সেখানে এখন পর্যন্ত করোনা সক্রিয় রোগী ২ লাখ ৮৪ হাজার ২১৪ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। এখানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৯০ হাজার ৭৯০ জন। আর পাকিস্তানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৮৮ হাজার ৯৪ জন। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এক লাখ ৮১ হাজার ১২৯ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ২ হাজার ৩০৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন এবং সুস্থ হয়েছেন ৮৮ হাজার ৩৪ জন। এই হিসাবে আমাদের দেশে করোনা সক্রিয় রোগী ৯০ হাজার ৭৯০ জন। বিশ্বে করোনা সক্রিয় রোগীর সংখ্যায় প্রথম অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র, দ্বিতীয় ব্রাজিল, তৃতীয় ভারত, চতুর্থ রাশিয়া, পঞ্চম দক্ষিণ আফ্রিকা, ষষ্ঠ পেরু, সপ্তম বাংলাদেশ, অষ্টম পাকিস্তান, নবম মেক্সিকো এবং দশম কলম্বিয়া।
×